১১ কোটি ৫০ লাখ ইউরোতে চেলসিতে যাচ্ছেন লুকাকু

লুকাকুফাইল ছবি: রয়টার্স

আরলিং হরলান্ডকে নিয়েই বেশি গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। নিজেদের আক্রমণভাগে গত মৌসুমেই প্রচুর অস্ত্র জোগাড় করেছিল চেলসি। চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে এর পুরস্কারও পেয়েছে তারা। তবু জার্মান স্ট্রাইকার টিমো ভের্নারের ফর্ম তাদের বেশ ভুগিয়েছিল। এবার তাই আরও নিখুঁত কোনো স্ট্রাইকারের খোঁজ করছিল চেলসি। আর দলটির প্রথম পছন্দ ছিল আরলিং হরলান্ড।

জার্মান ক্লাবে খেলা হরলান্ড এখন সবার আগ্রহ জাগাচ্ছেন। গত দেড় মৌসুমে বিশ্ব ফুটবলে আলোড়ন তুলেছেন এই স্ট্রাইকার। কিন্তু তাঁর ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ড যে তাঁকে ছাড়তে রাজি নন। ১৭ কোটি ইউরোর কমে তো নয়ই। চেলসি তাই নজর অন্যদিকে ফিরিয়েছে। সাবেক খেলোয়াড় রোমেলু লুকাকুকেই কিনে আনছে তারা।

গত মৌসুমে ইতালিতে বেশ বড় এক ঘটনা ঘটেছে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সমৃদ্ধ জুভেন্টাসকে হটিয়ে শিরোপা জিতেছে ইন্টার মিলান। টানা ৯ বছর ধরে ইতালিতে আধিপত্য দেখানো জুভেন্টাসের পথ আটকাতে আন্তোনিও কন্তে গড়েছিলেন দুর্দান্ত এক দল। কিন্তু শিরোপা জেতার পরই ইন্টার মিলানের মালিকপক্ষের সাফল্যক্ষুধা মিটে গেছে। আর সে কারণেই খেলোয়াড় বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। আর সেটা আটকাতে পারবেন না জেনে আগেই বিদায় নিয়েছেন কন্তে।

সিরি ‘আ’ জেতা দল থেকে প্রথমে বিদায় নিয়েছেন আশরাফ হাকিমি। আক্রমণাত্মক রাইটব্যাক হিসেবে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর হাকিমিকে পিএসজি নিয়ে গেছে শর্ত সাপেক্ষে প্রায় ৭ কোটি ইউরোতে। এতেও যে ইন্টারের তহবিলে ঘাটতি রয়ে গেছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে ভালোভাবে। হরলান্ডকে কোনোভাবেই পাওয়া যাবে না বুঝতে পেরে চেলসি নজর ফিরিয়েছিল রোমেলু লুকাকুর দিকে। ২৮ বছর বয়সী গত মৌসুমে দারুণ ফর্মে ছিলেন। ইন্টারকে শিরোপা এনে দেওয়ার পথে করেছিলেন ২৪ গোল।

বিশ্ব ফুটবলেই এখন পূর্ণাঙ্গ স্ট্রাইকারের অভাব। সে কারণে চেলসি প্রথমেই ১০ কোটি ইউরোর প্রস্তাব পাঠিয়েছিল ইন্টারের কাছে। কিন্তু ইন্টার সে প্রস্তাব বাতিল করে দেয়। প্রাথমিকভাবে ১৩ কোটি ইউরো দাবি করা হয়েছিল। তবে রফা ১১ কোটি ৫০ লাখেই হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফ্যাব্রিজিও রোমানো। দলবদলের খবরের জন্য বিখ্যাত এই ইতালিয়ান সাংবাদিক টুইট করেছেন, ‘চেলসিতেই যাচ্ছেন রোমেলু লুকাকু, নিশ্চিত। আরেকটু কথা বলার পরই চুক্তি পরিপূর্ণ হবে। ইন্টার মিলান ১১৫ মিলিয়ন পাচ্ছে, সঙ্গে কোনো খেলোয়াড়ও দিতে হচ্ছে না। চুক্তির খুঁটিনাটি সব ঠিক হলেই কাগজপত্রে সই হবে।’

ইন্টার মিলানে নিজের নয় নম্বর জার্সিটাকে পেছন ফিরে দেখাচ্ছেন লুকাকু
ফাইল ছবি

এ দলবদলের ফলে নিজের অপূর্ণ কাজ শেষ করার সুযোগ পাচ্ছেন লুকাকু। ২০১১ ও ২০১২ সালে বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্মের প্রায় সব তারকাকেই দলে টেনেছিল চেলসি। ২০১১ সালে ১৮ বছরের লুকাকুকে আন্ডারলেখট থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ ইউরো দিয়ে এনেছিল চেলসি। কিন্তু চেলসিতে বলতে গেলে সুযোগই পাননি। তিন বছরে ১০ ম্যাচে নামতে পেরেছেন। তাতে ১৯৮ মিনিটে কোনো গোল নেই। প্রথমে ওয়েস্ট ব্রম ও পরে এভারটনে ধারে খেলেছেন। সেই এভারটন তাঁকে ৩ কোটি ৫৪ লাখ ইউরোতে কিনে নেয় ২০১৪ সালে।

তিন বছরে এতটাই দুর্দান্ত খেলেছেন যে তাঁকে পেতে চেলসি আবার চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু বাগড়া বাধিয়ে ৮ কোটি ৫০ লাখ ইউরোতে তাঁকে নিয়ে যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

সে দলবদল লুকাকুর পক্ষে যায়নি। দুই বছর পর ৭ কোটি ৪০ লাখ ইউরোতে ইন্টার মিলানের কাছে তাঁকে ছেড়ে দিয়ে হাঁপ ছাড়ে ইউনাইটেড। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আবার ফিরছেন লুকাকু। এখানে যে নিজেকে প্রমাণের বাকি আছে তাঁর।