হাঁটুর ‘ব্যারাম’ ধরেছে বার্সার

বার্সার খেলোয়াড়েরা প্রায়ই হাঁটুর চোটে পড়ছেনছবি: রয়টার্স

একজন হাসপাতাল থেকে বেরোচ্ছেন তো আরেকজন যাচ্ছেন। চোটের সঙ্গে ফুটবলারদের এমনিতেই নিত্য বসবাস, আর সেই ফুটবলার যদি বার্সেলোনার হন, তাহলে তো আলোচনা হবেই।

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মেয়াদের চোটে পড়েছেন পিকে, উমতিতি, কুতিনিও, টের স্টেগেন, ফাতিরা। একটু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে চোটগুলোর মধ্যে একটা বিশেষ মিল পাওয়া যায়।

হাঁটু ভুগিয়েছে স্টেগেনকেও
ফাইল ছবি

বার্সার খেলোয়াড়েরা প্রায়ই হাঁটুর চোটে পড়ছেন। কী যে হয়েছে দলটির খেলোয়াড়দের হাঁটুতে, কে জানে! নাকি বার্সেলোনার চিকিৎসক দল হাঁটুর শুশ্রূষা ঠিকমতো করতে পারেন না, সে প্রশ্নও তোলা যায়। আবার বার্সেলোনার কোচিং দল খেলোয়াড়দের অনুশীলন করাতে গিয়ে হাঁটুর ওপর বাড়তি চাপ দেয় কি না, সে সন্দেহও হতে পারে। আর হবে নাই-বা কেন? বার্সা তারকারা যেসব চোটে পড়েন, তাঁর অধিকাংশই যে হাঁটুসংক্রান্ত।


বিখ্যাত ফুটবল পরিসংখ্যানবিষয়ক ওয়েবসাইট ট্রান্সফারমার্কেটের তথ্য অনুযায়ী ২০১৬-১৭ মৌসুম থেকে বার্সেলোনার খেলোয়াড়েরা মোট ২৪ বার হাঁটুর চোটে পড়েছেন। সম্মিলিতভাবে মাঠের বাইরে থেকেছেন ১ হাজার ৪০৪ দিন। ভাবা যায়! হাঁটুর ‘ব্যারামে’ কে কয়বার পড়েছেন, একনজরে দেখে নেওয়া যাক!

চোটের আঘাতে প্রায়ই ছিটকে গেছেন কুতিনিও।
ছবি: এএফপি

মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন (গোলকিপার)
২০১৬-১৭ মৌসুম থেকে অন্যান্য চোটের পাশাপাশি ছয়বার হাঁটুর চোটে পড়েছেন এই জার্মান গোলকিপার। এই ছয়বার মোট ২৪২ দিন মাঠের বাইরে ছিলেন টের স্টেগেন, খেলতে পারেননি ১৮ ম্যাচ।


ইনাকি পিনিয়া (গোলকিপার)
বার্সেলোনার বিকল্প এই গোলকিপার একবার পড়েছেন হাঁটুর চোটে। ১৪ দিন মাঠের বাইরে থেকেছেন, এক ম্যাচে ছিলেন অনুপস্থিত।


জেরার্দ পিকে (সেন্টারব্যাক)
বার্সেলোনার মূল অধিনায়ককেও ভুগিয়েছে হাঁটু। চারবার হাঁটুর চোটে পড়ে মোট মাঠের বাইরে থেকেছেন ১৪০ দিন, ৩৩ ম্যাচে খেলতে পারেননি।

সামুয়েল উমতিতি
ছবি : টুইটার

সামুয়েল উমতিতি (সেন্টারব্যাক)
বলা যায়, এই হাঁটুই শেষ করে দিল উমতিতিকে। এককালে বার্সার মূল সেন্টারব্যাক ছিলেন। হাঁটুর চোটের কবলে সেই উমতিতিই আজ ক্লাব ছাড়ার দ্বারপ্রান্তে। মূল একাদশে জায়গা হারিয়েছেন পিকে, এরিক গার্সিয়া, অস্কার মিঙ্গেসা, ক্লেমঁ লংলে, রোনালদ আরাউহোদের কাছে। গুনে গুনে ছয়বার হাঁটুর চোটে পড়েছেন, মাঠের বাইরে থেকেছেন সব মিলিয়ে ৩১৩ দিন। খেলতে পারেননি ৫৭ ম্যাচ।


জর্দি আলবা (লেফটব্যাক)
বার্সার মূল লেফটব্যাক সে হিসেবে ভাগ্যবান। হাঁটুর যন্ত্রণায় একবারই পড়েছেন, পাঁচ দিন মাঠের বাইরে থেকে খেলতে পারেননি দুই ম্যাচ।


সের্হিও বুসকেতস (সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার)
একবার হাঁটুর চোটে পড়েছেন বার্সার আরেক অধিনায়ক ও পুরোনো দিনের যোদ্ধা সের্হিও বুসকেতসও। তিনি মাঠের বাইরে ছিলেন ১৪ দিন, আলবার মতোই দুই ম্যাচে খেলতে পারেননি।

মুসা ওয়াগ
ছবি : বার্সেলোনা ওয়েবসাইট

মুসা ওয়াগ (রাইটব্যাক)
মুসা ওয়াগ নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন। এমনিতেই বার্সার মূল একাদশে জায়গা হতো না সের্হি রবের্তো, সের্হিনিও দেস্তের মতো রাইটব্যাকের কারণে। নিজেকে প্রমাণ করার জন্য পাড়ি জমিয়েছিলেন গ্রিক ক্লাব পিএওকে-তে। সেখানেই বিধি বাম। পা ভেঙে হাঁটুর দফারফা করেছেন। এখনো মাঠের বাইরেই আছেন। এই পর্যন্ত ৩২২ দিন মাঠের বাইরে থেকে ৯১ ম্যাচে অনুপস্থিত ছিলেন।


ফিলিপ কুতিনিও (অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার)
ওদিকে আরেক দুর্ভাগার নাম ফিলিপ কুতিনিও। বার্সার কৌশলের সঙ্গে খাপ না খাওয়ার কারণেই হোক বা ফর্মহীনতার কারণে, বার্সায় সুযোগ পাননি সেভাবে। আর যখনই পেয়েছেন, বাদ সেধেছে হাঁটু। একবারই হাঁটুর চোটে পড়েছেন, ২২০ দিনে মিস করেছেন ৩৩ ম্যাচ।


আনসু ফাতি (উইঙ্গার)
বার্সার নতুন ‘নাম্বার টেন’-ও ভুগেছেন হাঁটুর জ্বালায়। তবে সেটা অন্যান্য চোটের মতো অতটা ভোগায়নি ফাতিকে। ১২ দিন মাঠের বাইরে থেকেছেন এ কারণে খেলতে পারেননি এক ম্যাচ।


মার্টিন ব্রাথওয়াইট (স্ট্রাইকার)
হাঁটুর চোটের পড়া বার্সেলোনা খেলোয়াড়দের তালিকার সর্বশেষ সংযোজন তিনি। সব মিলিয়ে ১২২ দিন এ কারণে অনুপস্থিত থেকেছেন, খেলতে পারেননি ২১ ম্যাচ।