রোনালদোর রেকর্ডে ভাগ বসিয়ে মাথা চাপড়াতে হচ্ছে তাঁকে

আরেকটা গোলা যাচ্ছে গোলবারের দিকে।ছবি: রয়টার্স

সর্বশেষ এমন কিছু দেখিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ২০০৬ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সিতে যা করেছেন রোনালদো, প্রায় ১৪ বছর পর এসে সেই ইউনাইটেডের বিপক্ষেই তা করলেন ব্রাইটনের মিডফিল্ডার লিয়েন্দ্রো ট্রোসার্ড। কিন্তু সর্বকালের অন্যতম সেরার পাশে নাম লিখিয়েও খুব একটা আনন্দ পাবেন না ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। কারণ যেভাবে পাশে বসেছেন তাকে সাফল্য কিংবা ব্যর্থতার পাল্লায় মাপা যাবে না। দুর্ভাগ্যের পাল্লায় মাপতে হবে সেটা।

ব্রাইটন ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৬টি গোল ট্রোসার্ডের। ২৫ বছর বয়সীর প্রিমিয়ার লিগ ক্যারিয়ারে গোলের সংখ্যা আজই পঞ্চাশ ভাগ বেড়ে যেতে পারত। কিন্তু সেটা আর হতে দেয়নি দুর্ভাগ্য।

প্রিমিয়ার লিগে আজ দারুণ নাটকীয় ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলে জয় পেয়েছে ইউনাইটেড। নাটকীয় মোড় নেওয়া ম্যাচের দুর্ভাগা দলটির নাম ব্রাইটন। কারণ তাদের পাঁচটি শট গোল পোস্ট ও বারে লেগে ফিরে এসেছে। এর মধ্যে দলের বেলজিয়াম ফরোয়ার্ড ট্রোসার্ডের শটই ছিল তিনটি। এভাবেই রোনালদোকে ছুঁয়েছেন ২৫ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। সর্বশেষ ২০০৬ সালে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে রোনালদোরও তিনটি গোল আটকে দিয়েছিল ওই ‘উডওয়ার্ক’।

মূল উদ্দেশ্য হলো গোল করা, বারে লাগানো নয়। মাঝেমধ্যে আপনার ভাগ্য থাকা লাগে
ব্রুনো ফার্নান্দেজ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড প্লেমেকার

আগের ম্যাচে ক্রিস্টাল প্যালেসকে ৩-০ গোলে হারানো ব্রাইটন আজ শুরু থেকেই ছিল দুর্দান্ত। ট্রোসার্ডের গোলে ১০ মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে যেতে পারত তারা। ৯ মিনিটে বক্সের ওপর থেকে নেওয়া তাঁর বাম পায়ের শট ক্রসবারে লাগে। ২১ মিনিটে দ্বিতীয়বার। এবার তাঁর বাম পায়ের শট এবার দূরের পোস্ট লাগে। আর শেষ ঘটনা দ্বিতীয়ার্ধের। ৭৬ মিনিটে তাঁর দল তখন ২-১ গোলে পিছিয়ে। এবার তাঁর বাম পায়ের শট লাগে ক্রসবারে।

ট্রোসার্ডের দলের দিনটিও খারাপ গেছে। অতিরিক্ত যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে ২-২ গোলে সমতায় থেকে ম্যাচটি শেষ করতে যাচ্ছিল তারা। খেলার শেষ বাঁশিও বেজেছিল। কিন্তু তারও ৫ মিনিট পর ব্রুনো ফার্নান্দেজের পেনাল্টি গোলে জয় পেয়েছে ইউনাইটেড। খেলার শেষ মুহূর্তে ম্যানচেস্টার অধিনায়ক হ্যারি ম্যাগুয়ারের হেড নিল মপের হাতে লাগে। রেফারি বিষয়টি খেয়াল না করলেও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলোয়াড়দের জোরালো দাবির পর ভিএআরও জানিয়ে দেয় পেনাল্টি! নির্দেশ দেওয়া হলে স্পটকিক থেকে দলকে জয় এনে দেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ। ম্যাচ শেষে ফার্নান্দেজ তাই ফোড়ন কাটতে পারছেন, ‘হয়তো ওদের আরও কিছু প্রাপ্য ছিল। কিন্তু এখানে মূল উদ্দেশ্য হলো গোল করা, বারে লাগানো নয়। মাঝেমধ্যে আপনার ভাগ্য থাকা লাগে।’

আজকের দিনটি দুর্ভাগ্যে মোড়ানো থাকলেও এই মাসটি ট্রোসার্ডের জন্য বিশেষ কিছু হয়ে থাকবে। বেলজিয়ামের হয়ে বয়সভিত্তিক প্রায় সব দলে খেলা হলেও জাতীয় দলে ডাক পাচ্ছিলেন না কোনোভাবেই। অবশেষে ৫ সেপ্টেম্বর ইউরোপিয়ান ন্যাশনস কাপে ডেনমার্কের বিপক্ষে জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হয়েছে তাঁর। এখন পর্যন্ত বেলজিয়ামের জার্সিতে ওই এক ম্যাচ খেলা ট্রোসার্ড গত বছরই নাম লিখিয়েছেন ব্রাইটনে।