রোনালদোর ফেরার ম্যাচে আলো মোরাতার দিকেই

কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে ফিরলেন রোনালদো।ছবি: রয়টার্স

কোভিড থেকে সেরে ওঠা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ফিরলেন চ্যাম্পিয়নস লিগে। তবে হাঙ্গেরিয়ান ক্লাব ফেরেনৎসভারোসের বিপক্ষে জুভেন্টাসের সহজ জয়ের নায়ক স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড আলভারো মোরাতা। জোড়া গোল পেয়েছেন তিনি। মোরাতার ২ গোলের পাশাপাশি অনেক দিন পর গোল পেয়েছেন দিবালাও। জুভেন্টাসের ৪-১ গোলে জয়ে আর্জেন্টাইন তারকাও জোড়া গোল পেতে পেতেও পাননি। দিবালার শট থেকেই জুভেন্টাসের চতুর্থ গোলটি এলেও সেটি শেষ পর্যন্ত বিবেচিত হয়েছে আত্মঘাতী হিসেবেই।

মোরাতার কথা আলাদা করেই বলতে হয়। জুভেন্টাসে এবার যোগ দিয়ে দারুণ করছেন তিনি। তাঁর ম্যাচের সপ্তম মিনিটে এগিয়ে যায় জুভেন্টাস। হুয়ান কুয়াদ্রাদোর ক্রস থেকে দারুণ ট্যাপে গোল করেন মোরাতা। জুভেন্টাসের হয়ে নিজের শততম ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখার প্রক্রিয়াটা শুরু করেছিলেন তখনই। জুভেন্টাস দ্বিতীয় গোল পায় বেশ পরে। ম্যাচের ৬০ মিনিটে মোরাতাই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রোনালদোর পাস থেকে। তাঁর এই গোলটিও ছিল দেখার মতো। বক্সের ঠিক ভেতরে দাঁড়িয়ে ডান পায়ের বাঁকানো শটে ছিল গোলটি।

গোল না পাওয়ার হতাশা ছিল রোনালদোর।
ছবি: রয়টার্স

ফেরেনৎসভারোস নিজেদের দুর্ভাগা ভাবতেই পারে। ২৫ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলতে আসা দলটি কাল পুসকাস অ্যারেনায় সামাজিক দূরত্ব মেনে কিছু দর্শককে খেলা দেখার সুযোগ করে দিয়েছিল। কিন্তু তাদের সমর্থনটা যেন চাপ হয়ে দাঁড়াল হাঙ্গেরিয়ান দলটির গোলরক্ষক দেনেস দিবুসের জন্য। একটি ব্যাকপাস ধরতে গিয়ে বদলি নামা দিবালার পায়ে বল তুলে দেন তিনি। উপহারটি গ্রহণ করতে একেবারেই সময় নেননি তিনি। ম্যাচের তখন ৭৪ মিনিট। আর্জেন্টাইন ফুটবলারের মৌসুম-শুরুর গোলেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় জুভেন্টাস। দিবাস বোধ হয় সেই ভুলে প্রচণ্ডভাবেই পুড়ছিলেন। ওটা আরও বড় চাপ হয়ে দেখা দেয় ৮১ মিনিটে। আবারও প্রায় একই ভুল করে বসেন তিনি। এবারও দিবালার পায়ে বল তুলে দেন তিনি। তবে দিবালার গোল লক্ষ্য করে নেওয়া শটটি ভেতরে ঢোকার আগ মুহূর্তে লাইন থেকে ক্লিয়ার করতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল করেন দাভিল।

৪-০ গোলে এগিয়ে যাওয়া জুভেন্টাস ‘ক্লিনশিট’ রেখেই মাঠ ছাড়তে পারত। তবে ফেরেনৎসভারোস সেটি হতে দেয়নি। ম্যাচের একেবারে শেষ মিনিটে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদের একটি গোল ফিরিয়ে দেয় তারা। ফ্রাঙ্ক গোলির সেই গোল পুসকাস অ্যারেনার স্বল্পসংখ্যক দর্শককে আনন্দে ভাসায়।

মোরাতা কাল জুভেন্টাসের হয়ে শততম ম্যাচ খেললেন, করেছেন জোড়া গোল।
ছবি: রয়টার্স

মোরাতা জুভেন্টাসে ফিরে কতটা খুশি, ম্যাচ শেষ সেটিই বলেছেন তিনি, ‘খুব ভালো লাগছে তুরিনে ফিরে। আমার যা যা প্রয়োজন, তার সবই আমি পাচ্ছি জুভেন্টাসে।’ তবে একই সঙ্গে এটাও বলেছেন, নিজের ক্যারিয়ারের সব অভিজ্ঞতা তাঁকে ঋদ্ধ হয়ে উঠতে দারুণ ভূমিকা রেখেছে, ‘আমার গোটা ক্যারিয়ারে যে অভিজ্ঞতা আমি সঞ্চয় করেছি, সেটি ভালো হোক কিংবা খারাপ, সেটি আমাকে আরও ভালো খেলোয়াড় হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে।’

বুদাপেস্টে ফেরেনৎসভারোসের বিপক্ষে জুভেন্টােসের জয়টা অনায়াসেই।
ছবি: রয়টার্স

আগের ম্যাচেই বার্সেলোনার কাছে হেরেছেন। ফেরেনৎসভারোসের সঙ্গে স্প্যানিশ জায়ান্টদের তুলনা না চললেও জুভেন্টাস কোচ আন্দ্রেয়া পিরলোর কাছে জয়টা বড় ব্যাপারই। তবে তিনি যে তাঁর খেলোয়াড়দের কাছে আরও ভালো পারফরম্যান্স আশা করেন, বলতে ভোলেননি সেটিও, ‘জিতে ভালো লাগছে। আমরা আরও ভালো খেলতে পারতাম। আমরা এই ম্যাচে কিছু ভুল করেছি। সম্ভবত জয় নিশ্চিত হওয়ার পর খেলোয়াড়দের মধ্যে কিছুটা গা ছাড়া ভাব এসে গিয়েছিল। তবে জয়ে আমি খুশি। তার পরেও আমাদের উন্নতি করতে হবে আরও।’