‘সৃষ্টিকর্তার পাঠানো উপহার’ পেয়ে স্বস্তিতে জাভি

দলের পারফরম্যান্সে বেশ খুশি জাভিছবি : রয়টার্স

লিগে মাত্র ছয়টা ম্যাচ খেলা হয়েছে তাঁর। এর মধ্যেই ইয়োহান ক্রুইফ, রোনালদো নাজারিও, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ, রোমারিও, রোনাল্ড কোমান আর স্যান্দর ককসিসদের কাতারে চলে এলেন আর্সেনালের গ্যাবনিজ স্ট্রাইকার পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াং। অবামেয়াংয়ের আগে প্রথম ছয় লিগ ম্যাচে পাঁচ গোল করার কৃতিত্ব যে এদেরই ছিল!

স্ট্রাইকার নেই স্ট্রাইকার নেই করে এক মৌসুম আগেও দীর্ঘশ্বাস ফেলা বার্সেলোনা পরের মৌসুমেই ফ্রি-তে এভাবে এমন একজন স্ট্রাইকার পেয়ে যাবে, কে জানত!

ম্যাচের তৃতীয় গোলটা অবামেয়াংয়ের
ছবি : রয়টার্স

গত রাতে ওসাসুনাকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। ২৭ মিনিটে ফরাসি উইঙ্গার উসমান দেম্বেলের সহায়তায় দলের তৃতীয় গোলটা এনে দিয়েছেন অবামেয়াংই। জোড়া গোল পেয়েছেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড ফেরান তোরেস, বাকি গোলটা স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রিকি পুচের। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে সুয়ারেজ-পরবর্তী যুগে অবশেষে একজন নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার পাওয়ার স্বস্তিটাই যেন অনুভূত হলো ক্যাম্প ন্যু-র আকাশে-বাতাসে।


ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে কোচ জাভির কথাতেও শোনা গেল সেই স্বস্তির সুর। ক্লাবের এই সঙিন পরিস্থিতিতে অবামেয়াংকে সৃষ্টিকর্তার পাঠানো উপহারের চেয়ে কম কিছু মনে হচ্ছে না জাভির কাছে, ‘অবামেয়াং যেন আকাশ থেকে সৃষ্টিকর্তার পাঠানো এক উপহার। শুধু গোল করছে বলেই নয়, ওর অনুশীলন করার প্রক্রিয়া ও পেশাদারত্ব—সবকিছু মিলিয়েই বলছি। অন্যান্য খেলোয়াড়ের জন্য ও একটা উদাহরণ।’

ফেরান তোরেস পেয়েছেন দুই গোল
ছবি : রয়টার্স

আর জাভি খুশি হবেন নাই–বা কেন? যখনই গোলের দরকার হচ্ছে, এগিয়ে আসছেন ৩২ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে লিগ অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করেছেন, একটি গোল করেছেন অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে। ইউরোপা লিগেও থেমে নেই অবামেয়াংয়ের গোলরথ। নাপোলির বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও গোলের দেখা পেয়েছেন আর্সেনালের সাবেক এই স্ট্রাইকার।


প্রথমার্ধেই তিন গোলের দেখা পেয়ে যায় বার্সেলোনা। ওসাসুনার রাইটব্যাক নাচো ভিদাল গাভিকে ডিবক্সের মধ্যে ফেলে দিলে পেনাল্টি পেয়ে যায় বার্সা। ১৪ মিনিটে সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ফেরান তোরেস। সাত মিনিট পরেই ফরাসি উইঙ্গার উসমান দেম্বেলের রক্ষণচেরা পাস খুঁজে নেয় বক্সের ভেতর ঢুকে যাওয়া তোরেসকে। ২৭ মিনিটে অবামেয়াংয়ের করা গোলটার পেছনেও ছিল দেম্বেলের অবদান।

৭৩ মিনিটে পেদ্রির জায়গায় মাঠে নামেন মিডফিল্ডার রিকি পুচ। গোল করতে দুই মিনিটও সময় নেননি। সব মিলিয়ে ৪-০ গোলে স্বস্তিদায়ক এই জয় পায় বার্সেলোনা। কিছুদিন আগেও গোল পাচ্ছিলেন না, নাপোলির বিপক্ষে সহজ কিছু মিস করে সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন। সেই ফেরান তোরেসও সাড়ে পাঁচ কোটি ইউরোর বিনিময়ে জানুয়ারিতে দলে আসার পর সব মিলিয়ে পাঁচ গোল পেয়ে গেলেন। তোরেসের ফর্মে ফেরার ব্যাপারটাও স্বস্তি দিচ্ছে জাভিকে, ‘আমি বলেছিলাম, ফেরান গোল পাবেই। ও যেখানেই গেছে, গোল করেছে। ভ্যালেন্সিয়া, স্পেন জাতীয় দল, ম্যানচেস্টার সিটি—সব জায়গায়। এখানে ও গোল পাওয়ার ব্যাপারটা শুধু সময়ের ব্যাপার ছিল। আমি ওর জন্য খুশি।’


এই জয়ের মাধ্যমে ২৭ ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে আতলেতিকোকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় অবস্থানে উঠে এল বার্সেলোনা। শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৬৩।