রেকর্ড ছুঁয়ে পর্তুগালকে শেষ ষোলোয় তুললেন রোনালদো

ম্যাচ শেষে হাসিই ফুটেছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মুখে।ছবি: রয়টার্স

ফুটবলপ্রেমীদের জন্য কী একটা রাতই না কেটেছে আজ! পর্তুগাল, নাকি জার্মানি-কোন দল উঠবে এবারের ইউরোর শেষ ষোলোতে। এই রোমাঞ্চ নিয়েই দুই মাঠে শুরু হয় দুটি ম্যাচ। হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের মুখোমুখি হয় ইউরোর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল। আর মিউনিখে হাঙ্গেরিকে আতিথ্য দেয় জার্মানি।

রাত জেগে টেলিভিশনে যারা খেলা দেখেছেন, বারবারই চাপতে হয়েছে রিমোটের বোতাম! এক মাঠে পর্তুগাল এগিয়ে গেল তো অন্য মাঠে পিছিয়ে পড়েছে জার্মানি। আবার পর্তুগালের বিপক্ষে ফ্রান্সের সমতায় ফেরার মতো মিউনিখে সমতায় ফিরেছে জার্মানি। এমন রোমাঞ্চকর রাতের শেষ হয়েছে অবশ্য জার্মানি ও পর্তুগাল দুই দলেরই শেষ ষোলোতে ওঠা দিয়ে।

রোনালদোর জোড়ো গোলে শেষ ষোলোতে উঠেছে পর্তুগাল।
ছবি: রয়টার্স

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জোড়া গোলে ফ্রান্সের সঙ্গে ২-২ গোলের ড্র করে পর্তুগাল শেষ ষোলোতে উঠেছে সেরা তৃতীয় চার দলের একটি হয়ে। অন্যদিকে হাঙ্গেরির সঙ্গে ২-২ গোলের ড্র করে জার্মানি শেষ ষোলোতে উঠেছে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে। এবারের ইউরোর মৃত্যুকূপ থেকে ছিটকে পড়েছে হাঙ্গেরি।

ফ্রান্স-পর্তুগাল ম্যাচে ছিল টানটান উত্তেজনা। দুটি পেনাল্টি থেকে গোল করেন রোনালদো। আর এই দুই গোলে তিনি ছুঁয়ে ফেলেছৈন আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি গোল করা আলী দাইয়ির রেকর্ড। জাতীয় দলের হয়ে ইরানের দাইয়ি ও পর্তুগালের রোনালদো; দুজনের গোলই এখন ১০৯টি করে।

ফ্রান্সের হয়ে জোড়া গোল করেছেন করিম বেনজেমা।
ছবি: রয়টার্স

বাঁচামরার লড়াইয়ে ফ্রান্সের বিপক্ষে অসাধারণ ফুটবলই উপহার দিয়েছেন রোনালদোরা। এর ফলও তাঁরা পেয়ে যান দ্রুতই। ম্যাচের ২৭ মিনিটে বক্সে ভেসে আসা বল পাঞ্চ করে বিপদমুক্ত করতে যান ফ্রান্সের গোলকিপার উগো লরিস। কিন্তু তাঁর পাঞ্চ গিয়ে লাগে হেড নিতে যাওয়া পর্তুগালের দানিলোর মাথায়। রেফারি সঙ্গেই সঙ্গেই পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ফ্রান্সের খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ করলেও তা ধােপে টেকেনি। ভিএআর দেখে রেফারি তাঁর পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। পেনাল্টি থেকে গোল করে পর্তুগালকে এগিয়ে দেন রোনালদো।

পেনাল্টিতে পিছিয়ে পড়া ফ্রান্স সমতায় ফেরে পেনাল্টি থেকেই। ৪৪ মিনিটে বক্সে ঢোকার মুখে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ফাউল করেন পর্তুগালের এক ডিফেন্ডার। পেনাল্টি থেকে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান করিম বেনজেমা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পর্তুগালের রক্ষণে চাপ তৈরি করে খেলতে থাকে ফ্রান্স। করিম বেনজেমার একটি গোলও বাতিল হয় তখন। তবে ৪৭ মিনিটে ফ্রান্স এগিয়ে যায় তাঁর গোলেই।

নিজেদের অর্ধে বল পেয়ে দুর্দান্ত এক লম্বা পাস বাড়ান পল পগবা। সেই পাস অসাধারণভাবে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার সময় পর্তুগালের দুজন খেলোয়াড়কে ছিটকে বেনজেমা। এরপর ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে জড়ান। পর্তুগালের খেলোয়াড়েরা অবশ্য অফসাইডের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ভিএআর দেখে গোলের সিদ্ধান্তই ঠিক রাখেন রেফারি।

পিছিয়ে পড়ার পর পর্তুগাল শিবিরে হতাশা নেমে আসে। কিন্তু রোনালদো সবাইকে মাথা ঠাণ্ডা করে মরিয়া হয়ে খেলার পরামর্শ দেন। এর ফলটাও তারা পেয়ে যায় ম্যাচের ৬০ মিনিটে। বক্সের মধ্য থেকে রোনালদোর একটি ক্রস থেকে বল হাতে লাগে ফ্রান্সের এক ডিফেন্ডারের। পেনাল্টি থেকে পর্তুগালকে শেষ ষোলোতে আর দাইয়িকে ছুঁয়ে ফেলা গোলটি করেন রোনালদো।