রেকর্ড হারে প্রতিপক্ষের দোষ দেখছেন গার্দিওলা

ক্যারিয়ারে এই প্রথম পাঁচ গোল খেলেন গার্দিওলা।ছবি: এএফপি

পেপ গার্দিওলার যে অনন্য এক অভিজ্ঞতা পেয়ে গেছেন, এটা কালই জানা হয়ে গেছে। কোচিং ক্যারিয়ারে এই প্রথম কোনো দল নিয়ে পাঁচ গোল হজম করেছেন গার্দিওলা। তবে ম্যানচেস্টার সিটির জন্যও অনেক বড় ধাক্কা ছিল লেস্টার সিটির কাছে ৫-২ গোলের হার। ২০০৮ সালে আরব আমিরাতের মালিকের অধীনে যাওয়ার পর এমন কিছু হয়নি সেটা তো ধারণা করাই যায়। বাস্তবতা হলো, হীনবল ম্যানচেস্টার সিটিও ঘরের মাঠে পাঁচ গোল শেষ খেয়েছিল ২০০৩ সালে।

এমন এক হারের পর দায় স্বীকার করে নেওয়া উপায় থাকে না কারও। গার্দিওলা নিজের দলের ব্যর্থতা মেনে নিয়েছেন। তবে ট্যাকটিক্যালি নিজের ভুল দেখার আগে প্রতিপক্ষের ওপরও দায় চাপিয়েছেন কাতালান কোচ। তাঁর দাবি, লেস্টার কোচ ব্রেন্ডন রজার্সের অতিরক্ষণাত্মক ধরন নাকি তাঁর পরিকল্পনায় বাঁধ সেধেছে!

গতকাল ম্যাচের শুরুটা দারুণ হয়েছিল সিটির। চার মিনিটেই রিয়াদ মাহরেজের এক গোলার মতো শটে এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। তখন মনে হয়েছিল, ইতিহাদে গোলবন্যা হবে। সে বন্যা হলো ঠিকই, কিন্তু সেটার স্রোত যে এভাবে উল্টে যাবে, সেটা মনে হয় না কেউ আঁচ করতে পেরেছে। মাঝ বিরতির ঠিক আগে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরান ভার্ডি। দ্বিতীয়ার্ধেই মূল সর্বনাশ হয়েছে সিটির। ৫৩ থেকে ৫৮ মিনিটের মধ্যে আরও দুই গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন ভার্ডি। জেমস ম্যাডিসন বোঝা বাড়ান ৭৭ মিনিটে। খেলা শেষ হওয়ার আগের দশ মিনিটে দুই দলই আবার একটি করে গোল দিয়ে ব্যবধান তিনই রেখেছে।

দ্বিতীয়ার্ধে গার্দিওলাকে কোনো স্বস্তি দেননি তাঁর খেলোয়াড়েরা।
ছবি: রয়টার্স

ম্যাচের পর গার্দিওলা স্বীকার করেছেন, তাঁদের আরও ভালো খেলা উচিত ছিল। কিন্তু সে সঙ্গে প্রতিপক্ষ ডাগআউটে থাকা রজার্সের ট্যাকটিকস নিয়েও কথা বলেছেন। প্রতি আক্রমণকে অস্ত্র মেনে নামা লেস্টারকে ইঙ্গিতে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘ওরা এত নিচে নেমে খেলায় আমরা সুযোগ সৃষ্টি করতে পারিনি। এতে আমরা নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম। ওরা খেলতে চায়নি, ওরা শুধু প্রতি আক্রমণ করতে চেয়েছে। আমরা জানি ভার্ডি অনেক দূর দৌড়াতে পারে এবং বার্নসকে (হার্ভি) নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। কিন্তু যখনই আমরা নার্ভাস হয়ে পড়লাম, তখন মনে হলো আমরা ভালো করছি না।’

প্রতিপক্ষের মাঠে প্রতি আক্রমণকে অস্ত্র মানায় কেউ রজার্সের ভুল খুঁজে পাবেন না। সেটাও আবার গার্দিওলার সিটির বিপক্ষে। কিন্তু সিটি কোচ তাঁর দলকে প্রাণভরে খেলতে না দেওয়ার কথা ভুলতেই পারছিলেন না, ‘আমরা তো ১০টা সুযোগ সৃষ্টি করতে পারি না। আমরা জানতাম কাজটা কঠিন হবে। ৫-২ অবস্থাতেও লেস্টার বক্সে ছিল। আমি হাল ছাড়ব না। আমি সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। অবশ্যই, এটা কঠিন, মেনে নেওয়াই ভালো। এখনো মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেললাম।’

প্রতিপক্ষ নিয়ে নিজের সব ক্ষোভ ঝেড়ে ফেলে এরপর গার্দিওলার মনে হয়েছে, এ হারের পেছনে তাঁর খেলোয়াড়দেরও দায় আছে। সমস্যার সমাধান খোঁজার আশ্বাস দিলেও আগে খেলোয়াড়দের মানসিকতা বদলের ওপরই গুরুত্ব দিয়েছেন গার্দিওলা, ‘আমরা প্রথম ৩০ মিনিট ভালো খেলেছি, চার মিনিটে একতা গোল করেছি। এরপরই আমাদের মনে হয়েছে আমরা ভালো খেলছি না, অথচ ব্যাপারটা ছিল উল্টো। আমরা ধৈর্য ধরে স্থির থাকার মতো দৃঢ় ছিলাম না। আমরা ভাবা শুরু করলাম, বাজে খেলছি। আমরা কিন্তু মাঝ বিরতিতে বলেছি, তোমরা ভালো খেলছ শুধু ধৈর্য ধর, বাকিটা আমাদের হাতেই আছে।’