যেমন হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের একাদশ

>বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের যৌথ বাছাইপর্বে ওমানের বিপক্ষে শেষ ভারত ম্যাচের একাদশই খেলাতে যাচ্ছেন জেমি ডে। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় সুলতান কাবুজ স্পোর্টস কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি।
বাংলাদেশ দলের একাদশ। ছবি: প্রথম আলো
বাংলাদেশ দলের একাদশ। ছবি: প্রথম আলো

ওমানের বিপক্ষে আজ কোন একাদশ?

সকাল থেকেই ফুটবলপ্রেমীদের মুখে মুখে ঘুরছে এ প্রশ্ন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে খেলানো একাদশই আজ মাঠে নামাতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের কোচ জেমি ডে। খেলার ছকও সেই একই—ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের ৪-১-৪-১ ফরমেশন।

ওমান আক্রমণ ঠেকাতে মাসকাটে ৪-১-৪-১ ফরমেশনের দিকে হাঁটতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে। রক্ষণভাগের গভীর থেকে ডিফেন্ডিংয়ের পথে না হেঁটে মাঝের করিডর বন্ধ করে প্রতিপক্ষকে মাঝমাঠে থামিয়ে দিতে চান জেমি। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার। প্রতিপক্ষের পা থেকে এই হোল্ডিং মিডফিল্ডারের বল কেড়ে নেওয়ার ওপরই নির্ভর করতে পারে ম্যাচের গতি। তাঁকে ছায়া দেওয়ার জন্য মাঝমাঠে থাকছেন সোহেল রানা ও বিপলু আহমেদ। রাইট উইঙ্গার সাদ উদ্দিন ও লেফট উইংয়ে ইব্রাহিমের ওপরেও থাকছে রক্ষণভাগকে সহায়তা করার চাপ।

বাংলাদেশের মূল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নেতৃত্বে যথারীতি দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ সেন্টারব্যাক ইয়াসিন খান। তাঁর সঙ্গে জুটি বাঁধবেন তরুণ রিয়াদুল হাসান। লেফট ব্যাকে রহমত মিয়া। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বিশ্বনাথ ঘোষ ফেরায় রাইট ব্যাক পজিশন নিয়ে কিছুটা দোলাচল ছিল। কিন্তু শেষ ম্যাচে খেলা রায়হান হাসানের ওপরেই আস্থা রাখতে যাচ্ছেন কোচ। গোলপোস্টের নিচে যথারীতি আশরাফুল রানা। আক্রমণভাগেও যথারীতি নাবীব নেওয়াজ জীবন।

জেমির বিপক্ষে ওমানের হয়ে দল সাজাচ্ছেন নেদারল্যান্ডসের কোচ এরউইন কোম্যান। খেলোয়াড়ি জীবনে মিডফিল্ডার হিসেবে খেলা এই তারকা আশির দশকে নেদারল্যান্ডসের জাতীয় দলে মার্কো ফন বাস্তেন, রুড খুলিত, ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডদের সতীর্থ ছিলেন। ওমান দলকে ডাচদের সেই বিখ্যাত ‘টোটাল ফুটবল’ এর মন্ত্রে দীক্ষিত করছেন এরউইন, বলাটা বাহুল্য হবে না বোধ হয়! মূলত ৪-২-৩-১ ছকেই ওমান দলকে খেলিয়ে থাকেন কোম্যান। তবে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৪-৪-২ ফরমেশন বেছে নেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে বাংলাদেশের বিপক্ষে আজ সে পথেই হাঁটছেন সাবেক এই ডাচ তারকা।

দলের মূল গোলরক্ষক এখন ফায়েজ আল রুশাইদি। ২০১০ সালে অভিষিক্ত এই গোলরক্ষক এখন খেলছেন ধোফার ক্লাবে। এ বছর ওমানের হয়ে প্রতিটি ম্যাচেই খেলেছেন। রাইটব্যাক হিসেবে ওমান দলে ডাক পেয়েছেন আবদুল আজিজ আল ঘিলানি। তিনিই দলের মূল রাইটব্যাক। লেফটব্যাকে কোচের মূল ভরসা আলী আল বুসাইদি। সেন্টারব্যাক হিসেবে দলে আছেন মোহাম্মদ আল মুসাল্লামি, মোহাম্মদ ফারাজ আল রাওয়াহি, ওমরান আল হাদি, ফাহমি দোরবিন ও আবদুল সালাম আমের। মূল একাদশের দুজন সেন্টারব্যাকের মধ্যে মোহাম্মদ আল মুসাল্লামির জায়গা নিশ্চিত। তাঁর সঙ্গী হিসেবে মূল একাদশে জায়গা পাওয়ার জন্য লড়বেন বাকিরা। এর মধ্যে কাতার, আফগানিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে ওমরান আল হাদি খেলেছিলেন, এই ম্যাচেও তাঁর থাকার সম্ভাবনাই বেশি।

মাঝমাঠে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো হয় আহমেদ মোবারক, মোবারক কানু ও মোহসিন জওহরকে। ওমান দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আহমেদ মোবারক। দলের অধিনায়কও তিনি। সেই ২০০৩ সাল থেকে খেলে যাচ্ছেন, এখনো চিরসবুজ এই তারকা জাতীয় দলের হয়ে খেলে ফেলেছেন ১৭৪ ম্যাচ। উইঙ্গার হিসেবে দলে আছেন আল মুনধির আল আলাউই, আরশাদ আল আলাউই ও জহির আল আঘবরি। ওমানের সিব ক্লাবের তরুণ উইঙ্গার জহির আল আঘবরির খেলায় এরউইন বিশেষ মুগ্ধ হয়েছেন, বাংলাদেশের বিপক্ষে তাঁকে মাঠে দেখা যেতে পারে। নির্ভরযোগ্য উইঙ্গার রাঈদ আল ইব্রাহিম চোটের কারণে আছেন দলের বাইরে, তাঁর জায়গাতেই মাঠে নামতে পারেন জহির আল আঘবরি। স্ট্রাইকার পজিশনে নিয়মিত খেলে থাকেন আল ঘাসানি ও আল মুকবালি। ২০১৭ সালে জাতীয় দলে অভিষিক্ত আল ঘাসানি এ পর্যন্ত ১৩ ম্যাচ খেলে করেছেন দুই গোল। ওদিকে আল মুকবালি পুরোদস্তুর স্ট্রাইকার। পুরোদস্তুর স্ট্রাইকার হিসেবে আরবের গালফ কাপে ওমানের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা সাঈদ আল রুজাইকিকেও নেওয়া হয়েছে। ফলে মূল একাদশের প্রধান স্ট্রাইকার হওয়ার লড়াইটা আল মুকবালি ও আল রুজাইকির মধ্যেই হবে।