যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচল লিভারপুল

মানেদের কল্যাণে গোলখরা কাটিয়েছে লিভারপুলছবি: রয়টার্স

প্রথমার্ধের একদম শেষ দিকের খেলা চলছে তখন। রক্ষণভাগ থেকে বাঁ উইংয়ে থাকা সাদিও মানের কাছে নিখুঁত একটা লং পাস পাঠালেন লিভারপুলের অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসন। আশপাশে একটু তাকিয়ে নিয়ে মানেই আবার ডি-বক্সে স্ট্রাইকার রবার্তো ফিরমিনোর দিকে নিচু করে ক্রস বাড়ান। এই সময় ব্রাজিলীয় তারকাকে মার্ক করতে একটু গড়বড় হয়ে যায় গোলরক্ষক উগো লরিস আর সেন্টারব্যাক এরিক ডায়ারের। সেই ভুলের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করলেন ফিরমিনো। সুন্দর এক ট্যাপ ইনে লিভারপুলকে এগিয়ে দেন তিনি।

গোলের পর লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের উদ্‌যাপনটা হলো দেখার মতো। আকাশের দিকে তাকিয়ে দুই হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে নিজের বুকে আঘাত করলেন। সেটি তো হবেই, বড় এক চিন্তামুক্তি ঘটল যে তাঁর। লিভারপুলের গোলমেশিনগুলো যে অকার্যকর হয়ে পড়েছিল গত এক মাসে। লিগে গোলই পাচ্ছিল না তারা। এত দিনে পরম আকাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পেয়ে বুক থেকে ভারী এক পাথরই যে নেমে গেল তাঁর।

শুধু এই এক গোলই নয়, লিভারপুল গোল পেয়েছে আরও দুটি। সব মিলিয়ে জয় ৩–১ গোলে। টটেনহামের বিপক্ষে এই জয়ে একটা জিনিস পরিষ্কার, ফর্মে ফিরছেন লিভারপুল তারকারা।

ফিরমিনো ছাড়াও গোল পেয়েছেন সাদিও মানে ও ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আরনল্ড। তবে লিভারপুল যেভাবে খেলছিল, গোল আরও হতে পারত। মোহাম্মদ সালাহর একটা গোল বাতিল হয়েছে, বেশ কয়েকটা সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন মানে।

ওদিকে টটেনহামও ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল লিভারপুলের বুকে। গোল বাতিল হয়েছে তাদেরও। ম্যাচটা ছিল মূলত যথারীতি জোসে মরিনিওর ক্ষুরধার প্রতি–আক্রমণ বনাম ক্লপের প্রেসিংয়ের। সেখানে প্রথম দুই মিনিটেই মরিনিওর প্রতি–আক্রমণের জয় হয়ে যাচ্ছিল আরেকটু হলে। দুর্দান্ত এক প্রতি–আক্রমণেই গোল করেছিলেন টটেনহামকে দক্ষিণ কোরিয়ান ফরোয়ার্ড হিউং মিন সন। কিন্তু পরে অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় গোলটি। দ্বিতীয়ার্ধে ড্যানিশ মিডফিল্ডার পিয়েরে এমিল হইবিয়ার কল্যাণে টটেনহাম এক গোল শোধ করলেও ম্যাচ যতই গড়িয়েছে, লিভারপুলকে তত বেশি শক্তিশালী বলে মনে হয়েছে। ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আরনল্ড, রবার্তো ফিরমিনো ও থিয়াগো আলকানতারার মতো খেলোয়াড়েরা নিজেদের দায়িত্বটা ঠিকঠাক পালন করতে পারলে কী হয়, সেটি দেখা গেল এই ম্যাচে।

এই জয়ে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে লিভারপুল। শীর্ষে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট তাদের চেয়ে ৪ বেশি, কিন্তু সিটি খেলেছেও একটি ম্যাচ কম। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও লেস্টার সিটি।