ম্যারাডোনার মৃতদেহের সঙ্গে ছবি তুলে ছাঁটাই কর্মী

ডিয়েগো ম্যারাডোনা।ছবি : রয়টার্স

বিশ্বজোড়া কত কোটি মানুষই তো চিনতেন ম্যারাডোনাকে। ফুটবলপ্রিয় মানুষের কাছে তিনি ছিলেন আপনজন। ছিলেন প্রিয়মুখ। প্রিয় এই মানুষটিকে প্রায় সবাই দূর থেকেই দেখে গেছে, ভালোবেসে গেছে। ম্যারাডোনার পায়ের জাদু আর খামখেয়ালিপনা দেখে কত মানুষেরই মনে হয়েছে, ‘ইশ্, লোকটার পাশে দাঁড়িয়ে যদি একটা ছবি তুলতে পারতাম!’

হয়তো দিয়েগো মোলিনাও ওসব মানুষের মধ্যে একজন। আজীবন ম্যারাডোনার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন, চেয়েছেন কিংবদন্তির সঙ্গে ছবি তুলে মনের মণিকোঠায় এক অমর স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকতে। কিংবা হয়তো এমনও হতে পারে, তিনি খেলাটেলা অতটা দেখেন না। কিন্তু ম্যারাডোনার মতো এত বড় একজন কিংবদন্তিকে হাতের নাগালে দেখে ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারেননি। তা যা-ই হোক, পেশাদারি বাধ্যবাধকতা বলেও তো একটা কথা আছে, তাই না? পাশে ম্যারাডোনা থাকুক আর যে–ই থাকুক, মোলিনার পেশাটাই এমন, ছবি তোলা যাবে না। অন্তত পেশাদারি দায়িত্ব পালন করার সময় তো অবশ্যই না।

আর্জেন্টিনার প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসে রাখা ম্যারাডোনার কফিন।
ছবি : রয়টার্স

কে এই দিয়েগো মোলিনা? তাঁর সঙ্গে ম্যারাডোনার সম্পর্কই–বা কী? মোলিনার কাজ মূলত মৃতদেহ সৎকারসংক্রান্ত। আর্জেন্টিনার প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস কাসা রোসাদায় সৎকারকর্মী হিসেবে কাজ করেন। ম্যারাডোনাকে বহনকারী কফিনটি সেখানে রাখা হয়েছিল। এত বড় এক তারকাকে হাতের নাগালে পেয়ে নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি মোলিনা। ভুলে গিয়েছিলেন পেশাদারি দায়দায়িত্ব। কফিন খুলে ম্যারাডোনার নিথর দেহের সঙ্গে ছবি তুলে পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ব্যস, ঝড় উঠে যায় আশপাশে। এমন নিন্দনীয় কাজ দেখে যারপরনাই খেপে গিয়েছেন ম্যারাডোনার আশপাশের মানুষ। ম্যারাডোনার আইনজীবী মাতিয়াস মোরলাই যেমন গোটা ব্যাপারকে ম্যারাডোনার প্রতি চূড়ান্ত অসম্মানের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মোরলা লিখেছেন, ‘আমার প্রিয় বন্ধুর ফেলে যাওয়া স্মৃতির জন্য হলেও আমি তখনই শান্ত হব, যখন এই ঘৃণ্য কাজটা যে করেছে, তাকে সমুচিত শাস্তি দেওয়া হয়।’

এর মধ্যেই মোলিনাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে তাঁকে।