লিভারপুলের কোয়াড্রপল–স্বপ্নে টটেনহামের ধাক্কা

মোহাম্মদ সালাহর মুখই সব বলে দিচ্ছে। টটেনহামের সঙ্গে ড্র করেছে লিভারপুলছবি: রয়টার্স

কোয়াড্রপল বা শিরোপা চতুষ্টয়ের স্বপ্ন চোখে মেখেই আজকাল প্রতিটি ম্যাচ খেলতে নামে লিভারপুল। অবিশ্বাস্য অর্জনের সেই স্বপ্ন যেমন অনুপ্রেরণা, তেমনি বড্ড চাপও লিভারপুলের জন্য। সেই চাপেই কি আজ পিষ্ট হলো ইয়ুর্গেন ক্লপের দল! ঘরের মাঠে টটেনহামের সঙ্গে ড্র করে যে শিরোপা চতুষ্টয়ের স্বপ্নে বড় ধাক্কাই খেয়েছে লিভারপুল।

অ্যানফিল্ডে আজ টটেনহামের সঙ্গে ১–১ গোলে ড্র করেছে লিভারপুল। এই ম্যাচ থেকে পাওয়া ১ পয়েন্ট ম্যানচেস্টার সিটিকে টপকে আপাতত পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে তুলেছে সালাহ–মানেদের। সিটির সমান ৮৩ পয়েন্ট পেলেও গোল পার্থক্যে শীর্ষে লিভারপুল। কিন্তু সিটি একটি ম্যাচ কম খেলেছে। আগামীকাল নিউক্যাসলকে হারালে তো ৩ পয়েন্টে এগিয়ে যাবে পেপ গার্দিওলার দল।

আর এই ম্যাচ থেকে ১ পয়েন্ট পেয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল ৩৫ ম্যাচে ৬২ পাওয়া টটেনহাম। চতুর্থ স্থানের আর্সেনালের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলেও আপাতত ১ পয়েন্টে পিছিয়ে আছে দলটি।

ম্যাচের প্রথম গোলটি পুরো ম্যাচেই আধিপত্য দেখানো লিভারপুলের নয়, টটেনহামের। ৫৬ মিনিটে সন হিয়ুং–মিনের গোল পিছিয়ে পড়া লিভারপুল ১ পয়েন্ট পেয়েছে লুইস দিয়াজের সৌজন্যে।

লিভারপুলকে সমতা এনে দেওয়ার পর লুইস দিয়াজ
ছবি: রয়টার্স

চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই ছন্নছাড়া লিভারপুলকে বদলে দিয়েছিলেন দিয়াজ। কলম্বিয়ান সেই উইঙ্গারই আজও ত্রাতা হলেন দলের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই খেলার ধারার বিপরীতে গোল খেয়ে বসা লিভারপুল সমতায় ফেরে দিয়াজের গোলে।

ম্যাচের বয়স তখন ৭৪ মিনিট। শিরোপা দৌড়ে পিছিয়ে পড়ার শঙ্কায় পেয়ে বসলেও খেই না হারানো লিভারপুল আলগা করেনি চাপ। সেই চাপের ফসলই গোলটি। পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে গোল লক্ষ্য করে শট নিয়েছিলেন দিয়াজ, সেই শট টটেনহাম মিডফিল্ডার রদ্রিগো বেনতাঙ্কুরের পায়ে লেগে দিক বদলে ঢুকে যায় জালে। বেনতাঙ্কুরের পায়ে না লাগলে হয়তো লরিস একটু চেষ্টা করতে পারতেন গোল বাঁচাতে।

আরও পড়ুন

বাকি সময়ের পুরোটাই টটেনহামকে চাপে রেখেও গোল পায়নি লিভারপুল। নির্ধারিত সময়ের একদম শেষ মুহূর্তে মোহাম্মদ সালাহর শট সানচেজের পায়ে লেগে ক্রসবারের ওপর দিয়ে না গেলে লিভারপুল হয়তো পুরো ৩ পয়েন্টই পেতে পারত।

সন হিয়ুং–মিনের গোলে এগিয়ে যায় টটেনহাম
ছবি: রয়টার্স

এর আগে টটেনহামের রক্ষণকে আক্রমণের পর আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত রাখা লিভারপুল আচমকাই গোল খেয়ে বসে ৫৬ মিনিটে। টটেনহাম গোলরক্ষক হুগো লরিস লম্বা পাস মাঝমাঠে খুঁজে নেয় হ্যারি কেইনকে। কোনোরকম বাধা ছাড়াই এগিয়ে যাওয়া ইংলিশ স্ট্রাইকারের পাস বাঁ প্রান্তে পেয়ে যায় রায়ান সেসেগননকে। ২১ বছর বয়সী উইঙ্গার ধীরে–সুস্থে পাস বাড়িয়ে দেন ডান পাশ থেকে এগিয়ে আসা সন হিউং–মিনকে। খুব কাছ থেকে গোল করতে ভুল করেননি দক্ষিণ কোরিয়ান উইঙ্গার।

এর আগে গোলশূন্য প্রথমার্ধে আধিপত্য ছিল লিভারপুলের। স্বাগতিকেরা এগিয়ে যেতে পারত ৩৯ মিনিটেই। ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার–আরনল্ডের কর্নার থেকে ভার্জিল ফন ডাইকের হেড ক্রসবার ছুঁয়ে চলে যায় বাইরে। চার মিনিট পর পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া লুইস দিয়াজের শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় বাঁচিয়ে দেন টটেনহাম গোলরক্ষক হুগো লরিস।

পাল্টা আক্রমণে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল টটেনহামও। পিয়ের–এমিল হইবিয়া বক্সের অনেক বাইরে থেকে শট নিয়েছিলেন, গড়ানো সেই শট বাঁ পোস্ট কাঁপিয়ে বাইরে চলে যায়।