রিয়াল কেন রোনালদোকে ছাড়ল, ভেবেই কূল পান না তিনি

যখন রিয়ালে ছিলেন রোনালদো।ছবি : রয়টার্স

এক দলে সতীর্থ হিসেবে খেললে তো বটেই, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাওয়ার স্বপ্নও থাকে কত ফুটবলারের। হাজার হোক, অন্তত নব্বই মিনিট এক মাঠে, এক সঙ্গে খেলার সুযোগ তো হবে! হয়তো এ সুযোগের অপেক্ষায় ছিল শাখতার দোনেৎস্কের খেলোয়াড়েরা, কিন্তু বিধি বাম। রোনালদো রিয়ালে থাকলে তো!

দুই বছর আগেই স্পেন ছেড়ে ইতালিতে পাড়ি জমিয়েছেন রোনালদো। রিয়ালের সাদা নয়, রোনালদোর গায়ে এখন জুভেন্টাসের সাদা-কালো জার্সি। অথচ এই শাখতারের সঙ্গেই সর্বশেষ দুই ম্যাচে গুনে গুনে চার গোল করেছিলেন, রিয়ালের হয়ে। সেই রিয়ালই এখন রোনালদোকে ছাড়া মাঠে নামে, ফি হপ্তা। যে ব্যাপারটাকে কয়েক বছর আগেও অলীক কল্পনা বলেই মনে হতো। রোনালদোহীন জীবনে রিয়াল অভ্যস্ত হয়ে গেলেও, শাখতার এখনো মানতে পারছে না, আগামীকাল প্রতিপক্ষ হিসেবে রিয়াল থাকলেও, রোনালদো থাকবেন না।

এখন জুভেন্টাসের মূল কান্ডারি তিনি।
ছবি : রয়টার্স

রোনালদোর স্বদেশি বলেই কি না, শাখতারের কোচ লুইস কাস্ত্রো এখনো বুঝতে পারেন না, রোনালদোর মতো তারকাকে কেউ কেন ছেড়ে দেবে। ম্যাচের আগে তাই জানিয়েছেন নিজের বিস্ময়ের কথা, ‘আপনার দলে যদি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো থাকে, তাহলে আপনার কোনোভাবেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া উচিত না। কক্ষনো না।’

২০১৫ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপপর্বে দুবার মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। প্রথম লেগে নিজেদের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৪-০ গোলের বিশাল জয় পায় রিয়াল। জোড়া গোল করেছিলেন রোনালদো, একটি করে গোল পেয়েছিলেন সার্জিও রামোস ও করিম বেনজেমা। দ্বিতীয় লেগে নিজেদের মাঠে অবশ্য ভালোই প্রতিরোধ গড়তে পেরেছিল শাখতার। তিন গোল দিয়েছিল রিয়ালকে। কিন্তু শেষমেশ ওই রোনালদো নামের ‘হার-না-মানা যন্ত্রের’ কাছেই বশ মানতে হয় ইউক্রেনের ক্লাবটাকে। লুকা মদরিচ ও দানি কারভাহালের পাশাপাশি সে ম্যাচেও জোড়া গোল করেছিলেন রোনালদো। ওই দুই লেগে গোল করা অন্যান্য খেলোয়াড়েরা এখনো রিয়ালে থাকলেও, নেই রোনালদো।

শাখতার কোচ লুইস কাস্ত্রো।
ছবি : টুইটার

রোনালদো রিয়ালে থাকুক বা না থাকুক, তাতে কাস্ত্রোর চোখে তাঁর গুরুত্ব বিন্দুমাত্রও কমেনি। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে এখনো কাস্ত্রো বেছে নেন 'দেশি ভাই'কে, 'আমরা যখন রোনালদোর কথা বলি, এর অর্থ আমরা বিশ্বের সবচে সেরা, সবচেয়ে কার্যকরী ফুটবলারটার কথা বলছি। ও একটা যন্ত্র। আত্মত্যাগের যন্ত্র। আমি তুলনা করতে পছন্দ করি না। তবে হ্যাঁ, আমার কাছে ও সেরা। ওর উঠে আসার পেছনে যে গল্প আছে, সেটা অনুকরণীয়। মাত্র এগারো বছর বয়সে বাড়িঘর ছেড়ে ও স্পোর্টিং লিসবনে এসেছিল ফুটবলার হওয়ার লক্ষ্যে। ও এমন একজন ফুটবলার, যে একাই উঠে এসেছে এই পর্যায়ে। অনন্য একাগ্রতা নিয়ে।'