মেসি–রোনালদোকে পেছনে ফেলেও ক্ষতিগ্রস্ত লেভাই

নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত ভাবতেই পারেন রবার্ট লেভানডফস্কিছবি: রয়টার্স


করোনাভাইরানের কারণে এ বছর বাতিল হয়ে গেছে ব্যালন ডি’অর। বর্ষসেরা মুকুট মাথায় উঠছে না কোনো তারকার মাথাতেই। তবে করোনা বাগড়া না দিলে এ মৌসুমে ব্যালন ডি’অর হয়তো চমক দিতে পারত ফুটবলপ্রেমীদের।

পারফরম্যান্সের দিকে তাকালে এবার ব্যালন ডি অর পাওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে থাকতেন পোল্যান্ডের স্ট্রাইকার লেভানডফস্কি। পোলিশ এই স্ট্রাইকারের বাক্সেই যে বেশি ভোট পড়ত, তা মনে করেন অনেক তারকা ফুটবলার থেকে শুরু করে কোচরাও। জার্মানির ক্লাব হার্থা বার্লিনের সাবেক কোচ ফ্রাইডহেম ফাঙ্কেল মনে করেন ব্যালন ডি’অর বাতিল হওযায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন লেভানডফস্কি।

বায়ার্নের জার্সিতে এবার কী না করেছেন লেভানডফস্কি! এখন পর্যন্ত ৪৬ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৫৫টি। বুন্দেসলিগায় দলকে চ্যাম্পিয়ন করার পেছনে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এ ছাড়া দলকে নিয়ে এসেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে। তাঁর গোলের নিশানায় পুড়েছে প্রতিপক্ষ সব ক্লাবই। সব মিলিয়ে ব্যালন ডি’অর জেতার দৌড়ে এগিয়ে থাকতেন ৩২ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকারই। তাঁর দাপটের ধারে কাছে এবার মেসি-রোনালদো নেই বলে মনে করেন ফ্রাঙ্কেল।

৩৫ গোল করে বুন্দেসলিগায় সেরা গোলদাতা হয়েছেন। ডিএফবি পোকাল টুর্নামেন্টের শিরোপাও গেছে লেভানডফস্কির ক্লাবে। চ্যাম্পিয়ন লিগ জয় থেকে এক পা দূরে দাঁড়িয়ে লেভানডফস্কি। সেই কথায় স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ফ্রাঙ্কেল, ‘এই ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই যে বুন্দেস লিগা, ডিএফবি পোকাল ও চ্যাম্পিয়নস লিগে লেভানডফস্কির পারফরম্যান্স ছিল চমকজাগানিয়া।’

এই মৌসুমে লেভানডফস্কির পারফরম্যান্সের ধারে কাছেও কেউ ছিল না মনে করেন ৬৬ বছর বয়সী এই কোচ, ‘এই বছর এমন কেউ নেই যে লেভানডফস্কির কাছাকাছি পারফরম করেছেন। সে অনেক অনেক গোল করার সঙ্গে অনেক গোল করিয়েছেনও। দলীয় সংহতিতে অবদান ব্যক্তিগতভাবে গোলের সংখ্যা বাড়িয়েছেন। পূর্বাভাস অনুযায়ী লেভানডফস্কি বছরের সেরা খেলোয়াড় হতে পারত।’

লেভাকে বর্ষ সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব দিয়েই থামেননি, মেসি-রোনালদোর সঙ্গে পার্থক্যের তুলনাও টেনেছেন, ‘রোনালদো (চ্যাম্পিয়নস লিগ) প্রথম দিকেই বাদ পড়েছে। মেসিও দ্রুত ছিটকে গিয়েছে। এছাড়া মেসি লিগ চ্যাম্পিয়নও হতে পারেনি। এ বছর কোনো ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ বা বিশ্বকাপ ছিল না। ফলে চ্যাম্পিয়নস লিগের দিকেই ফোকাস রাখতে হবে এবং লেভানডফস্কি ছিল অসাধারণ খেলোয়াড়, অসাধারণ খেলোয়াড়।’

মেসি ও রোনালদোকে বাদ দিলে সেরা খেলোয়াড়ের দৌড়ে বাকি ছিলেন আরেকজন— নেইমার। ব্রাজিলিয়ান এই তারকার সঙ্গে তো আজ রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে দেখা হয়েই যাচ্ছে লেভানডফস্কি। আজ রাতে কে হাসবেন শেষ হাসি, তা আপাতত রাতের জন্যই তোলা থাক। তবে ফ্রাঙ্কেলের চোখে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে এগিয়ে লেভানডফস্কি, ‘নেইমারও বিশ্বমানের খেলোয়াড়। তবে লেভানডফস্কির সারা বছর যে ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে, তা নেইমার পারেনি। আমি বলব সে একজন অসাধারণ শিল্পীও।’ পিএসজির ফরোয়ার্ড নেইমার মাঠে অভিনয় করে বলেও খোঁচা দিয়েছেন ফ্রাঙ্কেল।