শীর্ষস্থান খুইয়ে ক্লপকে একহাত নিলেন মরিনিও

রবার্তো ফিরমিনোর দুর্দান্ত এক হেড জিতিয়েছে লিভারপুলকে।ছবি: রয়টার্স

রবার্তো ফিরমিনোর ৯০ মিনিটের গোল জিতিয়েছে লিভারপুলকে। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দলের লড়াইয়ে টটেনহামকে ২-১ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও উঠে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। শীর্ষস্থান খোয়ানোর পর চুপ থাকতে পারেননি টটেনহাম কোচ জোসে মরিনিও। ম্যাচশেষের সংবাদ সম্মেলনে প্রতিপক্ষ কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপকে একহাত নিয়েছেন ‘স্পেশাল ওয়ান’। মরিনিওর দাবি, সাইডলাইন থেকে রেফারিদের ওপর প্রভাব খাটিয়েছেন ক্লপ।

কাল রাতে অ্যানফিল্ড জমজমাট এক ম্যাচই দেখেছে। ম্যাচটি যখন ড্রর দিকে এগোচ্ছে, তখনই ফিরমিনোর ওই গোল। অ্যান্ড্রু রবার্টসনের কর্নার থেকে জোরালো এক হেডে দলকে এগিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

ম্যাচের প্রথম গোলটিও লিভারপুলের। ২৬ মিনিটে মোহাম্মদ সালাহর শট এরিক ডায়ারের পায়ে লেগে টটেনহাম গোলরক্ষক হুগো লরিসের মাথার ওপর দিয়ে ঢুকে যায় জালে। ৭ মিনিট পর কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল করে সমতা ফেরান হিয়ুং-মিন সন। দ্বিতীয়ার্ধে এগিয়ে যাওয়ারও সুযোগ পেয়েছিল সফরকারীরা। সুযোগ নষ্ট করেন স্টিভেন বের্গভেইন ও হ্যারি কেইন।

টাচলাইন থেকে ম্যাচ অফিশিয়ালদের ওই লোক (ক্লপ) যে চাপে রেখেছিল, তাতে আমাদের সমস্যা হয়েছে।
জোসে মরিনিও, টটেনহাম কোচ
ম্যাচ শেষে ইয়ুর্গেন ক্লপ ও জোসে মরিনিও (ডানে)।
ছবি: রয়টার্স

তবে গোলের সুযোগ নষ্ট হওয়ার চেয়ে ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষের কোচের আচরণ নিয়েই বেশি কথা বললেন মরিনিও। টটেনহাম কোচের দাবি, ক্লপের কারণেই নাকি বাধ্য হয়ে জিওভানি লো সেলসোকে তুলে নিয়েছেন তিনি, ‘পাল্টা–আক্রমণের সুযোগ খুঁজছিলাম। আমরা তা করেও দেখিয়েছি। তবে (লে সেলসো) ওই হলুদ কার্ড ও টাচলাইন থেকে ম্যাচ অফিশিয়ালদের ওই লোক যে চাপে রেখেছিল, তাতে আমাদের সমস্যা হয়েছে। আমি তো ভয়ে ছিলাম রেফারি না আরেকবার হলুদ কার্ড দেখিয়ে দেয়। তাই ওকে (সেলসো) তুলে নিতে বাধ্য হই।’

ম্যাচের ফলে অসন্তুষ্টির কথাই জানালেন মরিনিও, ‘আমরা জেতার জন্য খেলি, আমরা এক পয়েন্ট পেতে খেলি না। (তবে) একটা পয়েন্ট পেলেই সেটিই ন্যায্য হতো। খেলাটা আমাদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। আমি মনে করি, খুবই অগ্রহণযোগ্য ফল এটি। কিন্তু কী করা, এটিই ফুটবল।’

লিভারপুল কোচ ক্লপ প্রশংসায় ভাসিয়েছেন খেলোয়াড়দের, ‘দানবীয় পাল্টা–আক্রমণের বিপক্ষে ভালো ম্যাচ খেললাম। আমাদের যা বলের দখল ছিল, তাতে বলব, খুবই ভালো খেলেছি আমরা। এটা ঠিক তারা (টটেনহাম) একটি গোল করেছে, আরও দুটি সুযোগ পেয়েছে। ওগুলো ছাড়া ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তো আমাদের হাতেই ছিল। এই ৩ পয়েন্ট আমাদের প্রাপ্য ছিল, তাই আমি খুশি।’

প্রথম গোলের পর মোহাম্মদ সালাহকে নিয়ে সতীর্থদের উল্লাস।
ছবি: রয়টার্স

টটেনহামের একমাত্র গোলটি নিয়ে অবশ্য আপত্তি আছে ক্লপের। লিভারপুল কোচ মনে করেন অফসাইড ছিল ওটি, ‘আমার কাছে এটি অফসাইড। তারা (ভিএআর) ২০ বার দেখেছে ওটা, তবে আমি তো দেখলাম অফসাইড। কাউকে অবশ্য দোষ দেওয়ার কিছু নেই।’

ম্যাচ শেষ হতেই মরিনিওর সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন ক্লপ। সেই সময়ে ক্লপকে কিছু একটা বলেন টটেনহাম কোচ। কী বলেছিলেন মরিনিও, সেটিও বলেছেন ক্লপ, ‘জোসে আমাকে বলল, “ভালো খেলা দলটি হেরেছে।” আমি ভাবলাম সে মজা করছে, কিন্তু সে মজা করছিল না।’

কাল রাতের এই জয়ে ১৩ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট হলো লিভারপুলের। সমান ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে টটেনহাম। ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আর্সেনালের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করা সাউদাম্পটন।

আগামী শনিবার ক্রিস্টাল প্যালেসের সঙ্গে খেলতে লন্ডনে যাবে লিভারপুল। পরের দিন টটেনহাম ঘরের মাঠে আতিথেয়তা দেবে লেস্টার সিটিকে।