স্বাক্ষর নেওয়া শেষ, বার্তোমেউকে হটাতে আর কয় ধাপ বাকি?

আগামী কিছুদিন বেশ অস্বস্তিতে থাকবেন বার্তোমেউ।ছবি: রয়টার্স

জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউকে আর ক্লাবের প্রধান হিসেবে দেখতে রাজি নন বার্সেলোনার সমর্থকেরা। সমর্থকদের দাবির মুখে সরে দাঁড়াবেন, এমন লোকও নন বার্তোমেউ। তাই কঠিন এক পথই বেছে নিয়েছিল দলটির সমর্থকেরা। আর তা হলো গণস্বাক্ষর আদায় করে একটা গণভোটের আয়োজন করতে। আর গণভোট আয়োজন করেই বার্তোমেউকে উৎখাত করার চেষ্টা করবে তারা।

মেস কে উনা মোচিও (আন্দোলনের চেয়েও বেশি কিছু) নামে ক্লাবের কিছু সদস্যের গ্রুপ বার্তোমেউকে ২০২১ পর্যন্ত ক্লাবে দেখতে রাজি নন। আগামী বছর মার্চে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও তাঁরা এর আগেই বার্তোমেউর প্রস্থান চান। তাই ক্লাবের সদস্যদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেওয়ার শুরু করেন। এর মাঝেই ক্লাব ছাড়তে চেয়ে ঝড় তুলে দিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। আর সে ঘটনা এই আন্দোলনের গতি বাড়িয়ে দিয়েছ। গণভোটের জন্য ১৬ হাজার ৫২১টি স্বাক্ষর জোগাড় করা দরকার ছিল। বৃহস্পতিবার স্বাক্ষর গ্রহণের শেষ সময় ছিল। ২০ হাজার ৭৩১টি স্বাক্ষর জোগাড় করে ফেলেছে মেস কে উনা মোচিও গ্রুপ!

ক্লাব পরিচালনা নিয়ে চলা উত্তেজনা কি মেসিদের খেলায় প্রভাব ফেলবে?
ছবি: এএফপি

নিজের বিরুদ্ধে এমন আন্দোলনেও নির্বিকার বার্তোমেউ। এখন পর্যন্ত স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, পদত্যাগ করার চিন্তা মাথায় আনছেন না বার্সা সভাপতি। কারণ, বার্সেলোনার ইতিহাসে বার্তোমেউর আগে মাত্র দুজন সভাপতির বিপক্ষে অনাস্থা ভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯৮ সালে জোসেপ নুনেজ ও ২০০৮ সালে হোয়ান লাপোর্তার বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত অনাস্থা ভোট পাওয়া যায়নি। তাই ২০২০ সালের মধ্যে বার্তোমেউ হটাও আন্দোলন সফল করতে চাইলে বার্সেলোনা সমর্থকদের বেশ জটিল এক পথ পাড়ি দিতে হবে।

চলুন দেখে নেওয়া যাক অনাস্থা ভোটের প্রক্রিয়াটা কেমন এবং কীভাবে কাজ করে—

প্রথম ধাপ: প্রথমেই অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব তোলার জন্য স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয় যাতে গণভোট আয়োজন করা যায়। বার্সেলোনার মূল সদস্যদের মধ্য থেকে ১৬ হাজার ৫২১টি স্বাক্ষর গ্রহণ জরুরি ছিল একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। ক্লাবের সমর্থকেরা এর মাঝেই সেটা করে ফেলেছেন।

দ্বিতীয় ধাপ: নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কতগুলো স্বাক্ষর জোগাড় করা হয়েছে সেটি প্রমাণসহ সবাইকে জানানো হয়। মেস কে উনা মোচিও গ্রুপ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে প্রয়োজনীয় ১৬ হাজার ৫২১ স্বাক্ষরের চেয়ে আরও পাঁচ হাজার স্বাক্ষর বেশি জোগাড় হয়ে গেছে তাদের।

তৃতীয় ধাপ: সংগ্রহকৃত স্বাক্ষর গণনা করবে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। এই স্বাক্ষরের সব প্রকৃত ক্লাব সদস্যের কি না, স্বাক্ষরগুলো প্রকৃত নাকি জাল, সেসব পরীক্ষা করা হবে। এর জন্য ১০ দিন সময় পাবে ক্লাব।

চতুর্থ ধাপ: এরপরই গণভোট পর্ব। যদি প্রথম তিন ধাপ সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়, তাহলে ক্লাবকে ৪০ দিনের মধ্যে গণভোট আয়োজন করতে হবে। যেখানে ক্লাবের সব সদস্য ভোট দিয়ে তাদের ইচ্ছার কথা জানাতে পারবেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, বর্তমান বোর্ড দায়িত্ব থাকবে কি না। বার্তোমেউ ও তাঁর বোর্ডকে সরাতে হলে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ বা ৬৬.৬৭ শতাংশ ভোট দরকার হবে বার্তোমেউবিরোধীদের।

পঞ্চম ধাপ: গণভোটে যদি বার্তোমেউ বিরোধীরা দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পান, এক নির্বাচিত প্রশাসক (ব্যক্তি/সংস্থা) নতুন সভাপতি নির্বাচনের উদ্যোগ নেবেন।