লিভারপুলকে জেতাল আত্মঘাতী গোল

আত্মঘাতী গোলে জিতল লিভারপুলছবি: এএফপি

চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম ম্যাচটা ছিল লিভারপুলের জন্য একরকম পরীক্ষা। সেই পরীক্ষাটা ছিল চোটে পড়া ভার্জিল ফন ডাইককে ছাড়া দল কেমন করে সেটি নিয়ে। শনিবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে এভারটনের বিপক্ষে পায়ের লিগামেন্টে আঘাত পেয়ে মৌসুমের একটা বড় সময়ের জন্য লিভারপুলের এই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় চলে গেছেন মাঠের বাইরে। তবে ফন ডাইককে ছাড়াও যে লিভারপুল চালিয়ে নিতে পারবে, আয়াক্সের বিপক্ষে কাল সেটিই দেখল সবাই। যদিও আয়াক্সের বিপক্ষে ১-০ গোলে জেতা ম্যাচটি লিভারপুল সমর্থকদের খুব একটা তৃপ্ত করতে পারেনি। ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছে আত্মঘাতী এক গোলে।

আয়াক্স নিজেদের দুর্ভাগা ভাবতেই পারে।
ছবি: এএফপি

ফন ডাইকের বদলে লিভারপুলের রক্ষণে ব্রাজিলিয়ান ফাবিনিও জো গোমেজকে নিয়ে দায়িত্ব ভালোই সামলেছেন। যদিও আয়াক্সের আক্রমণের তোড়ে বেশ কয়েকবারই ইয়ুর্গেন ক্লপকে চিন্তিত হতে হয়েছে। লিভারপুলের রক্ষণকে দেখা গেছে কিছুটা এলোমেলো। ফাবিনিও-র এক গোল লাইন সেভ আর গোলপোস্টের ভালো অবদান আছে লিভারপুলের জয়ে।

ম্যাচের ৩৪ মিনিটের সময় সাদিও মানের একটি কাট ব্যাক আয়াক্স রক্ষণ-সেনা নিকোলাস তাগলিয়াফিকোর পায়ে লেগে বোকা বানায় গোলরক্ষক ওনানাকে। এই আত্মঘাতী গোলকে ক্লপ আশীর্বাদই মনে করতে পারেন। প্রিমিয়ার লিগের সবশেষ চ্যাম্পিয়নরা নতুন মৌসুমের শুরুটা ভালো করলেও সবশেষ তিন ম্যাচে যে তারা জেতেনি! এর মধ্যে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে ৭-২ গোলে হারের ক্ষত এখনো দগদগে। সে হিসেবে আয়াক্সের বিপক্ষে ম্যাচে যে করেই হোক জয় চাচ্ছিলেন কোচ ক্লপ। সেই জয়টা এসেছে, সেটি যেভাবেই হোক।

দুসান তাদিচের প্রচেষ্টা গোললাইন থেকে বাঁচান ফাবিনিও।
ছবি: এএফপি

আয়াক্স নিজেদের দুর্ভাগা মনে করতেই পারে। প্রথমার্ধে তাদিচকে গোল-বঞ্চিত করেন লিভারপুল ডিফেন্ডার ফাবিনিও। পেছন থেকে বাড়ানো থ্রু ধরে তাদিচ গোলরক্ষক আদ্রিয়ানের মাথার ওপর দিয়ে ‘ফ্লিক’ করেছিলেন। বলটি গোলে ঢোকার মুহূর্তে সেটি গোললাইন থেকে উড়িয়ে দেন ব্রাজিল ডিফেন্ডার। এর আগে ডেভিড নেরেসের পাস থেকে একেবারে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থেকে বল গোলে পাঠাতে পারেননি কুইন্সি প্রমেস। দ্বিতীয়ার্ধে একেবারে শুরুর দিকে ক্লাসেনসের দূরপাল্লার শট লিভারপুলের পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়।

গোলরক্ষক আলিসন বেকারের অনুপস্থিতি প্রতি ম্যাচেই টের পাচ্ছে লিভারপুল। কালও গোলরক্ষক আদ্রিয়ান বেশ কয়েকবারই বিপদের কারণ হয়েছেন। ১৪ মিনিটে বল বাড়াতে গিয়ে ডি বক্সের মধ্যেই আয়াক্স ফরোয়ার্ডের পায়ে বল প্রায় তুলে দিতে গিয়েছিলেন। শেষ দিকে তাঁরই ভুলে ইয়ুর্গেন একেলেনক্যাম্প আয়াক্সের হয়ে সমতাটা প্রায় ফিরিয়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু সৌভাগ্য লিভারপুলের। এই আদ্রিয়ানই আবার নেরেসের কাট ব্যাক থেকে মাজারোউইর শট দারুণ কৃতিত্বের সঙ্গে ঠেকিয়ে লিভারপুলকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেন।

দুদলের খেলা আরও ভালো হতে পারত।
ছবি: এএফপি

ম্যাচ শেষে তিন ম্যাচ পর জয়ের স্বস্তি ছাড়াও লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের কণ্ঠে থাকল ফাবিনিও-র প্রশংসা, ‘আমি খুব অবাক নই ফাবিনিও ভালো খেলায়। আমি তাঁর খেলায় মুগ্ধ। সে যদি ভালো না খেলত, তাহলে হয়তো আমাদের অন্য কিছু ভাবতে হতো, কিন্তু সেটি কঠিন হতো। আজকের ম্যাচটি ফাবিনিওকে আত্মবিশ্বাস জোগাবে যা দল হিসেবে আমাদের জন্য দারুণ উপকারী।’