স্বাধীনতা কাপে স্বাধীনতার জয়

গোলের পর রাফাল জাবোরস্কিছবি: বাফুফে

বাংলাদেশের ক্লাব ফুটবলে আফ্রিকান ফুটবলারের জোয়ার কমেছে। ক্লাবগুলো এখন হাত বাড়িয়েছে ইউরোপেও। এবার শীর্ষ স্তরে নবাগত স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের চার বিদেশির একজন ইরানি ডিফেন্ডার, একজন উজবেক মিডফিল্ডার এবং বাকি দুজন ইউরোপের। ‘নাম্বার নাইন’ বসনিয়ার স্ট্রাইকার নেদো তুর্কোভিচ, পোল্যান্ডের ‘নাম্বার টেন’ রাফাল জাবোরস্কি।

ইউরোপের দুই ফুটবলার ওপরে খেলেন বলে তাঁদের ওপর সবার চোখ পড়ছে বেশি। দুজনই দারুণ খেললেন আজ কমলাপুর স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের একমাত্র ম্যাচে। ম্যাচে দুবার পিছিয়েও রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির বিপক্ষে স্বাধীনতা জিতেছে ৩–২ গোলে।

গোল পেয়েছেন নেদো তুর্কোভিচ (ডানে)
ছবি: বাফুফে

দারুণ এই জয়ে ইউরোপের দুই ফুটবলারের কৃতিত্ব অনেক বেশি। দুজনই একটি করে গোল করেছেন। স্বাধীনতার তৃতীয় গোলটি আত্মঘাতী হলেও অনায়াসে সেটি যোগ হতে পারত জাবোরক্সির নামের পাশে। ইউরোপের দুই ফুটবলারের ঝলকে শীর্ষ স্তরের ফুটবলে দ্বিতীয় ম্যাচেই স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ তুলে নিয়েছে প্রথম জয়।

প্রথম ম্যাচে আবাহনী লিমিটেডের কাছে ২–১ গোলে হেরে যাওয়ায় স্বাধীনতার সামনে আজ জয়ের বিকল্প ছিল না। কাঙ্ক্ষিত জয় পেয়ে এতে মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্টের শেষ আটে ওঠার সম্ভাবনাও জোরালো করেছে গত চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের চ্যাম্পিয়ন স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ।

তিন দলের গ্রুপে স্বাধীনতার পয়েন্ট ২ ম্যাচে ৩। এক ম্যাচে আবাহনীর ৩ ও রহমতগঞ্জ পয়েন্টশূন্য। শেষ ম্যাচে আবাহনীকে হারাতে না পারলে রহমতগঞ্জের বিদায়। আবাহনী-রহমতগঞ্জ ড্র হলে আবাহনীর সঙ্গে স্বাধীনতাই উঠবে নক আউট পর্বে।

ফিলিপ অ্যাজাহ দারুণ খেলেছেন
ছবি: ফেসবুক

আজ ম্যাচের শুরুটা দেখে মনেই হয়নি রহমতগঞ্জ হেরে যাবে। তৃতীয় মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যায় পুরান ঢাকার দলটি। মিডফিল্ডার সানোয়ার হোসেনের থ্রু ধরে দুই স্টপারের মাঝখান দিয়ে বেরিয়ে যান ঘানার চনমনে স্ট্রাইকার ফিলিপ অ্যাজাহ। তারপর বাকি কাজটা সেরেছেন ঠান্ডা মাথায়। বক্সের একটু ভেতরে ঢুকে স্বাধীনতার গোলকিপার সারওয়ার জাহানের ডান পাশ দিয়ে বল প্লেসিং করেন জালে।

১৬ মিনিটে হয়ে যায় ১-১। কর্নার থেকে রহমতগঞ্জের বক্সে জটলা। বসনিয়ার স্ট্রাইকার তুর্কোভিচের শট লাগে ক্রসবারে। ফিরতি বল সাইড ভলিতে জালে পাঠান পোল্যান্ডের মিডফিল্ডার জাবোরস্কি। ২৫ মিনিটে গোল করে আবার এগিয়ে যায় রহমতগঞ্জ। এবার অ্যাজাহর পাসে সানোয়ার হোসেন মাপা শটে করেন ২-১। প্রথমার্ধ এগিয়ে শেষ করে রহমতগঞ্জ।

জাবোরস্কির গোলের মুহূর্ত
ছবি: বাফুফে

এরপর ৫০ মিনিটে সাব্বির হোসেনের পাসে বসনিয়ার ফরোয়ার্ড তুর্কোভিচ এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে সহজেই বল ঠেলেন জালে (২–২)।

৭২ মিনিটে জাবোরস্কি এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দূরের পোস্টে বল প্লেসিং করেন। এই সময় বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই পাঠিয়ে দেন রহমতগঞ্জের বদলি ডিফেন্ডার আল আমিন। বল তাঁর পায়ে না লাগলেও অবশ্য জালে যেত। তবে রেফারি আত্মঘাতী গোলই দিয়েছেন। বাকি সময়ে ম্যাচে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করেও সমতাসূচক গোল করতে পারেনি রহমতগঞ্জ। হার দিয়েই শুরু হলো তাদের নতুন মৌসুম।

রহমতগঞ্জের জার্সিতে এ মৌসুমে খেলার কথা সানডে সিজোবার। গত কয়েক মৌসুম আবাহনীতে খেলা ঢাকার মাঠে চেনা এই নাইজেরিয়ার স্ট্রাইকার অবশ্য ছিলেন না আজ।