হারের পর হাসাহাসি, রিয়ালে ক্ষোভ, ক্ষমা চাইলেন হ্যাজার্ড

ক্ষমা চেয়েছেন হ্যাজার্ডছবি : রয়টার্স

হাজার হোক, চেলসি তাঁর সাবেক ক্লাব। এই ক্লাবেই তারকাখ্যাতি পেয়েছেন, পড়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের নজরে। সাত বছর লন্ডনে থেকে অনেক বন্ধু বানিয়েছেন, আছে অনেক মধুর স্মৃতি। ম্যাচ শেষে হ্যাজার্ড তাই বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলতে পেরে সেই আগের সময়টায় ফিরে গেলেন যেন। সাবেক সতীর্থ কুর্ত জুমার সঙ্গে হালকা মেজাজে হাসিঠাট্টা করলেন। বেমালুম ভুলে গেলেন, এখন চেলসি নয়, রিয়ালের খেলোয়াড় তিনি। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ল মিডিয়ায়। অন্য সময় হলে হয়তো তেমন কিছু হতো না। কিন্তু হ্যাজার্ড যে সেটি করলেন ম্যাচ হারের পর। তাও রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাব চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ার পর। রিয়াল-কর্তৃপক্ষ হ্যাজার্ডের ‘মশকরা’ মানবে কেন!

এমন ম্যাচ হারের পর সাবেক সতীর্থদের সঙ্গে হাসি-তামাশা, তাও আবার তাদের বিপক্ষেই ম্যাচ হেরেছে রিয়াল—রিয়াল সমর্থকদের গায়ে আগুন ধরে গেল যেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, মাদ্রিদভিত্তিক গণমাধ্যমে হ্যাজার্ডকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হলো। সমালোচনার মাত্রা এতই বাড়ল যে হ্যাজার্ডকে আসছে গ্রীষ্মের দলবদলে বিক্রি করে দেওয়ার কথাবার্তাও উঠে গেল জোরেশোরে। অবস্থা বেগতিক দেখে নিজ ক্লাবের সমর্থকদের রাগ কমাতে খোদ হ্যাজার্ডকেই এগিয়ে আসতে হলো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিয়াল সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।

ইনস্টাগ্রামের স্টোরিতে হ্যাজার্ড লিখেছেন, ‘আমি দুঃখিত। আমাকে নিয়ে অনেক মতামত পড়েছি আজকে, রিয়াল মাদ্রিদের ভক্তদের খেপিয়ে দেওয়ার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না আমার।’

চেলসিতে যখন ছিলেন, তখন থেকেই রিয়াল মাদ্রিদে আসার ব্যাপারে আগ্রহ ছিল হ্যাজার্ডের। রিয়ালের কোচ জিনেদিন জিদানকে ‘আইডল’ মেনে বড় হয়েছেন, রিয়ালে জিদান যখন কোচ হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো এলেন, রিয়ালের ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারেননি তখন। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে সে ব্যাপারটাই আবারও তুলে ধরেছেন এই বেলজিয়ান উইঙ্গার, ‘রিয়ালে খেলা আমার আজীবন স্বপ্ন ছিল। আমি এখানে জেতার জন্য এসেছি। মৌসুম এখনো শেষ হয়নি, আমাদের এখন একসঙ্গে লিগ জয়ের জন্য চেষ্টা করে যেতে হবে। আলা মাদ্রিদ!’

চেলসির দুর্দান্ত সাত বছর কাটিয়েছেন হ্যাজার্ড
ফাইল ছবি

যে হ্যাজার্ডকে রিয়াল চেয়েছিল, সে প্রত্যাশার ছিটেফোঁটাও পূরণ করতে পারেননি। একের পর এক চোটে জেরবার হয়ে থাকলেন তিনি। এ মৌসুমে লিগে আর চার ম্যাচ বাকি, এর মধ্যে মাত্র ১১টি ম্যাচে দেখা গেছে তাঁকে। দুটি গোল করেছেন, সতীর্থদের দিয়ে কিছু করাতে পারেননি। চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলেছেন পাঁচ ম্যাচ। তাতে এক গোল। যদিও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দৌড়াদৌড়ি করেই কাটাতে হয়েছে তাঁকে। কাজের কাজ কিছু করেননি। রিয়ালের জার্সিতে এখন পর্যন্ত তাঁর ক্যারিয়ার ৪০ ম্যাচ আর ২৩৮৯ মিনিটের। তাতে ১১টি গোলে অবদান। যে খেলোয়াড়কে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর অভাব পূরণে আনা হয়েছিল, তাঁর কাছ থেকে এমন পারফরম্যান্স অবশ্যই প্রত্যাশিত নয়।

বেশির ভাগ সময় চোটেই পড়ে থাকছেন এডেন হ্যাজার্ড
টুইটার

তাও রিয়াল সমর্থকেরা হ্যাজার্ডকে নিয়ে আশাবাদী ছিলেন। সাধারণত খেলোয়াড় খারাপ খেললে যে দলের সমর্থকেরা দুয়ো দিতেও পিছপা হয় না, হ্যাজার্ডের কপালে তেমন ‘ব্যবহার’ এখনো জোটেনি। কিন্তু তাই বলে মৌসুমের গুরুত্বপূর্ণ একটা ম্যাচ হারের পর এভাবে হাসি-তামাশা করবেন হ্যাজার্ড? এটা মেনে নিতে পারেননি কোনো রিয়াল-ভক্ত।

হ্যাজার্ডের ক্ষমা প্রার্থনায় এখন কোনো কাজ হয় কি না, দেখা যাক!