১–০, ১–১, ২–১, ২–২, ৩–২, ৩–৩!

দলকে এগিয়ে দেওয়ার পর কিংয়ের উল্লাস বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।ছবি: প্রথম আলো

পেন্ডুলামের মতো দুলেছে ম্যাচের ভাগ্য। একদিকে ওমর জোবে, সুলাইমান সিল্লাহ, ভালি ওতাবেক ও সলোমন কিংরা আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন গতিময় ফুটবলে। ওদিকে সাজানো আক্রমণে জবাব দিচ্ছেন মুরোলিমঝন আখমেদভ, ফ্রেদেরিক পুদা ও মোহাম্মদ জুয়েলরা। একবার শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব এগিয়েছে, খানিক বাদেই ম্যাচে ফিরেছে বাংলাদেশ পুলিশ ক্লাব। একবার নয়, দুবার নয়; তিন-তিনবার এমন কিছু দেখা গেল আজ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। ৩-৩ গোলে শেষ হওয়া দুর্দান্ত এক ম্যাচে এক পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে দুই দলকে।    

ম্যাচের ১০ মিনিটে ওমর জোবের গোলে প্রথম এগিয়ে যায় শেখ জামাল। সুলাইমান সিল্লাহর দারুণ এক থ্রু বলটা ডি-বক্সের বাইরে পেয়েই গতিতে ছিটকে ফেলেছেন পাশে থাকা ডিফেন্ডারদের। গোলরক্ষককে এগিয়ে আসতে দেখেই আলতো এক চিপে বল পাঠিয়ে দিয়েছেন জালে। লিগে এটি জোবের ১১তম গোল। বসুন্ধরা কিংসের রবিনিওকে টপকে আবার লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন জোবে। ম্যাচের ৩২ মিনিটে আখমেদভের বিশ্বমানের এক গোলে ম্যাচে সমতায় ফেরে পুলিশ। প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে ফ্রি কিক পায় পুলিশ। মিডফিল্ডার আখমেদভ এরপর সেটপিস থেকে যে শট নিলেন তা এককথায় ছিল চোখজুড়ানো। আখমেদভের রংধনু শটটি শেখ জামাল গোলরক্ষক জিয়াউর রহমানের মাথার ওপর দিয়ে ঢোকে জালে।

শেখ জামাল এগিয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশ আবার ম্যাচে ফিরেছে-এভাবেই এগিয়েছে খেলা।
ছবি: প্রথম আলো

শেখ জামালকে আবার এগিয়ে নেন ওতাবেক। ৪১ মিনিটে জোবের ক্রস থেকে পাওয়া বলটা সিল্লাহ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। কিন্তু পুলিশের ডিফেন্ডার আরিফ খানও বলটি ক্লিয়ার করতে পারলেন না। তাঁর ভুলে সামনে দাঁড়ানো ওতাবেক করেন ২-১। এমন হাস্যকর ভুল করার শাস্তি হিসেবে একটু পরই আরিফকে মাঠ থেকে তুলে নেন পুলিশ কোচ পাকির আলী। বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগে আইভরি কোস্টের মিডফিল্ডার পুদার শটে ২-২ করে পুলিশ। অথচ বলটা গোলরক্ষক জিয়াউরের একেবারে নাগালের মধ্যেই ছিল! সেই রাগেই কিনা দ্বিতীয়ার্ধে শেখ জামাল কোচ শফিকুল জিয়াউরকে তুলে দ্বিতীয় গোলরক্ষক মামুন খানকে মাঠে নামান।

দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণাত্মক খেলেছে শেখ জামাল। আবাহনীর বিপক্ষে ৯ ফেব্রুয়ারি লাল কার্ড দেখে দুই ম্যাচের জন্য মাঠের বাইরে ছিলেন শেখ জামালের আক্রমণভাগের অন্যতম বড় ভরসা সলোমন কিং। তাঁর প্রত্যাবর্তনে উজ্জীবিত জোবে ও সিল্লাহ কাঁপিয়ে দিয়েছেন পুলিশকে। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে ৩-২ করেন সলোমন কিং। প্রথমে সিল্লাহ পোস্টে শট নেন, কিন্তু ওই বল সাইড পোস্টে লেগে ফেরে। ফিরতি বলে আলতো টোকায় গোল করেন কিং।

দুর্দান্ত এক ম্যাচ শেষে সমতা।
ছবি: প্রথম আলো

৬০ মিনিটেই ম্যাচে ফিরতে পারত পুলিশ। ফরোয়ার্ড স্বাধীনের ক্রস থেকে গোল হয়েই যাচ্ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে গোললাইন সেভ করেন জামালের ডিফেন্ডার মোজাম্মেল নিরা। আর ৬৯ মিনিটে শেখ জামালের জয়ের স্বপ্নে জল ঢেলে দেন জুয়েল। আখমেদভের নেওয়া কর্নার থেকে জটলায় পাওয়া বলে সুযোগসন্ধানী এ ফরোয়ার্ড করেছেন গোল।

লিগে নিজেদের প্রথম পাঁচটি ম্যাচ জিতে রীতিমতো উড়ছিল শেখ জামাল। সেই দলটিই এরপর টানা চার ম্যাচ ড্র করল! ৯ ম্যাচে ৫ জয় ও ৪ ড্রয়ে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনেই রইল শেখ জামাল। সমান ম্যাচে ২ জয়, ৩ ড্র ও ৪ হারে ৯ পয়েন্ট নিয়ে আটে পুলিশ।