রোনালদোহীন প্রথম ম্যাচেই হার জুভেন্টাসের

রোনালদো নেই, দিবালাও নিষ্প্রভছবি : রয়টার্স

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এখন আর জুভেন্টাসের খেলোয়াড় নন। ব্যাপারটা নিশ্চিত হওয়ার পর আজকেই প্রথম মাঠে নেমেছিল জুভেন্টাস। রোনালদোর মতো খেলোয়াড় দলে না থাকাটা যে কত বড় সমস্যার বিষয়, সেটা তাঁরা আজই হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে।

ইতালিয়ান লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে পুঁচকে এম্পোলির কাছে ১-০ গোলে হেরে বসেছে জুভেন্টাস। এম্পোলির হয়ে গোল করেছেন ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড লিওনার্দো মানকুসো। হারটা জুভেন্টাসের গায়ে আরও বেশি করে বিঁধবে, এম্পোলি যে এই মৌসুমেই দ্বিতীয় বিভাগ থেকে উঠে এসে খেলছে প্রথম বিভাগে!

রোনালদো যে গত ম্যাচেই মূল একাদশে ছিলেন, তা কিন্তু নয়। তবে সে ম্যাচে অন্তত বিকল্প খেলোয়াড় হিসেবে শেষদিকে মাঠে নেমেছিলেন। এবার সে সুবিধাটাও পায়নি জুভেন্টাস। বেঞ্চ থেকে রোনালদোর মানের কোনো খেলোয়াড় এসে এ যাত্রায় উদ্ধার করে দিতে পারেনি তাঁদের। পারবে কী করে? রোনালদো যে ঘরে ফিরেছেন! রোনালদো এখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলোয়াড়। নাটকীয় ৪৮ ঘন্টা শেষে জুভেন্টাস থেকে নিজের সাবেক ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নাম লিখিয়েছেন রোনালদো।

রোনালদোহীন জুভেন্টাস সেজেছিল ৪-৩-৩ ছকে। একক স্ট্রাইকার হিসেবে নেমেছিলেন আর্জেন্টাইন পাওলো দিবালা, যার দুপাশে ছিলেন ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড ফেদেরিকো কিয়েসা ও আমেরিকান মিডফিল্ডার ওয়েস্টন ম্যাকেনি। পিছনে তিন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের ভূমিকায় ছিলেন উরুগুয়ের রদ্রিগো বেনতাঙ্কুর, ফ্রান্সের আদ্রিয়াঁ রাবিও ও ব্রাজিলের দানিলো। ফুলব্যাক দানিলো গত মৌসুমে বেশ কয়েক ম্যাচ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেছিলেন, এ ম্যাচেও সে দায়িত্বই পালন করেছেন। রক্ষণে হুয়ান কুয়াদ্রাদো আর অ্যালেক্স সান্দ্রোকে দুপাশে রেখে মাঝে ছিলেন ম্যাটাইস ডি লিখট আর লিওনার্দো বোনুচ্চি। আর গোলকিপার হিসেবে যথারীতি ওজিয়েক সেজনি।

মাঝমাঠে জুভেন্টাসের মানের অভাবটা গত মৌসুম থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল, এই ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এমনকি শেষদিকে নতুন দলে আসা মানুয়েল লোকাতেল্লি কিংবা গতবার দলে আসা দেয়ান কুলুসেভস্কিও উদ্ধার করতে পারেননি জুভেন্টাসকে। ওদিকে দিবালাও ছিলের নিষ্প্রভ। এই ছকে দিবালার কার্যকারিতা কতটুকু, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। ওদিকে লেফটব্যাক হিসেবে সান্দ্রোও সন্তোষজনক খেলা উপহার দিতে পারেননি সমর্থকদের।

ওদিকে এম্পোলির খেলা দেখে মনেই হয়নি তাঁরা সদ্যই দ্বিতীয় বিভাগ থেকে উঠে এসেছে। কোচ অরেলিও আন্দ্রেয়াজোল্লির অধীনে বেশ আক্রমণাত্মক খেলে গিয়েছে তাঁরা। ম্যাচের ২১ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দিয়েছেন লিওনার্দো মানকুসো। এবং গোল করেই তাঁরা রক্ষণ করতে বসে যায়নি। একের পর এক আক্রমণ করে গিয়েছে।

ম্যাচ জয়ের পর এম্পোলি খেলোয়াড়দের উল্লাস
ছবি : রয়টার্স

বেঞ্চ থেকে লোকাতেল্লি, মোরাতা, কুলুসেভস্কি, ডি শিলিও - কেউ নেমে জুভেন্টাসকে একটা গোল এনে দিতে পারেননি। ফলে নিশ্চিত হয়েছে, দুই ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট পেয়েছে জুভেন্টাস। শীর্ষে থাকা ইন্টার মিলানের চেয়ে এর মধ্যেই ৫ পয়েন্টে পিছিয়ে গেছে তাঁরা। তবে এমন খরা জুভেন্টাস আগেও দেখেছিল। ২০১৫-১৬ মৌসুমে এই মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রির অধীনেই লিগের প্রথম দুই ম্যাচের একটিতে হেরেছিল, একটিতে ড্র করেছিল।

সেবার শেষমেশ লিগ জুভেন্টাসের ঘরেই গিয়েছিল। জুভেন্টাসের সমর্থকেরা চাইলে সেখান থেকে আশা খুঁজে নিতে পারেন!

ওদিকে ইতালিয়ান লিগের আজকের বাকি ম্যাচগুলোতে জয় পেয়েছে ফিওরেন্তিনা ও লাৎসিও। স্পেৎসিয়াকে ৬-১ গোলের বিশাল ব্যবধান হারিয়েছে মরিজিও সারির লাৎসিও। হ্যাটট্রিক করেছেন দলের ইতালিয়ান স্ট্রাইকার চিরো ইম্মোবিলে। একটি করে গোল করেছেন ফুলব্যাক এলসাইদ হুসাই, ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফেলিপে অ্যান্ডারসন ও স্প্যানিশ মিডফিল্ডার লুইস আলবার্তো।

ওদিকে তোরিনোকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ফিওরেন্তিনা। আর্জেন্টাইন উইঙ্গার নিকোলাস গঞ্জালেস ও সার্বিয়ান স্ট্রাইকার দুসান ভ্লাহোভিচের গোলে ৬৯ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলে এগিয়ে গেলেও তোরিনোর হয়ে ৮৯ মিনিটে গোল করে ম্যাচে উত্তেজনা ফিরিয়ে আনেন ইতালিয়ান উইঙ্গার সিমোনে ভের্দি। শেষমেশ যদিও জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ফিওরেন্তিনা।