সেই দশরথেই আসুক আরেক শিরোপা

ফাইনালে আজ মুখোমুখি বাংলাদেশ-নেপাল। কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে শিরোপার লড়াই শুরু বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায়।

আজ শিরোপা জিততে পারবে বাংলাদেশ?ছবি: বাফুফে

‘হ্যাপি হোলি’ শুভেচ্ছা জানিয়ে চেয়ার ছেড়ে এগিয়ে এসে জেমি ডের কপালে ও মুখে লাল আবির এঁকে দিলেন বাল গোপাল মহারজন। নেপাল কোচের কাঁধে হাত রেখে কুশল বিনিময় করলেন বাংলাদেশ কোচ। গতকাল সকালে টিম হোটেলে দুই কোচের উষ্ণতা দেখে বোঝার উপায় ছিল না আজ তাঁরা একে অন্যের শত্রু।

বিকেলে দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ট্রফি হাতে নিয়ে জামাল ভূঁইয়া ও কিরণ চেমজংয়ের ফটোসেশনেও ফাইনালের উত্তাপ নেই। বাংলাদেশ কোচ ও অধিনায়কে চোখে আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টের ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরতে পারলে ভালো, না পারলেও ক্ষতি নেই। বাংলাদেশের কোচ হিসেবে জেমি ডে এই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ের সামনে। অধিনায়ক হিসেবে জামাল ভূঁইয়ারও তা–ই। আর বাংলাদেশের কাছে এই ফাইনাল ২১ বছর পর বিদেশের মাটিতে শিরোপা জয়ের উপলক্ষ। ১৯৯৯ সালে সাফ গেমস ফুটবলের ফাইনালে কাঠমান্ডুর এই দশরথ স্টেডিয়ামেই নেপালকে হারিয়ে ট্রফি নিয়ে ঢাকায় ফেরেন জুয়েল রানা, আলফাজ আহমেদরা। সেই ফাইনাল আর আজকের ফাইনালের তাৎপর্য আলাদা। তবু নেপালকে হারিয়ে আজ ট্রফি জিতলে বাংলাদেশের জন্য সেটি হবে মরুভূমিতে একপশলা বৃষ্টির মতোই।

ট্রফিটা নিজের করে নিতে পারবেন জামাল?
ছবি: বাফুফে

আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে জামাল ভূঁইয়াও বলে গেলেন সে কথা, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ট্রফিটি জিততে পারলে দেশের মানুষ মনে রাখবে। আমরা ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরতে চাই।’ তারপর যোগ করেন, ‘৪ দিনের ব্যবধানে নেপাল তিনটি ম্যাচ খেলছে। আমাদের জন্য যা ভালো সুযোগই।’ দুই দলের আগের ২৫ ম্যাচের ৫টি ড্র হয়েছে। নেপালের ৭ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় ১৩। সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে তিন ড্রয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের ও নেপালের একটি করে জয়। তিন জাতি টুর্নামেন্টের সর্বশেষ ড্রটি বাদ দিলে নেপালের মাটিতে সর্বশেষ ২০১৩ সালে দুই ম্যাচের একটি জেতে বাংলাদেশ।

নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের পাল্লাই ভারি।
ছবি: বাফুফে

ফাইনালে জিততে উদগ্রীব জামাল, সোহেল রানারা। তাঁরা দশরথে আজ আনন্দ-সন্ধ্যা চান। তবে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২৬২ মিটার উচ্চতায় খেলার চাপও সামলাতে হবে তাঁদের। সহ–অধিনায়ক সোহেল রানা সেটিই বলছিলেন, ‘এখানে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। বুক ভারী হয়ে আসে।’ তবে দুটি ম্যাচ খেলে ফেলায় এখন কিছুটা কষ্ট কম হবে বলেই তাঁর বিশ্বাস।

কিরগিজস্তান অনূর্ধ্ব–২৩ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে আত্মঘাতী গোলে। শনিবার নেপালের বিপক্ষে ০-০ ড্র। দুই ম্যাচে খেলেছে দুটি দল। আজ সেরা একাদশ নিয়ে ফাইনালে জেতা উচিত নয় কি? জেমি ডের সতর্ক উত্তর, ‘শনিবারের ম্যাচের সঙ্গে ফাইনালের তুলনা হয় না। ফাইনালে নিজেদের অনেক দর্শকের সামনে খেলবে নেপাল। ওরা আমাদের চেয়ে এগিয়ে থাকবে। এই অবস্থায় প্রথমত আমরা ভালো খেলতে চাই। একই সঙ্গে জয়ের চেষ্টাও থাকবে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আগের দুই ম্যাচ থেকে সেরা একাদশ বেছে নেব।’

বাংলাদেশের কোচ নির্ভার হলেও নিজেদের ফেভারিট ভেবে চাপ নিচ্ছেন নেপালের কোচ বাল গোপাল। সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘দলে কিছুটা পরিবর্তন আনব। নিজেদের দর্শকদের সামনে আমরা এগিয়ে থাকব। আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’ দুই দলই টুর্নামেন্টে এখনো কোনো গোল পায়নি। ফাইনালের জন্যই কি সেটি জমিয়ে রাখল জেমি আর বাল গোপালের দল? দেখা যাক, আজ শেষ হাসি কার?