সাফ জেতাই বড় চ্যালেঞ্জ

ভয়–আতঙ্ক, দুঃখ–বেদনার ২০২০ সাল শেষ। নতুন দিনের স্বপ্ন নিয়ে আজ উঠেছে নতুন সূর্য। ২০২০ যদি হয় পৃথিবীকে থমকে দেওয়ার বছর, ২০২১ সাল হবে নতুন সম্ভাবনার। করোনাকে হারাতে সারা বিশ্ব যেমন তাকিয়ে টিকার দিকে, ক্রীড়াঙ্গনও অপেক্ষায় স্বাভাবিক পরিবেশের। খেলা ফিরবে মাঠে, গ্যালারিতে ফিরবে দর্শকদের উন্মাদনা। ২০২১ সালে নিজেদের প্রত্যাশা নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের তারকারা

জামাল ভূঁইয়া

নতুন বছরে দরজায় উঁকি দিচ্ছে নতুন সম্ভাবনা। আমাদের কাজ সেটিকে মাঠের পারফরম্যান্সে অনুদিত করা।

এ বছর বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে তিনটি ম্যাচ আছে আমাদের। আফগানিস্তান, ভারত ও ওমানের বিপক্ষে ম্যাচগুলো ঘরের মাঠে। এটাই মূলত আমাকে আশাবাদী করছে। ওমানের বিপক্ষে জেতা অনেক কঠিন। আমরা যেটা করতে পারি, ভারত ও আফগানিস্তান ম্যাচ দুটোকে লক্ষ্য বানিয়ে এগোতে পারি।

গ্রুপিং হওয়ার সময়ই আমি এ দুটি ম্যাচ নিয়ে আশার কথা বলেছিলাম। আমার বিশ্বাস, দেশের মাটিতে খেলার সুবিধা কাজে লাগিয়ে ম্যাচ দুটি জেতা সম্ভব। সবচেয়ে ভালো হয় ছয় পয়েন্ট পেলে। যদি তা নাও হয়, দুই ম্যাচ থেকে অন্তত ৪ পয়েন্ট চাই। কথা দিতে পারি আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টাই করব। নতুন বছরে এটা আমাদের বড় এক চ্যালেঞ্জও।

তবে ২০২১ সাল এর চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে, যার নাম সাফ ফুটবল। কোভিড-১৯-এর কারণে টুর্নামেন্টটি এক বছর পিছিয়ে আগামী সেপ্টেম্বরে হওয়ার কথা ঢাকায়। আমি ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশ দলে খেলছি। টানা চারটি সাফের গ্রুপ থেকে আমাদের বিদায় হতাশাজনক। ২০১৯ সালে ঘরের মাঠে আমরা সাফের প্রথম দুটি ম্যাচ জিতেও গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারিনি। নেপালের কাছে হেরে সর্বনাশ হয়েছে।

ভুল শুধরে নতুন বছরে সাফই আমাদের বড় লক্ষ্য। সাফ জেতা এখন অনেক কঠিন জানি। ভারত, আফগানিস্তান শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। তবে আমরা নিজেদের প্রস্তুত করব। টুর্নামেন্টে আমাদের চ্যাম্পিয়ন হতেই হবে। সেই সম্ভাবনাও দেখছি আমি।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৪ ডিসেম্বর কাতারের সঙ্গে ম্যাচ শেষে কয়েক দিন দোহায় ছিলাম। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেখানে আইসোলেশনে থাকতে হলো। যাই হোক, সবার শুভকামনায় করোনা নেগেটিভ হয়ে ২৪ ডিসেম্বর কলকাতা এসেছি। ভিন দেশের লিগে খেলব, আমার লক্ষ্য থাকবে কলকাতা মোহামেডানের হয়ে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া। অবশ্যই খুব ভালো খেলতে হবে আমাকে। নতুন বছরে ভারতের ফুটবলে বাংলাদেশের দূত হব আমি।

সাইফ থেকে ধারে এসেছি কলকাতা মোহামেডানে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় পর্বে সাইফ স্পোর্টিংয়ের জার্সিতে আমার খেলার কথা। চেষ্টা থাকবে মাঠে ভালো খেলে সবার মন জয় করা। দেশে এখন ফেডারেশন কাপ চলছে। ১৩ জানুয়ারি প্রিমিয়ার লিগ শুরু। শুভকামনা রাখছি সব দলের জন্য। সতীর্থদের কাছে চাইব সবাই যেন ভালো খেলে। ২০২১ সালে আরেকটি চাওয়া আমার—জাতীয় দলের ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি।

র‌্যাঙ্কিং নিয়ে আমাদের প্রায়শই কথা শুনতে হয়। গত বছর বাংলাদেশের ফিফা র‌্যাঙ্কিং ছিল ১৮৭, এখন ১৮৬। আমরা যেন র‍্যাঙ্কিংয়ে সামনে এগোতে পারি, সম্মিলিতভাবে সেই চেষ্টায় ত্রুটি রাখা যাবে না।

২০২১–এর ফিফা উইন্ডোগুলোয় বেশি বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ চাইব বাফুফের কাছে। দেশে নিচের দিকের লিগগুলোও নিয়মিত দরকার। শুনেছি বাফুফে একটা জিম করবে। নতুন বছরে যা আমাদের জন্য সুখবর। দেশের ফুটবলে অবকাঠামো উন্নয়নে এমন সুখবর বছরব্যাপীই শোনার অপেক্ষায় থাকব।