লেভা নিজেই নিজেকে ব্যালন ডি’অর দিতেন

চ্যাম্পিয়নস লিগের ট্রফি নিয়ে লেভানডফস্কির উচ্ছ্বাসছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকী এবার আর ব্যালন ডি’অর পুরস্কারটি দিচ্ছে না। কিন্তু পুরস্কারটি দেওয়া হলে কে পেতেন এবার? এমন প্রশ্নের উত্তরে বেশির ভাগ ফুটবল অনুসারীই হয়তো রবার্ট লেভানডফস্কির নাম বলবেন। সেটা না বললেও অসুবিধা নেই বায়ার্ন মিউনিখের পোলিশ ফরোয়ার্ডের। লেভা খুব ভালো করেই জানেন এবার ব্যালন ডি’অর দেওয়া হলে সেটা তিনিই পেতেন। অহেতুক বিনয়ের ধার ধারেননি, বলেছেন—এবারের ব্যালন ডি’অর আমি আমাকেই দিতাম!

বুন্দেসলিগা, জার্মান কাপ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ—বায়ার্নকে ট্রেবল জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছেন লেভানডফস্কি। বুন্দেসলিগার মতো কাপ আর চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনিই। বলতে গেলে সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমটি লেভার ক্যারিয়ারের সেরা ছিল। বায়ার্নের হয়ে ৪৭ ম্যাচ খেলে এ মৌসুমে তিনি ৫৫ গোল করেছেন। বিশেষ করে উল্লেখ করা যায় চ্যাম্পিয়নস লিগে গোল করার বিষয়টি। ফাইনাল ছাড়া প্রতিটি ম্যাচেই গোল করেছেন লেভা।

এক মৌসুমে এত অর্জনের পরও ব্যালন ডি’অর জেতা হচ্ছে না পোলিশ ফরোয়ার্ডের। এ নিয়ে হয়তো আফসোস হচ্ছে তাঁর। এ কারণেই হয়তো বলেছেন, ‘এক মৌসুমে যা জেতা যায় তার সবই আমরা জিতেছি। সব প্রতিযোগিতারই সর্বোচ্চ গোলদাতা আমি। আমি মনে করি একজন খেলোয়াড় এত কিছু অর্জন করার পর তার ব্যালন ডি’অর জেতা উচিত।’

সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে উচ্ছ্বসিত লেভানডফস্কি কথা বলেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্নের সাফল্য নিয়েও। কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনাকে ৮-২ গোলে উড়িয়ে দেওয়া, এরপর সেমিফাইনালে অলিম্পিক লিওঁর বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়—এ সবের জন্য পুরো দলকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন লেভা, ‘ফিলিপে কুতিনহো ও ইভান পেরিসিচ যদি ৮০ মিনিটে বদলি হিসেবে নামে তাহলে আমাদের প্রতিপক্ষদের টের পাওয়ার কথা কী হচ্ছে মাঠে। তারা বুঝতে পেরেছে আমরা চাপ দেওয়া থামাব না। আর এটা প্রতিপক্ষকে অসহায় বানিয়ে দেয়।’

ম্যাচের আগেই আমরা জানতাম বার্সাকে হারাব। কেউ কেউ তো বলছিল ৫-১ গোলেও জিততে পারি আমরা।
রবার্ট লেভানডফস্কি, বায়ার্ন ফরোয়ার্ড
বায়ার্নের অনুশীলনে বল নিয়ে রবার্ট লেভানডফস্কির কারিকুরি।
ছবি: রয়টার্স

বার্সেলোনা ও লিওঁর বিপক্ষে বড় জয় আর চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা ঘরে তোলা নিয়ে বায়ার্ন মিউনিখের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস ছিল বলে জানালেন লেভা। বার্সেলোনার বিপক্ষে ম্যাচের আগে দলের খেলোয়াড়দের মনোভাব কী ছিল তা নিয়ে লেভা বলেছেন, ‘ম্যাচের আগেই আমরা জানতাম বার্সাকে হারাব। কেউ কেউ তো বলছিল ৫-১ গোলেও জিততে পারি আমরা। কিন্তু ৮-২ গোলের জয়টা বিশেষ কিছুই। আমরা খুব আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।’

পিএসজিকে ফাইনালে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছে বায়ার্ন। কিন্তু শিরোপা যে তারা জিতবে সেই আলোচনা কোয়ার্টার ফাইনালের আগেই করেছিলেন লেভানডফস্কিরা। কীভাবে তাও বলেছেন পোলিশ ফরোয়ার্ড, ‘বার্সার বিপক্ষে ম্যাচের আগে সার্জ নাব্রি ও ইয়োশুয়া কিমিখ আমার সঙ্গে কথা বলতে এসেছিল। ওরা কিন্তু আমাকে জিজ্ঞেস করেনি আমরা বার্সার বিপক্ষে ম্যাচটি জিতব কি না। ওরা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল আমরা চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতব কি না। এর উত্তরে আমি বলেছিলাম, অবশ্যই জিতব।’

লেভা কথা বলেছেন গত গ্রীষ্মে তাঁর প্রতি রিয়াল মাদ্রিদের আগ্রহ নিয়েও। ৩২ বছর বয়সী খেলোয়াড় বলেছেন অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনা ছাড়ার কোনো ইচ্ছাই তাঁর নেই, ‘ওই সময়টাতে বায়ার্ন মিউনিখ আমাকে সমর্থন জুগিয়েছে। অতীতে যেটার একটু অভাব ছিল। বাস্তবিক অর্থে আমি বায়ার্নের প্রকল্পে বিশ্বাস করি। ২০২৩ সালের পরও আমি সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলে যেতে চাই। এরপর কী করব তা নিয়ে এখনো ভাবিনি।’