সাফে চমক দেবে বাংলাদেশ, বিশ্বাস এলিটা কিংসলির

বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে আজ কোচ ব্রুজোন (বাঁয়ে) ও কিংসলি (মাঝে)ছবি: শামসুল হক

দেশে ভালো স্ট্রাইকার তৈরি হচ্ছে না। তাই আন্তর্জাতিক ফুটবল শুরুর আগে বাংলাদেশের বড় দুশ্চিন্তার নাম স্ট্রাইকার সংকট। আগামী ১ থেকে ১৬ অক্টোবর মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে অনুষ্ঠেয় সাফ ফুটবল সামনে রেখেও সেই দুশ্চিন্তা দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ দলের হয়ে গোল করবেন কে? এই প্রশ্নও বড় হয়ে উঠছে।

বিকল্প সমাধান হতে পারেন গত মার্চে নাইজেরিয়ার নাগরিকত্ব ছেড়ে বাংলাদেশি হয়ে যাওয়া এলিটা কিংসলি। কিন্তু কিংসলি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার ছাড়পত্র পাবেন কি না নিশ্চিত নয়। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সিদ্ধান্তের ওপর ঝুলে আছে ‘দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপে’ তাঁর খেলা না খেলা। তবে আজ বঙ্গবন্ধু স্টডিয়ামে শুরু হওয়া জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন এই স্ট্রাইকার।

যেকোনো ফুটবলারের কাছেই জাতীয় দলের জার্সি পরা দারুণ এক ব্যাপার। কিংসলির কাছে আরও বেশি। আজ বিকেল অনুশীলন শেষে  সন্ধ্যার আবছা আলোতে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, ‘এ এক অন্য রকম আনন্দ। আমি সত্যিই গর্বিত। তবে আমি আবেগে ভেসে যাচ্ছি না। কারণ, খেলার ওপরই মনোযোগ রাখছি বেশি।’

ব্রুজোনের অধীনে আজ প্রথমবার অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল
ছবি: প্রথম আলো

নতুন কোচ অস্কার ব্রুজোন সাফের জন্য একটি শক্তিশালী দল গড়তে চান। সেই দলের অংশ হতে পেরে খুশি কিংসলি। প্রতিশ্রুতির সুরেই বলেছেন, ‌‘সবাই মিলে ভিন্ন একটি জাতীয় দল গড়ে তোলার চেষ্টা করব আমরা। সেটাই এখন বেশি দরকার।’

তারপর যোগ করেন, ‘ক্লাবের হয়ে এর আগে আমি যা করেছি, গোটা দেশই প্রশংসা করেছে। তবে এখন আমরা সাফ সামনে রেখে জাতীয় দলকে বদলে দিতে চাই। আমরা সবাই মিলে এমন একটি জাতীয় দল গড়তে চাই, যে দলটি বাংলাদেশের মানুষকে জয়ের আনন্দ দিতে পারে। এর জন্যই আমরা কাজ করছি।’

এলিটা কিংসলি এখনো বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড়। কোচ অস্কার ব্রুজোনের অধীনে খেলা বা অনুশীলন তাঁর জন্য নতুন নয়। সেটা মনে করিয়ে দিয়ে কিংসলি বলছিলেন, ‘আমি মনে করি, কোচরা একেকজন একেক রকম। তাঁদের চিন্তাভাবনা আলাদা। আমরা যদি সেই ভিন্ন ভিন্ন চিন্তাভাবনাগুলো মাঠের পারফরম্যান্সে অনূদিত করতে পারি, তাহলে আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ দল সাফে চমক দেবে। প্রথম দিনের অনুশীলন শেষে এটাই আমার মনে হয়েছে।’

অনুশীলনে আজ কিংসলিসহ অন্যরা
ছবি: প্রথম আলো

সাফের ২৩ জনের দলে থাকা নিয়ে তাঁর কথা, ‘সাফে খেলার ব্যাপারটা আমার হাতে নেই। এই দিকটা দেখছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। আমি সাফে খেলার সুযোগ পেলে নিজেকে মেলে ধরব। কেন আমার গায়ে বাংলাদেশের জার্সি সেটার যৌক্তিতা প্রমাণ করব।’

শেষ সময়ে সাফের প্রস্তুতিতে নেমে দলীয় সমন্বয়ের দিকেই বেশি নজর নতুন কোচ অস্কার ব্রুজোনের। জাতীয় দলের সঙ্গে প্রথম দিনে অভিজ্ঞতায় তিনি বেশ খুশিই, ‘ফুটবলারদের সবার ফিটনেস মোটামুটি ঠিক আছে দেখলাম। ট্যাকটিক্যাল দিকের ওপরই এখন বেশি নজর রাখছি আমরা। আশা করি আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাব।’

নতুন কোচের অধীনে জামাল ভূঁইয়া অধিনায়ক থাকবেন কি না, সে নিয়ে তৈরি হওয়া জল্পনার ইতি টেনেছেন ব্রুজোন। জানিয়ে দিয়েছেন, মালের টুর্নামেন্টে জামালের হাতেই থাকবে বাহুবন্ধনী। কিন্তু ব্রুজোন–জামাল রসায়নটা কেমন হবে, এ নিয়ে কৌতূহল থাকছেই।

অনুশীলনে কোচ ব্রুজোন ও কিংসলি
ছবি: প্রথম আলো

জামাল আশাবাদী, ভালো কিছু অপেক্ষা করছে সামনে, ‘নতুন কোচের অধীনে আমরা সবাই চেষ্টা করব ভালো কিছু করতে। আমাদের ভালো একটা গ্রুপ আছে। আমরা সবাই সবাইকে ভালো করে জানি। অনেক দিন ধরে অধিকাংশই আমরা একসঙ্গে খেলছি। আশা করি আস্তে আস্তে আমরা নতুন কোচের সঙ্গে মানিয়ে নেব।’

পরশু সংবাদ সম্মেলনে ব্রুজোন জানিয়ে দেন, সাফে বাংলাদেশ ৪–৩–৩ বা ৪–৪–২ ছকে খেলবে। অবশ্য জেমির অধীনেও বাংলাদেশ ৪-৩-৩–এ খেলেছে। ফলে এটা নতুন কিছু নয় মনে করেন জামাল। তবে কিরগিজস্তানে জেমির অধীনে ৩-৪–৩ ছকে খেলে সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। ফলে নতুন কোচ নতুনভাবেই ছক সাজানোর কথা বলেছেন আজ প্রথম দিনের অনুশীলন শেষে।