হঠাৎই চলে গেলেন অমলেশ সেন

চলে গেলেন আবাহনীর অমলেশ সেন। ফাইল ছবি
চলে গেলেন আবাহনীর অমলেশ সেন। ফাইল ছবি

চলে গেলেন অমলেশ সেন। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে শনিবার সন্ধ্যায় মারা গেছেন বাংলাদেশের ফুটবলের অন্যতম প্রবীণ এই কোচ। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
আবাহনীর সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন ক্লাবের জন্মলগ্ন থেকেই। খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। কোচ হিসেবে কাজ করেছেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। আবাহনীর ভালো কিংবা খারাপ যেকোনো সময় অমলেশ ছিলেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই ক্লাবের কান্ডারি। আবাহনীতে এসেছেন অনেকেই, এই ক্লাব ছেড়েও গেছেন অনেকে। কিন্তু ধানমন্ডির ক্লাব টেন্টে গেলে যে মানুষটিকে সার্বক্ষণিক দেখা যেত, তিনি অমলেশ সেনই।
আবাহনীর কোচিং স্টাফে যে নামটি সব সময়ই খুঁজে পাওয়া যেত, তিনি অমলেশই। ক্লাবটিতে বিদেশি কোচ এসেছেন অনেক। সবারই সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন তিনিই। এ মৌসুমেও সার্বিয়ান কোচ দ্রাগো মামিচের সহযোগী হিসেবে কাজ করছিলেন। আজ বিকেলেও খেলোয়াড়দের নিয়মিত অনুশীলন করিয়েছেন। অনুশীলনের পরপরই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর প্রথমে ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ও পরে জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আবাহনীর ম্যানেজার, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সত্যজিৎ রায় রূপু বলেন, বিকেলে অনুশীলনের পর টিম মিটিংয়েও ছিলেন অমলেশ দা। এরপরই তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
১৯৪৩ সালে ২ মার্চ বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবীণ এই ফুটবল গুরু। বর্ণালি ক্যারিয়ারে খেলেছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়েও ।
ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন বাইটন ক্লাবের হয়ে বগুড়ায়, পাঁচ বছর খেলে চলে আসেন রাজধানীতে। ১৯৬২ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত খেলেন ফায়ার সার্ভিস ও ইস্ট অ্যান্ড ক্লাবে। ১৯৭০ সালে যোগ দেন ঢাকা মোহামেডানে। স্বাধীনতাযুদ্ধের পরে ১৯৭২ সালে যোগ দেন আবাহনীতে। সেই থেকে টানা ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত খেলেছেন তাঁর প্রিয় দলেই। অবসর গ্রহণের পর আবাহনীর কোচ হিসেবেই ছিলেন আমৃত্যু। আবাহনী আর অমলেশ নামটি যেন হয়ে উঠেছিল একে অন্যের পরিপূরক।
তাঁর মৃত্যুতে যেন সমাপ্তি ঘটল বাংলাদেশের ফুটবলের একটি অধ্যায়েরই।