রিয়ালকে হারিয়ে বার্সা সমর্থকদের সঙ্গে উদযাপন করবেন ভিদাল

মুখ খুললেই সমস্যায় পড়েন ভিদাল।ছবি : রয়টার্স

যুদ্ধংদেহী শরীরী ভাষা, মাঠেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়তে পারার ক্ষমতা রাখেন আর্তুরো ভিদাল। প্রতিপক্ষকে মাঠের এক ইঞ্চিও ছাড়তে রাজি হন না। মাঝমাঠে এমন প্রাণচঞ্চল খেলোয়াড় থাকলে কোচের দুশ্চিন্তা কিছুটা হলেও কমে। সমস্যা হলো, শুধু পা নয়, মুখও সমানে চলে চিলিয়ান মিডফিল্ডারের। তার ওপর বার্সার সাবেক মিডফিল্ডার ছিলেন, রিয়ালের প্রতি তাঁর যে বিশেষ অনুরাগ আছে, তা বলা যাবে না। আজ রাতে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগে মাঠে নামবে ভিদালের বর্তমান ক্লাব ইন্টার। এমন অবস্থায় কীভাবে চুপ থাকেন ভিদাল?

চুপ থাকেনওনি চিলির এই তারকা। ম্যাচটা ইন্টার বা রিয়াল, দুই দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের আগে রিয়ালকে উসকে দিয়েছেন আরেকটি বিতর্কিত কথা বলে। ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ইন্টারের হয়ে রিয়ালকে হারাতে চান যাতে বার্সা সমর্থকেরাও উদযাপন করতে পারেন!

দুবছর খেলে গেছেন বার্সেলোনায়। সে দুই বছর রিয়ালের বিপক্ষে অনেক কথাই বলেছেন, জানিয়েছেন নিজের অপছন্দের কথা। এখন ইন্টারে গিয়েও সেই ‘শত্রুতা’টা ভুলতে পারছেন না ভিদাল। ইন্টারের হয়ে ম্যাচ জিতে পূর্ণ তিন পয়েন্ট পাওয়া তো বটেই, ভিদালের মাথায় ঘুরছে আরেকটা লক্ষ্যও, ‘ম্যাচটা অসাধারণ হতে চলেছে। আমি দুটি অসাধারণ বছর কাটিয়েছি বার্সেলোনায়। তাই আমার আশা হলো ম্যাচটা জিতে ইন্টার ও বার্সা দুই দলের সমর্থকের সঙ্গেই উদযাপন করার।’

গত মৌসুমেও মেসিদের সঙ্গে খেলেছেন ভিদাল।
ছবি : টুইটার

তবে ভিদাল যা-ই বলুন না কেন, রিয়ালের বিপক্ষে তাঁর রেকর্ড কিন্তু তাঁর পক্ষে কথা বলে না। বার্সার আগে বায়ার্নে যখন খেলতেন, তখন রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল খেলতে গিয়ে লাল কার্ড দেখেছিলেন। বার্সার হয়ে মাদ্রিদের বিপক্ষে শেষ যে দুই ম্যাচ খেলে এসেছেন, ওই দুই ম্যাচের একটায় বার্সা ড্র করে, একটায় হেরে যায়।

তবে এর আগে যতবার এমন বিতর্কিত কথা বলেছেন, ততবার নিজের কথা নিজেই গিলেছেন ভিদাল। চ্যাম্পিয়নস লিগের গত আসরের কোয়ার্টার ফাইনালের কথাই ধরুন। ম্যাচের আগে ভয়ংকর এক হুমকি দিয়েছিলেন ভিদাল। বলেছিলেন ‘বিশ্বের সেরা দল’ বার্সেলোনার মুখোমুখি হওয়ার আগে ভয় পাওয়া উচিত বায়ার্নের, ‘বায়ার্ন আত্মবিশ্বাসী থাকবে। কিন্তু তাদের জেনে রাখা ভালো, তারা বুন্দেসলিগার কোনো দলের মুখোমুখি হচ্ছে না। তারা বার্সার মুখোমুখি হচ্ছে। আমরা বিশ্বের সেরা দল।’

পরে ভিদালের বার্সেলোনাই ৮-২ গোলে উড়ে যায় বায়ার্নের কাছে। শুধু তা-ই নয়, তাঁর আগের মৌসুমে আরও বিতর্কিত কথা বলেছিলেন ভিদাল। লিভারপুলকে সেবার সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ৩-০ গোলে হারিয়ে আকাশে উড়ছিলেন ভিদাল। দ্বিতীয় লেগে লিভারপুলের প্রত্যাবর্তনের কথা জিজ্ঞেস করতেই হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন, ‘লিভারপুল যদি ওঠে (ফাইনালে) আমি আমার বাঁ অণ্ডকোষ ওদের দান করে দেব আর ডানটা দিয়ে দেব রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকদের যারা লিভারপুলকে সমর্থন করছিল।’

দ্বিতীয় লেগে ৪-০ গোলে উড়ে যাওয়ার পর অবশ্য নিজের পৌরুষ বিসর্জন দেওয়ার প্রতিজ্ঞা ভেঙেছেন ভিদাল। ম্যাচের আগে বড় মুখ করে কথা বললে সেটা মাঠে প্রমাণের দায়ও থাকে। কিন্তু বার্সার জার্সিতে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার স্বপ্ন দেখা ভিদাল টানা দুই মৌসুমেই সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। উল্টো ক্লাবের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দুই দুঃস্বপ্ন দেখেছেন দুবারই।

মনে হচ্ছে, এ ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে তাই ভিদালকে অন্তত না পাঠালেই পারত ইন্টার!