হ্যাটট্রিক করেও রোনালদোর মতো পোড়া কপাল তাঁর

হেডে ম্যানচেস্টার সিটির জালে গোল করছেন ক্রিস্টোফার এনকুনকুছবি: এএফপি

পোড়া কপাল বোধ হয় একেই বলে!

একে তো চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ, সেখানে হ্যাটট্রিক করলে সেই খেলোয়াড়ের দলেরই তো জেতার কথা—এটাই সাধারণ হিসেব।

কিন্তু কাল রাতে ইতিহাদে ম্যানচেস্টার সিটি-লাইপজিগ ম্যাচ দেখে থাকলে ভুল ভাঙবে। হ্যাটট্রিক করেও কখনো কখনো দলকে জেতানো সম্ভব হয় না। এমনকি হ্যাটট্রিকের পরও হারতে হয় তিন গোল ব্যবধানে!

পাগলাটে, গোলের রাত—যাই বলুন না কেন, ইতিহাদে কাল কী ভর করেছিল কে জানে! জার্মান ক্লাব লাইপজিগকে ৬-৩ গোলে হারিয়েছে পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি। বেচারা ক্রিস্টোফার এনকুনকু! লাইপজিগের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগে হ্যাটট্রিক করেও দলকে জেতাতে পারেননি।

চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে হ্যাটট্রিক করেও হার নিয়ে মাঠ ছাড়া খেলোয়াড়দের তালিকা বেশি লম্বা নয়। এনকুনকুর আগে এমন পোড়া কপালের দেখা পেয়েছেন মাত্র তিনজন— রোনালদো নাজারিও, গ্যারেথ বেল ও ইরফান কাহভেচি। প্রথম দুজনের পরিচয় না দিলেও চলে। তৃতীয়জন তুর্কি মিডফিল্ডার। গত বছর এই লাইপজিগের বিপক্ষেই ইস্তাম্বুল বাশাকশেহিরের হয়ে হ্যাটট্রিক করেন কাহভেচি। কিন্তু তাঁর দল হেরেছিল ৪-৩ গোলে।

হ্যাটট্রিকের পর এনকুনকু
ছবি: রয়টার্স

ইউরোপসেরা ক্লাবের এই প্রতিযোগিতায় হ্যাটট্রিক করেও দলের হার দেখা প্রথম খেলোয়াড় রোনালদো। ২০০৩ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল ফিরতি লেগে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে চোখ ধাঁধানো হ্যাটট্রিক করেছিলেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি। কিন্তু তাঁর দল রিয়াল মাদ্রিদ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে হেরেছিল ৪-৩ গোলে। এর সাত বছর পর ২০১০ সালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে একই পরিণতি মেনে নিতে হয় গ্যারেথ বেলকে। ওয়েলশ তারকা টটেনহামের হয়ে হ্যাটট্রিক করলেও মাঠ ছাড়েন হার নিয়ে। আশ্চর্য! এবারও হারের ব্যবধান ৪-৩!

শুধু এনকুনকুর বেলায় স্কোরলাইন ও হারের ব্যবধানটা পাল্টে গেছে। ৩ গোলের ব্যবধানে হেরেছে তাঁর দল। এই স্কোরলাইনেও রেকর্ড বইয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত এক জায়গায় নাম উঠেছে ২৩ বছর বয়সী ফরাসি মিডফিল্ডারের।

প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগে হ্যাটট্রিক করেও ন্যূনতম তিন গোলের ব্যবধানে দলের হার দেখতে হলো এনকুনকুকে। চ্যাম্পিয়নস লিগে পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে হ্যাটট্রিক এর আগে শুধু করতে পেরেছেন একজনই—লিওনেল মেসি। ২০১৬ সালে সিটিকে ৪-০ গোলে হারিয়েছিল বার্সা।

২০০৩ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেও হারের মুখ দেখেছিলেন রোনালদো
ফাইল ছবি: এএফপি

ইতিহাদে ৯ গোলের রোমাঞ্চের রাতটাও জায়গা করে নিয়েছে পরিসংখ্যানে। এই টুর্নামেন্টে ন্যূনতম ৯ গোল হওয়া অষ্টম ম্যাচ এটি। সর্বোচ্চসংখ্যক গোলের দেখা মিলেছিল বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ও লেগিয়া ওয়ারশ’র ম্যাচে। ২০১৬ সালে লেগিয়া ওয়ারশকে ৮-৪ গোলে হারিয়েছিল ডর্টমুন্ড। চ্যাম্পিয়নস লিগের আগের সংস্করণ ইউরোপিয়ান কাপে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি গোল দেখা গিয়েছে ১৯৬৯-৭০ মৌসুমে ফেইনুর্দ-রিকজাভিগ ম্যাচে।

১২-২ গোলে রিকজাভিগকে হারিয়েছিল ফেইনুর্দ। তবে উয়েফার সিনিয়র পর্যায়ে সব মিলিয়ে সর্বোচ্চসংখ্যক গোলের ম্যাচ দেখা গিয়েছে ১৯৬৩ সালে ইউরোপিয়ান কাপ উইনার্স কাপে। অ্যাপোয়েল নিকোশিয়াকে ১৬-১ গোলে হারিয়েছিল স্পোর্তিং লিসবন।