সর্বনাশে যাঁরা পাশে ছিলেন, পৌষ মাসেও বুকে জায়গা তাঁদের

ফাইনালে ওঠার পর আবেগে কেঁদে ফেলেন রোমা কোচ মরিনিওছবি: রয়টার্স

সমর্থক হলে এমনই হতে হয়। আর ক্লাবের কাছ থেকেও এমনই প্রত্যাশা থাকে সমর্থককুলের। ক্লাব ও সমর্থকের মধ্যে সম্পর্ক তো রবীন্দ্রসংগীতের সেই বাণীর মতোই হওয়া উচিত—‘আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ...।’

ইতালিয়ান ক্লাব এএস রোমার সঙ্গে সেই ১৬৬ সমর্থকের সম্পর্কটা নিশ্চয়ই এমন। নরওয়েতে রোমার সেই সর্বনাশের দিনে এই সমর্থকেরা যেমন পাশে ছিলেন, তেমনি ২৫ মে আলবেনিয়ার তিরানায় ক্লাবটির ‘পৌষ মাসে’ও গলা ফাটাবেন গ্যালারিতে।

রোমাই সে সুবিধা করে দিয়েছে। ইউরোপা কনফারেন্স লিগের ফাইনালে সেই ১৬৬ সমর্থককে ফ্রি টিকিট দেবে ইতালিয়ান ক্লাবটি।

ঘটনাটা গত অক্টোবরের। ইউরোপা কনফারেন্স লিগে ‘সি’ গ্রুপে পড়েছিল রোমা ও নরওয়ের ক্লাব এফকে বোদো/গ্লিম। ২১ অক্টোবর বোদো/গ্লিমের মাঠে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত হয় রোমা। সে ম্যাচে ইতালি থেকে প্রায় ৩ হাজার ৭৩৭ কিলোমিটার দূরের বোদোর মাঠে ছিলেন রোমার ১৬৬ সমর্থক। প্রত্যাশামতো ফল না পেলেও সে সমর্থকদের ভালোবাসা মনে রেখেছে রোমা।

পরে কোয়ার্টার ফাইনালেও আবার বোদোর মুখোমুখি হয় রোমা, তবে এবার জোসে মরিনিওর দল দুই লেগ মিলিয়ে ৫-২ গোলে হারিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার পাশাপাশি সেমিফাইনালেও ওঠে। সেমিফাইনালে লেস্টার সিটিকে দুই লেগ মিলিয়ে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে রোমা। দল ফাইনালে ওঠার পর কেঁদেছেন স্বয়ং রোমা কোচ জোসে মরিনিও। আর রোমা ভেতরে-ভেতরে যে কাজ করেছে, সেটি প্রশংসার দাবিদার।

নরওয়েতে যাওয়া সমর্থকদের টিকিটের নিশ্চয়তা দিয়েছে রোমা
ছবি: রয়টার্স

কনফারেন্স লিগ ফাইনালের জন্য নিজেরা যেসব টিকিট পেয়েছে, তার মধ্যে ১৬৬ টিকিট ফ্রি দিয়েছে অক্টোবরে গ্লিমের মাঠে রোমাকে সমর্থন দিয়ে যাওয়া সেসব সমর্থককে। কঠিন দিনে পাশে থাকায় ধন্যবাদ হিসেবেই দেখতে পারেন এটিকে। ওই ১৬৬ টিকিটের বাইরে বাকি টিকিটগুলো লটারিতে ভাগ করে দেওয়া হবে, যাঁরা পুরো মৌসুমের টিকিট কিনেছেন তাঁদের মধ্যে।

ক্লাবের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আসপামেরা স্টেডিয়ামে (বোদোর মাঠ) যাঁরা ছিলেন, ক্লাব তাঁদের পুরস্কৃত করবে। এসব সমর্থকের জন্য টিকিটের নিশ্চয়তা দিচ্ছে ক্লাব। টিকিট বিক্রির প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করে সেদিন মাঠে থাকা সমর্থকের নাম-ঠিকানা বের করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন দিয়েছে বোদো/গ্লিম।’

তিরানায় কনফারেন্স লিগ ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের ক্লাব ফেইনুর্ডের মুখোমুখি হবে রোমা। ৩১ বছর পর ইউরোপিয়ান কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে রোমের ক্লাবটি। সর্বশেষ ১৯৯১ সালে উয়েফা কাপের (বর্তমান ইউরোপা লিগ) ফাইনাল খেলেছিল রোমা, দুই লেগের সে লড়াইয়ে ইন্টার মিলানের কাছে ২-১ ব্যবধানে হারে তারা। এবার কনফারেন্স লিগের ফাইনালে ফেইনুর্ডকে হারাতে পারলে ১৪ বছরের মধ্যে প্রথম ট্রফি জয়ের স্বাদ পাবে রোমা।