হাস্যকর পেনাল্টি মিস, ক্ষমা চাইলেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার

এই শট মেরেই পেনাল্টি মিস করেছেন আগুয়েরো।ছবি : রয়টার্স

সে সময় সের্হিও আগুয়েরোর মাথায় কী কাজ করছিল, কে জানে!

তর্কাতীতভাবে ম্যানচেস্টার সিটির ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবময় মুহূর্তে মূল কুশীলব তিনি। ২০১১-১২ মৌসুমের একদম শেষ ম্যাচের শেষ মুহূর্তে গোল করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নাকের ডগা থেকে লিগ ছিনিয়ে এনে সিটিকে উপহার দিয়েছিলেন এই আগুয়েরো। গোলের পর এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের জার্সি খুলে বাঁধনহারা উদ্‌যাপন আর ধারাভাষ্যকার মার্টিন টাইলারের গলায় ‘আগুয়েরোওওওওওও’ বলে চিৎকার—কে ভুলতে পারে? অমন উত্তেজনাপূর্ণ না হোক, গতকাল দলকে লিগ শিরোপা জেতানোর আরেকটা সুযোগ পেয়েছিলেন আগুয়েরো। কিন্তু এবার সে সুযোগ হেলায় হারিয়েছেন। হারিয়েছেন বলেই ম্যাচ শেষে দলের ভক্ত-সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার।

চেলসির বিপক্ষে সিটি তখন ১-০ গোলে এগিয়ে। বক্সের মধ্যে সিটির স্প্যানিশ উইঙ্গার ফেরান তোরেসকে ফেলে দিলেন চেলসির তরুণ ইংলিশ মিডফিল্ডার বিলি গিলমোর। ব্যস, পেনাল্টি। পেনাল্টি থেকে গোলটা করতে পারলেই ২-০ গোলে এগিয়ে যেত সিটি। আর এ মৌসুমে তাদের রক্ষণভাগ যেমন দুর্দান্ত খেলছে, নিজেদের মাঠে ২-০ গোলের লিড যে বাকি সময় ধরে রাখতে পারত না, সেটা নিশ্চয়তা দিয়ে বলার মতো মানুষ হয়তো খুব বেশি খুঁজে পাওয়া যেত না। আর সেটা হলেই এবার ইংলিশ লিগের শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলত ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু পেনাল্টিটা নিতে গিয়েই ভজকট পাকিয়ে ফেলেন আগুয়েরো। সর্বশক্তি দিয়ে না মেরে চেলসির গোলরক্ষক এদুয়ার্দ মেন্দিকে বোকা বানাতে গেলেন, মারলেন ‘পানেনকা’ কিক। এ ধরনের কিকের গতিবেগ এমনিতেই কম থাকে, আগুয়েরোরটায় যেন আরও কম ছিল। ডান দিকে ঝাঁপ দিতে গিয়েও তাই বলের বেগ দেখে নিজেকে সামলে একরকম হেসেখেলেই বলটা ‘ক্যাচ’ ধরেন সেনেগালিজ এই গোলরক্ষক।

আগুয়েরোর এই কীর্তি দেখেই কি না, সাহস বেড়ে গেল চেলসির। পরে দুটি গোল দিয়ে দুর্দান্তভাবে ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছে তারা। ২৯ মে এই দুই দলই মুখোমুখি হবে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে। এই জয়ে সেই ম্যাচের জন্যও প্রয়োজনীয় আত্মবিশ্বাস জোগাড় করে ফেলেছে দলটা।

পরে আগুয়েরোরা মাঠ ছেড়েছেন ম্যাচ হেরে।
ছবি : রয়টার্স

ম্যাচ শেষে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারকে বেছে নিয়েছেন আগুয়েরো। স্বীকার করেছেন, ওভাবে পেনাল্টি নেওয়ার সিদ্ধান্ততেই গলদ ছিল, ‘পেনাল্টি মিস করার জন্য আমার সতীর্থ, ক্লাব কর্মকর্তা ও সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চাইছি। ওভাবে পেনাল্টি নেওয়ার সিদ্ধান্তটা বাজে ছিল, আর এর পুরো দায়ভার আমি নিচ্ছি।’

পোস্টের নিচে কমেন্ট করে রহিম স্টার্লিং আবার সহমর্মিতা জানিয়েছেন, ‘ব্যাপার না, বন্ধু। হারের জন্য আমরা সবাই দায়ী। কিন্তু আমরা আবারও নিজেদের ভুল শুধরে এগিয়ে যাব।’ কমেন্ট সেকশনে সিটিও তাদের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকে ভালোবাসার ইমোজি পোস্ট করেছে।

একরকম হেসেখেলেই আগুয়েরোর শটটা ‘ক্যাচ’ ধরেন চেলসির সেনেগালিজ গোলরক্ষক মেন্দি।
ছবি : রয়টার্স

ম্যাচ শেষে পেপ গার্দিওলা অবশ্য শিষ্যের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন, ‘ও মিস করেছে দেখে আপনারা সবাই ওকে স্বার্থপর বলছেন। গোল করলে বলতেন কী জিনিয়াস ও! এটাই বাস্তবতা।’

তবে এই সপ্তাহে সিটির শিরোপা জেতার সুযোগ এখনো আছে। আজ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড যদি অ্যাস্টন ভিলার কাছে হেরে যায়, তাহলে এক বছর পর আবারও সিটির ঘরে যাবে লিগ শিরোপা।