রোনালদোর দিনেই অতৃপ্তি ঘোচালেন মেসি

মেসি-রোনালদো।ছবি: টুইটার

চাইলে ১০ জুলাই তারিখটাকে লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দুজনই সোনার হরফে বাঁধাই করে বাড়িতে রাখতে পারেন।

চ্যাম্পিয়নস লিগ, ঘরোয়া লিগ, কাপ শিরোপা, ব্যালন ডি অর, ফিফা বর্ষসেরা— কোন পুরস্কার ধরা দেয়নি এই দুজনের হাতে? ক্লাব আর ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার মিলিয়ে সবকিছুই জিতেছেন এই দুজন। নিজেদের তুলেছেন ফুটবলীয় চূড়ার সর্বোচ্চ উচ্চতায়। চাঁদে যেমন কলঙ্ক থাকে, তেমনই কলঙ্ক এই দুই মহারথীর ক্যারিয়ারেও ছিল। সেটি যেন ছিল বিধাতার নির্মম এক পরিহাস। ক্লাব ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য সবকিছু ধরা দিলেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্য ছিল না ফুটবলের দুই মহাতারকার।

ইউরো জেতা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো
ফাইল ছবি: এএফপি

রোনালদোর ক্ষেত্রে সেই আক্ষেপটা ২০১৬ সালেই ঘুচেছে। ২০০৩ সালে জাতীয় দলের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা রোনালদোকে ফুটবল পূর্ণ করেছিল ১৩ বছর পর। ২০০৪ ইউরোতে তরুণ রোনালদোর কান্না আনন্দাশ্রুতে রূপ নিয়েছিল গত ইউরোর ফাইনালে। ইউরোর শিরোপা জিতে পর্তুগাল নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্যের অধ্যায়টা রচনা করেছিল।

তারিখটা? ১০ জুলাই। এই তারিখেই আন্তর্জাতিক ট্রফির অপ্রাপ্তি ঘুচিয়েছিলেন রোনালদো।

রোনালদো সেবার পূর্ণ হলেও, মেসি ফিরেছিলেন খালি হাতেই। ২০০৭ কোপার ফাইনালে হার, ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে হার, ২০১৫ ও ২০১৬ কোপার ফাইনালে টাইব্রেকে হার, আন্তর্জাতিক মঞ্চে মেসির হৃদয় থেকে রক্তই ঝরেছে বারবার। কান্না বাঁধ মানেনি কখনো কখনো। হতাশ হয়ে অবসরও নিয়েছিলেন ২০১৬ তে। ভিদালের চিলির হাতে কোপার ট্রফি তুলে দিতে দিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদোকে ইউরোর ট্রফিতে চুমু এঁকে দিতে দেখেছিলেন।

সেই মেসির মুখে আজ রাজ্যজয়ের হাসি। যে রাজ্যপাট আর্জেন্টিনা হারিয়েছিল সেই ১৯৯৩ সালে। ২৮ বছর পর মহাদেশের সেরা হলেই মেসি জানিয়ে দিলেন, এখন আন্তর্জাতিক ট্রফি জেতেননি বলে সর্বকালের সেরার তালিকায় তাঁকে পিছিয়ে রাখলে চলবে না। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদোর সঙ্গে এই এক বাকি জায়গাতেও সমতা এনে ফেললেন।

অবশেষে আর্জেন্টিনার হয়ে শিরোপা জিতলেন লিওনেল মেসি।
ছবি: রয়টার্স

কাকতালীয় হলেও সমতা এল সেই ১০ জুলাই। পাঁচ বছরে আগে ক্যালেন্ডারের যে তারিখটিতে রোনালদোর মুখে হাসি ফুটেছিল সেই একই তারিখ ফুটবলের আরেক রাজপুত্রের প্রাপ্তির খাতাটাকেও ভরিয়ে দিল কানায় কানায়!

তবে প্রশ্ন উঠতেই পারে যে ১০ জুলাই কীভাবে হয়? উপমহাদেশের হিসেব অনুযায়ী আজ যে ১১ জুলাই! কিন্তু যেখানে খেলা হচ্ছে, সেখানে তো আজ ১০ জুলাই-ই!