মোহামেডানের টানা দুই জয়

মোহামেডানের জয়সূচক গোলটি করে সতীর্থদের সঙ্গে দিয়াবাতের উদ্‌যাপন।ছবি: প্রথম আলো

সাইফ স্পোর্টিংয়ের রক্ষণভাগে জাতীয় দলের তিন খেলোয়াড় রিয়াদুল হাসান, রহমত মিয়া ও ইয়াছিন আরাফাত। চারজন নিয়ে গড়া রক্ষণভাগের বাকি অন্যজন এমানুয়েল এরিয়াচুকুর নাইজেরিয়া জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। অথচ এমন রক্ষণভাগই আজ মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেডের ফরোয়ার্ডদের ঝাঁকুনিতে কাঁপতে থাকল।

প্রতিপক্ষ দলের রক্ষণভাগের শৃঙ্খলার অভাবটিও দারুণ কাজে লাগিয়েছে মোহামেডান। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচটি তারা জিতেছে ২–১ গোলে। সাদা–কালো জার্সিধারীদের গোল দুটি করেছেন ক্যামেরুনের ইয়াসান ওউয়াচিং ও মালির সুলেমান দিয়াবাতে। সাইফের ব্যবধান কমিয়েছেন মারাজ হোসেন।

সাইফের বিপক্ষে জয়সূচক গোলের পর মোহামেডান খেলোয়াড়দের উল্লাস।
ছবি: প্রথম আলো

প্রথমার্ধের ম্যাড়মেড়ে ফুটবলের পর দ্বিতীয়ার্ধটা হয়ে উঠল উপভোগ্য। তিনটি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। প্রথমার্ধে নোটবুকে তোলার মতো আক্রমণ ছিল শুধু একটি, মোহামেডানের। ভালো সুযোগটি নষ্ট করেছেন মিডফিল্ডার রাকিব খান ইভান। ২৫ মিনিটে জাফর ইকবালের ক্রস থেকে দূরের পোস্টে অরক্ষিত অবস্থায় হেড করার সুযোগ পেলেও বল পোস্টে রাখতে পারেননি রাকিব।

দ্বিতীয়ার্ধে মোহামেডানের শুরুটা ঝড়ের মতো। দুই বিদেশি ইয়াসান ও দিয়াবাতের ঝাঁকুনিতে নড়বড়ে হয়ে ওঠে সাইফের রক্ষণভাগ। ৫২ মিনিটে সে সুযোগেই মোহামেডানকে এগিয়ে নেন ইয়াসান। ডান প্রান্ত থেকে দিয়াবাতের ক্রসে রাকিব ফ্লিক করলে তা ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন। ফিরতি বলে টোকা দিয়ে গোল করেন পাহারাহীন ইয়াসান। তাঁকে বাধা দেওয়ার মতো কেউ ছিল না। লিগের দ্বিতীয় পর্বে নাম লিখিয়ে মোহামেডানের জার্সিতে এটি তাঁর প্রথম গোল।

মোহামেডানকে এগিয়ে দেওয়া গোল করে সতীর্থ জাফরকে নিয়ে ইয়াসানের (বাঁয়ে) উচ্ছ্বাস।
ছবি: প্রথম আলো

চার মিনিট পরে সাইফের রক্ষণভাগের ফাটলটা আবারও ধরা পড়ে। কিন্তু সে সুযোগ নিতে পারেননি আগের ম্যাচে আরামবাগের বিপক্ষে জোড়া গোল করে মোহামেডানকে জেতানো দিয়াবাতে। ম্যাচের সবচেয়ে সহজ গোলের সুযোগটি নষ্ট করেন মালির এই স্ট্রাইকার। অনেক সময় নিয়ে দেখেশুনে যে শট নেন দিয়াবাতে, তা কোনো পরীক্ষাই নিতে পারেনি সাইফ গোলরক্ষকের।

দিয়াবাতে সে শাপমোচন করেছেন ৮৩ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে। জাফরের রক্ষণচেরা থ্রু পাস বক্সের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চকিতে ঘুরেই দূরের পোস্টে প্লেসিং শটে জালে পাঠান বল। শটটি নেওয়ার সময় তেমন কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হলো না তাঁকে। লিগে মোহামেডান স্ট্রাইকারের এটি ১১তম গোল।

ম্যাচ শেষে সাইফের গোলকিপার ছোট ভাই পাপ্পু হোসেনকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন মোহামেডানের গোলকিপার বড় ভাই সুজন হোসেন।
ছবি: প্রথম আলো

এর আগে ৬৯ মিনিটে সমতায় ফিরে সাইফ। প্রতি–আক্রমণ থেকে জামালের থ্রু ধরে বক্সে ঢোকেন জন ওকোলি। সেখান থেকে পাস দিলে বক্সের বাইরে থেকে প্রথম স্পর্শেই জোরালো শটে গোলটি করেন বদলি হিসেবে খেলতে নামা মারাজ। এ ছাড়া মোহামেডান গোলরক্ষক সুজন হোসেনের তেমন কোনো পরীক্ষাই নিতে পারেননি সাইফের খেলোয়াড়েরা। আজ দুই দলের গোলরক্ষক ছিলেন আপন দুই ভাই সুজন হোসেন ও পাপ্পু হোসেন। শেষ হাসিটা বড় ভাই সুজনের।

প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় পর্বে মোহামেডানের এটি টানা দ্বিতীয় জয়। নিয়মিত কোচ শন লিন ছুটিতে থাকায় আজও ডাগআউটে দাঁড়িয়েছিলেন সহকারী কোচ আলফাজ আহমেদ। লিগের প্রথম পর্বে সাইফের কাছে সমান ব্যবধানে হেরেছিল মোহামেডান। এই জয়ে ১৪ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে মোহামেডান। সমান ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে সাইফ।