ম্যারাডোনাকে ‘হত্যা’র অভিযোগে চিকিৎসকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা

ডিয়েগো ম্যারাডোনা।ছবি : এএফপি

কোনো দুর্ঘটনা হলেও হয়তো মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু ডিয়েগো ম্যারাডোনার মতো কিংবদন্তির মৃত্যু এভাবে চিকিৎসকদের গাফিলতির কারণে হলো! আর্জেন্টিনা থেকে আসা সর্বশেষ খবরে তো তেমনই মনে হতে বাধ্য। ম্যারাডোনাকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যার’ অভিযোগে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক লিওপোলদো লুকসহ ৭ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

ছিয়াশি বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি গত বছরের ২৫ নভেম্বর অন্যলোকে চলে যান। সে সময় প্রতিবেদনে ৬০ বছর বয়সী ম্যারাডোনার মৃত্যুর কারণ হিসেবে দেখানো হয় ঘুমের মধ্যে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া। কিন্তু সেটি কী কারণে হয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর থেকেই চলছে।

চিকিৎসক লিওপোলদো লুকের সঙ্গে ম্যারাডোনা। যখন বেঁচে ছিলেন।
ছবি: টুইটার

তাঁর মেয়েরা প্রথমে ম্যারাডোনার মৃত্যুর নেপথ্যে চিকিৎসকদের গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। তারপর সে অভিযোগ আরও গুরুতর আকার ধারণ করে। তদন্ত হয় এ নিয়ে।

তদন্তে ম্যারাডোনার মৃত্যুর পেছনে চিকিৎসকদের গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছেন বলে এই মাসের শুরুর দিকেই জানিয়েছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। গাফিলতির শাস্তি এখন পেতে হচ্ছে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের। মৃত্যু নয়, ম্যারাডোনাকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা’র অভিযোগে মামলা হয়েছে ৭ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।

স্প্যানিশ দৈনিক মার্কা জানাচ্ছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই চিকিৎসকদের ৮ থেকে ২৫ বছরের জেল হতে পারে।

আগামী ৩১ মে থেকে ওই ৭ চিকিৎসকের শুনানি শুরু হবে, তাঁরা তখন নিজেদের যুক্তি উপস্থাপন করতে পারবেন।

এই মাসের শুরুর দিকে বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ড জানায়, ম্যারাডোনার সেবায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মকাণ্ড ছিল ‘অপর্যাপ্ত, অদক্ষ ও বেপরোয়া।’ এরপরই বোঝা যাচ্ছিল, ম্যারাডোনার মৃত্যুর আগে তাঁর চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকেরা ঝামেলায় পড়তে যাচ্ছেন।

এরপর আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির মৃত্যু নিয়ে তদন্তের নতুন পর্যায়ে আজ এসেছে নতুন মোড়।

নিওয়েলসে খেলেছেন মেসি–ম্যারাডোনা দুজনই। ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর এভাবেই নিওয়েলসের জার্সি পরে গ্রেটকে সম্মান জানিয়েছিলেন মেসি।
ছবি: টুইটার

যে সাতজনের বিরুদ্ধে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যার’ অভিযোগ আনা হয়েছে, তাঁরা সকলেই ম্যারাডোনার মৃত্যুর আগে বিভিন্ন পর্যায়ে তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন।

সেই সাতজনের একজন ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক লিওপোলদো লুক। এর বাইরে আছেন দুই নার্স রিকার্দো ওমার আলমিরন ও দাহিয়ানা জিসেলা মাদ্রিদ, নার্সিও কো-অর্ডিনেটর মারিয়ানো পেরোনি, স্বাস্থ্য বিষয়ক সেবার কো-অর্ডিনেটর ন্যান্সি ফোরলিনি, মানসিক স্বাস্থ্যবিদ কার্লোস আনহেল দিয়াস ও অগুস্তিনা কোসাচভ। এই মামলার বিচারক

অরলান্ডো দিয়াজকে অনুরোধ করা হয়েছে, তিনি যাতে এঁদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন, যাতে এই সাতজন পালিয়ে যেতে না পারে।