ম্যারাডোনার মৃত্যুতে চিকিৎসকদের দায় খুঁজে পাওয়া গেছে

চিকিৎসক লিওপোলদো লুকের সঙ্গে ম্যারাডোনা। যখন বেঁচে ছিলেন।ছবি: টুইটার

ছয় মাস হয়ে গেল, ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যু এখনো আলোচনার জন্ম দিচ্ছে। ছিয়াশি বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির মৃত্যু নিয়ে সে সময়ই অনেক আলোচনা হয়েছিল। ম্যারাডোনার মেয়েরা তাঁর চিকিৎসার আয়োজন ঘিরে অবহেলার অভিযোগ তোলেন তাঁরই আইনজীবী মাতিয়াস মোরলার বিরুদ্ধে।

অভিযোগের তির ছুটেছে দেখভালের দায়িত্বে থাকা নার্সদের বিরুদ্ধেও। ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত ডাক্তার লিওপোলদো লুকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলা হয়েছিল। একজন আরেকজনের দিকে এমন সব অভিযোগ করছিলেন যে না চাইলেও ম্যারাডোনার মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হচ্ছিল।

এখন আর শুধু অভিযোগেই আটকে নেই, উপযুক্ত প্রমাণও মিলেছে অবহেলার। ম্যারাডোনার মৃত্যু নিয়ে তদন্ত করার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দিয়েছে সেই বোর্ড। প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হাতে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ম্যারাডোনার চিকিৎসক দলের আচরণ ‘অগ্রহণযোগ্য, বেপরোয়া এবং সেখানে অদক্ষতার ছাপ’ ছিল।

ব্যক্তিগত চিকিৎসক লিওপোলদো লুকুর সঙ্গে ডিয়েগো ম্যারাডোনা।
ফাইল ছবি: টুইটার

গত ২৫ নভেম্বর বুয়েনস এইরেসে ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হয় ম্যারাডোনার। ৬০ বছর বয়সী কিংবদন্তির মৃত্যুর সময়টায় একটি চিকিৎসক দল তাঁর দেখভালের দায়িত্বে ছিল। ওই সময় অবহেলার অভিযোগ ওঠায় ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত ডাক্তার লিওপোলদো লুকের বাড়িঘর ও ক্লিনিক তল্লাশি করেছিল পুলিশ। চিকিৎসক দলের অন্যদেরও পুলিশি জেরার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল।

ম্যারাডোনার চিকিৎসক দল অবহেলা করেছে—এমন অভিযোগের কোনো সত্যতা আছে কি না, সেটা খুঁজে দেখার জন্য গত মার্চে একটি মেডিকেল বোর্ডকে দায়িত্ব দেয় বিচার মন্ত্রণালয়। গত ৩০ এপ্রিল সেই বোর্ড তাদের প্রতিবেদন দিয়েছে। তদন্তের সঙ্গে জড়িত এক সূত্র রয়টার্সকে সে প্রতিবেদন দেখিয়েছে। তাতে লেখা, ‘ডিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক দলের কাজকর্ম ছিল অগ্রহণযোগ্য, বেপরোয়া এবং অদক্ষ।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃত্যুর ১২ ঘণ্টা আগেই নাকি ভয়ংকর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ম্যারাডোনা। কিন্তু তাঁর চিকিৎসক দল এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, ‘দীর্ঘ সময় ধরে ভয়ংকর যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাওয়ার স্পষ্ট নিদর্শন দেখিয়েছেন তিনি। তাই আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে ২৫ নভেম্বর সাড়ে ১২টা (২৪ তারিখ দিবাগত রাত) থেকে রোগীকে সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি।’ এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর রয়টার্সের পক্ষ থেকে মামলার সঙ্গে জড়িত কৌঁসুলি ও আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।