শেষকৃত্যের সময় রসির বাড়িতে চুরি

পাওলো রসির কফিন নিয়ে যাচ্ছেন বিশ্বকাপজয়ী সতীর্থরা।ছবি: রয়টার্স

ইতালিয়ানদের কাঁদিয়ে গত বৃহস্পতিবার পৃথিবী ছেড়েছেন পাওলো রসি। ১৯৮২ বিশ্বকাপের নায়কের শেষকৃত্যও সম্পন্ন হয়ে গেছে গতকাল। ইতালির উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় শহর ভিচেনৎসার এক গির্জায় হয়েছে শেষকৃত্য অনুষ্ঠান। পরিবার ও বন্ধুবান্ধব সবাই  যখন শেষকৃত্য নিয়ে ব্যস্ত, সেই সময়ে চুরি হয়েছে রসির বাড়িতে। ইতালির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে এই খবর।

শেষকৃত্য ভিচেনৎসায় হলেও রসির বাড়ি তুসকানি অঞ্চলে। ফ্লোরেন্সের কাছে বিশাল এক ফার্মহাউসে থাকতেন রসিরা। সেখানে রসির পরিবার একটি অর্গানিক ফার্মিং কোম্পানি চালান। চুরি হয়েছে সেই বাড়িতেই। আনসা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, প্রয়াত রসির স্ত্রী ফেদেরিকা কাপেলেত্তি ভিচেনৎসা থেকে ফিরে দেখেন লন্ডভন্ড হয়ে আছে বাড়িঘর। চোরের দল রসির একটি দামি ঘড়ি ও কিছু টাকাসহ আরও অনেক কিছু নিয়ে গেছে। স্থানীয় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

একই ফ্রেমে প্রয়াত দুই ফুটবল মহানায়ক—ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও পাওলো রসি। ২০১৭ সালে ইতালির ফুটবল হল অব ফেম অনুষ্ঠানে।
ছবি: রয়টার্স

১৯৮২ বিশ্বকাপে ৬ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার পাশাপাশি সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছিলেন রসি। ইতালির জার্সিতে ৪৮ ম্যাচে ২০ গোল করা স্ট্রাইকার জুভেন্টাস ও এসি মিলানের মতো ক্লাবে খেলেছেন। তবে ১৯৭৫ সালে পেশাদার ক্যারিয়ারে প্রথম ম্যাচ খেলা রসি সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন ভিচেনৎসা ক্লাবের হয়ে। ১৯৭৬–৭৭ মৌসুমে ভিচেনৎসাকে সিরি 'বি'তে চ্যাম্পিয়ন করে সিরি 'আ' তুলে আনেন রসি।

ওই মৌসুমে ৩৬ ম্যাচে ২১ গোল করে সিরি 'বি'তে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন রসি। সিরি 'আ'তে উঠেও গোলের ধারা শুকায়নি। পরের মৌসুমেই ইতালির শীর্ষ লিগে ৩০ ম্যাচে ২৪ গোল করে হয়েছেন সর্বোচ্চ গোলদাতা। জুভেন্টাসের পেছনে থেকে রানার্সআপ হয়েছিল রসির ভিচেনৎসা। ইতালির ফুটবল ইতিহাসে রসির আগে টানা দুই মৌসুম সিরি 'বি' ও সিরি 'আ'তে সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে পারেননি অন্য কেউ।

রসিকে শেষ বিদায় জানাতে ভিচেনৎসা ক্যাথেড্রালের কাছে জড়ো হয়েছিলেন ভক্তরা।
ছবি: রয়টার্স

পরশু শেষযাত্রায় রসির কফিন বয়ে নিয়েছেন রসির ১৯৮২ বিশ্বকাপের সতীর্থরা। সেখানে ছিলেন মার্কো তারদেল্লি, আন্তোনিও কাবরিনি, জিয়ানকার্লো আন্তোনিওনি, আলেসান্দ্রো আলতোবেল্লি, ফ্রাঙ্কো কাউসো, ফুলভো চোল্লাভাতি ও জিউসেপ্পে বার্গোমি। ইতালির রাই টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করেছে শেষকৃত্য অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে রসিকে শেষ বিদায় জানাতে কয়েক হাজার সাধারণ ফুটবল–ভক্তও উপস্থিত ছিলেন। শেষকৃত্যের আগে রসির কফিন ভিচেনৎসার রোমেও মেন্তি স্টেডিয়ামের রাখা হয়েছিল শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে। গতকাল ইতালির সব ফুটবল ম্যাচে কালো বাহুবন্ধনী পরেই মাঠে নেমেছিলেন ফুটবলাররা। ম্যাচ শুরুর আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আর স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় রসির ছবি দেখানো হয়, যেখানে লেখা ছিল 'বীরেরা কখনো মরে না' ও 'বিদায় পাওলো' কথাগুলো।