সেরা বলেই লাথি খেতে হবে মেসিকে

মেসিকে এভাবেই ঘিরে রেখেছিল জিমনাস্তিচ।ছবি: বার্সেলোনা

বার্সেলোনা সমর্থকদের মনে শান্তি ফিরেছে গত শনিবার। তৃতীয় বিভাগের দল জিমনাস্তিচ দে তারাগোনার বিপক্ষে সেদিন প্রাক মৌসুম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রীতি ম্যাচ খেলতে নেমেছিল বার্সা। সমর্থকদের স্বস্তি দিয়ে মেসির হাতেই বার্সা অধিনায়কের আর্মব্যান্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রথমার্ধের খেলায় মেসি মোটেও স্বস্তিতে ছিলেন না। হাভিয়ের রিবেয়েস নামের এক নাছোড়বান্দা যে সেদিন তাঁকে বড্ড যন্ত্রণা দিয়েছেন।

দুই দলের মধ্যে যোজন যোজন তফাত। তবে প্রীতি ম্যাচের ব্যবধানটা ৩-১ এ রাখতে পেরেছিল জিমনাস্তিচ। কারণ, প্রীতি ম্যাচের আবহ ভুলে যেকোনোভাবেই হোক প্রতিপক্ষের মূল অস্ত্রকে দমিয়ে রাখার পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিল তারা। যেমন মেসিকে আটকাতে আদি ও অকৃত্রিম উপায়ই বেছে নিয়েছিলেন রিবেয়েস। ক্রমাগত লাথি মেরে মেসিকে স্বাভাবিক খেলা খেলতে দেননি এই মিডফিল্ডার। এতে ক্ষেপে গিয়ে মেসি একপর্যায়ে তাঁকে বেশ করে ‘বকে’ দেন।

সেদিন এমনিতেই চাপের মুখে খেলতে নেমেছিলেন মেসি। ক্লাব ছাড়া ইচ্ছের কথা জানিয়েও যেতে পারেননি নতুন গন্তব্যে। অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন দেরিতে। এমন অবস্থায় খেলতে নেমে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার ইচ্ছা যদি থেকেও থাকে সেটা করতে দেননি রিবেয়েস। ম্যাচের আগেই কোচ টনি সেলিগ্রেট তাঁকে কঠিন সে দায়িত্ব দিয়েছেন। আক্রমণের কথা ভুলে যাও আর মেসিকে যেভাবে পার আটকাও—এই কানপড়া দিয়েছিলেন কোচ। স্প্যানিশ টিভি অনুষ্ঠান এল চিরিঙ্গিতোয় সে ম্যাচের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন রিবিয়েস।

রিবেয়েসকে (বাঁয়ে) ফাঁকি দিয়ে এমন শট খুব বেশি নেওয়া হয়নি মেসির।
ছবি: বার্সেলোনা

প্রীতি ম্যাচ হলেও নিজের দায়িত্ব বেশ ভালোভাবে পালন করেছেন রিবেয়েস, ‘আমি একটা ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম মেসিকে ঘুরতে দেওয়া যাবে না। কারণ যদি একবার সেটা করেন আর আপনার দিকে (গোলের দিকে) তাকান তাহলেই বিপদ। একবার পেছন থেকে বল পাঠানো হয়েছিল, আর হাত, পা, বুক সবকিছু দিয়ে তার ওপর হুমড়ি খাচ্ছিলাম... তিনি বলটা থামালেন। তারপর ঘুরে বললেন, বদমাশ, “কী করছ? লাথি মারা বন্ধ কর, সারাক্ষণই এক কাজ করছ!” আমি বিস্মিত হয়ে বললাম, “আপনি সবার সেরা, আপনাকে লাথি মারতেই হবে। আপনাকে ঘুরতে দেওয়াই যাবে না, তাহলেই আমাকে রেখে (ড্রিবলিং ও গতিতে) চলে যাবেন ।”’

নিজের স্বাভাবিক খেলা বাদ দিয়ে শুধু মেসিকে লাথি মারার দায়িত্ব পেলেও মন খারাপ করেননি ২৮ বছর বয়সী ফুটবলার। হাজার হলেও এতে মেসির সঙ্গে সঙ্গে থাকার সুযোগ পেয়েছেন টানা ৪৫ মিনিট, ‘কোচ যখন ম্যাচ নিয়ে পরিকল্পনা জানাচ্ছিলেন, বোর্ডে তাকিয়ে দেখে সেখানে (তাঁর পাশে) লেখা মেসি । আমি অস্ফুটে বললাম, “এটা হতে পারে না।” আরেকটু ভালো করে দেখলাম এবং বললাম, “ওয়াও, এটা তো স্বপ্ন।”’

মেসির বিপক্ষে খেলতে নেমে সবারই স্বপ্ন থাকে তাঁর সঙ্গে জার্সি অদলবদল করার। কিন্তু ম্যাচে মেসিকে এতটাই বিরক্ত করেছেন যে, সে কথা মুখ ফুটে বলার সাহস হয়নি। তাই অন্য তারকার জার্সি নিয়েই সন্তুষ্ট থেকেছেন রিবেয়েস, ‘শেষে গ্রিজমান (আঁতোয়ান) আমাকে তাঁর জার্সি দিয়েছেন। আমার সঙ্গে খুব ভালো আচরণ করেছেন উনি। আমি আজীবন এ জার্সি রেখে দেব।’