লিভারপুলের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকেও খিদে মেটেনি তাঁর

ওয়াটকিনস কাল লিভারপুলকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছেন।ছবি: রয়টার্স

প্রিমিয়ার লিগে এর আগে কখনো খেলেননি। ২৪ বছর হয়ে যাওয়ার পরও ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাঁর পা পড়েনি, তাঁর জন্য খরচ ৩ কোটি ইউরো! অ্যাস্টন ভিলা যখন এ গ্রীষ্মের দলবদলে ওলি ওয়াটকিনসকে কিনেছিল, তখন এ দলবদলের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলে খুব বেশি আপত্তি উঠত না।

কিন্তু ব্রেন্টফোর্ডের হয়ে ২৫ গোল করা চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা খেলোয়াড়কে নিয়ে নিশ্চিন্ত ছিলেন কোচ ভিলা কোচ ডিন স্মিথ। প্রথম দুই ম্যাচে কোনো গোল নেই, সতীর্থদের দিয়েও করাতে পারেননি কোনো গোল। খেলেছেন পুরো ১৮০ মিনিট। তাই খিদে পেকে উঠেছিল বেশ। সেটি মেটাতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন লিভারপুল গোলরক্ষক আদ্রিয়ান।

ক্লপের দলের সব দুর্বলতা দেখিয়ে দিয়েছে অ্যাস্টন ভিলা।
ছবি: রয়টার্স

চার মিনিটেই প্রিমিয়ার লিগে নিজের প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যান। ৩৯ মিনিটেই পূর্ণ করেন হ্যাটট্রিক। কিন্তু খিদে পুরোপুরি মেটেনি তাঁর। কাল যত সুযোগ পেয়েছেন গোলের, ওয়াটকিনসের ধারণা তার সবই কাজে লাগানো উচিত ছিল।

ক্রসবার বাধা হয়ে না উঠলে চার নম্বর গোলটাও পেয়ে যেতেন ওয়াটকিনস। লিভারপুল গোলরক্ষকও একবার গোলবঞ্চিত করেছেন তাঁকে। তবু শেষ পর্যন্ত ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের ৭-২ গোলে হারিয়ে থেমেছে অ্যাস্টন ভিলা। গত এক দশকে এই প্রথম কেউ প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করল।

সর্বশেষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড জার্সিতে দিমিতার বেরবাতোভের ছিল এ কীর্তি। এমন বিরল অর্জনের পরও তৃপ্ত নন এই স্ট্রাইকার, ‘ম্যাচের আগে আমি চিন্তাও করিনি তিন গোল করতে পারব। কিন্তু প্রথম গোলের পর একটু আত্মবিশ্বাস পেয়েছি এবং ধীরে ধীরে ম্যাচটা আয়ত্তে এসেছে।’

নিজেকে স্ট্রাইকারের চেয়ে নম্বর টেন হিসেবেই ভাবা এই ফরোয়ার্ড এখন আক্ষেপে পুড়ছেন কেন আরও কিছু গোল হলো না তাঁর, ‘আমি সুযোগ পেয়েছি এবং আমার আরও কিছু গোল পাওয়া উচিত ছিল। আমি জানি না এর মধ্যে একটা অফসাইডে ছিলাম কি না, তবে গোলরক্ষককে একা পেয়ে আমার সে গোলটা করা উচিত ছিল। তবে আপনি সব সময় উন্নতি করতে পারবেন এবং আমি ভবিষ্যতে এমন ক্ষেত্রে গোল করতে পারব।’

কালকের ম্যাচ হতবাক করে দিয়েছে সবাইকে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ও দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিভারপুলকে ৭ গোল দেওয়া তো চাইলেই সম্ভব নয়। তবে ম্যাচের ব্যাখ্যায় লিভারপুলের দুর্বলতা খুঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ওয়াটকিনস, ‘ওরা কত ওপরে উঠে খেলে সেটা খেয়াল করেছি আমরা। আমাদের পরিকল্পনা ছিল ওদের (লিভারপুল রক্ষণের) পেছনে যাওয়া। দেখতেই পাচ্ছেন, এটা কাজে লেগেছে।’

এত বড় ব্যবধানে জয়ে অবিশ্বাস আছে তাঁর নিজেরও, ‘আমরা নিজেদের সম্ভাবনা দেখেছি কিন্তু কখনো ভাবিনি ম্যাচের স্কোরলাইন এমন হবে। শুধু পাস দেওয়া আটকে দেওয়ার চেয়েও বেশি কিছু ছিল এটা। আমরা জানতাম কাজটা কঠিন হবে কিন্তু সবাই মিলে কাজ করেছি এবং আজ (গতকাল) রাতে সেটা দেখা গেছে।’