সাংবাদিককে সেই চুমুর রেশ কেটেছে ক্যাসিয়াসের?

২০১০ বিশ্বকাপে বান্ধবী কারবোনেরোকে ক্যাসিয়াসের সেই বিখ্যাত চুমুটুইটার

২০১০ বিশ্বকাপ ফাইনালে শেষ বাঁজি বাজার পর ভীষণ আবেগাপ্লুত ছিলেন ইকার ক্যাসিয়াস। কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না স্পেন অধিনায়ক। এদিকে কথা বলতেই হবে সংবাদমাধ্যমে। ক্যাসিয়াসের সাক্ষাৎকার নিতে গেলেন স্পেনের টেলেসিনসো টিভির প্রতিবেদক সারা কারবোনেরো। পেশাদার সংবাদকর্মী হয়েও গুছিয়ে প্রশ্ন করতে পারছিলেন না তিনি। এভাবে খানিকক্ষণ চলার পর গোলরক্ষকের খোলস ভেঙে বেরিয়ে আসেন প্রেমিক ক্যাসিয়াস। অবতারণা ঘটে সেই বিশ্বকাপের অন্যতম ভালোবাসামাখা আবেগঘন মুহূর্তের—কারবোনেরোকে জড়িয়ে ধরে তাঁর ঠোঁটে চুমু এঁকে দেন ক্যাসিয়াস।

ইকার ক্যাসিয়াস ও সারা কারবোনেরো
টুইটার


মানুষের কৌতূহলের ঢাকে কাঠি পড়ে এরপরই। কে এই কারবোনেরো? স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম যেন কথাটা বিশ্ববাসীকে জানাতে মুখিয়ে ছিল। তারা জানিয়ে দেয়, দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের আগের বছর থেকেই এই সংবাদকর্মীর সঙ্গে মন দেওয়া-নেওয়া চলছে স্পেন অধিনায়কের। তখন একটি বিতর্কও উঠেছিল। গ্রুপ পর্বে সুইজারল্যান্ডের কাছে স্পেনের হারের কারণ হিসেবে কারবোনেরোর ওপর দোষের বোঝা চাপিয়েছিল বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম। বলা হয়, স্পেনের গোলপোস্ট থেকে মাত্র ৬০ ফুট দূরত্বে দাঁড়িয়ে ছিলেন কারবোনেরো। এতে খেলায় ক্যাসিয়াসের নাকি মনঃসংযোগে বিঘ্ন ঘটেছে।

সে যা–ই হোক, প্রেমের প্রতি দুজনের মনঃসংযোগে তখন কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি। বিয়েও করেছিলেন স্পেনের অন্যতম আলোচিত এ জুটি। ঘরে সন্তানও আছে। কিন্তু ওই যে জীবনানন্দ দাশের কবিতার পঙ্‌ক্তি, ‘প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়’—কথাটা সম্ভবত নির্মম সত্য হয়ে দেখা দিয়েছে ক্যাসিয়াস-কারবোনেরোর ঘরে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দুজনের সম্ভবত বিচ্ছেদ ঘটেছে। ‘সম্ভবত’ কথাটা বলতে হচ্ছে, কারণ, কিছু সংবাদমাধ্যম আবার দাবি করেছে, ঘর ভাঙেনি ক্যাসিয়াস-কারবোনেরোর।

স্প্যানিশ একটি সাময়ীকির প্রচ্ছদে ইকার ক্যাসিয়াস ও সারা কারবোনেরোর বিচ্ছেদের খবর
টুইটার


স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এল মুন্দো জানিয়েছে, ক্যাসিয়াস-কারবোনেরোর ঘর ভাঙার খবর প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা পর তা অস্বীকার করা হয়। স্পেনে নারীদের সাময়িকী ‘লেকচারস’–এর দাবি অবশ্য এর উল্টো—এই দম্পতির মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটেছে এবং দুজনের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব তা আগে থেকেই জানেন। ক্যাসিয়াস নাকি আলাদা একটি বাসায় থাকছেন। সেটা অবশ্য কারবোনেরো তাঁর সন্তানদের নিয়ে যে বাসায় থাকছেন, সেখান থেকে বেশি দূরে নয়। এদিকে আরেক সাময়িকী ‘হ্যালো!’র দাবি বিচ্ছেদ ঘটেনি, ‘সারা কারবোনেরো ও ইকার ক্যাসিয়াস একসঙ্গেই থাকছেন এবং তাঁদের বিচ্ছেদ ঘটেনি।’


তবে এল মুন্দো জানিয়েছে, ক্যাসিয়াস-কারবোনেরোর সম্পর্কচ্ছেদ নিয়ে অনেক দিন ধরেই স্পেনের বাতাসে গুজব ভাসছে। স্পেনের সাবেক গোলরক্ষক পোর্তোয় খেলার সময় সেখানে পাঁচ বছর ছিলেন কারবোনেরোর সঙ্গে। সেখানে মধুর সময় কেটেছে দুজনের। এ সময় স্বাস্থ্যগত ধকলও গেছে দুজনের। রিয়াল মাদ্রিদের কিংবদন্তি গোলরক্ষক ক্যাসিয়াস হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন। আর জরায়ু ক্যানসার ধরা পড়ে কারবোনেরোর শরীরে। এ সময় ক্যাসিয়াস খুব বেশি দেখাশোনা করতে পারেননি তাঁর স্ত্রীর। ওদিকে কারবোনেরো সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে কয়েক মাস দেখাশোনার জন্য তাঁর বোনকে ধন্যবাদ দেন, কিন্তু ক্যাসিয়াসের কথা এড়িয়ে যান। এরপরই সন্দেহের দাবানল ছড়িয়ে পড়ে সবার মধ্যে—ঘর ভেঙেছে!

ইকার ক্যাসিয়াস ও সারা কারবোনেরো
টুইটার

গত বছরের মাঝামাঝিতে স্পেনে ফিরে এই দম্পতি সম্পর্কের ১০ বছর পূর্তি উদযাপন করেন। যদিও দুজনের বিয়ে হয় ২০১৬ সালে। গত ফেব্রুয়ারিতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় আবারও হাসপাতালে ভর্তি হন কারবোনেরো। তখন ক্যাসিয়াস নিয়মিত তাঁকে দেখতে যান এবং দুজনে এক গাড়িতে হাসপাতাল ছেড়েছিলেন বলে জানিয়েছে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম। যদিও এই ঘটনা নিয়ে ‘লেকচারস’ দাবি করে, ওই সময় দুজনে হাসপাতাল ছেড়ে একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। এরপর আলাদা হয়ে যে যাঁর পথ ধরেন।