২৩ সেকেন্ডেই গোল!

মাহাদুদ হোসেন চমকে দিয়েছেন সবাইকে।ছবি: প্রথম আলো

রেফারি মোহাম্মদ নাহিদ মাত্রই খেলা শুরুর বাঁশি বাজিয়েছেন। রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ তখনো সেভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেননি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাত্র ২৩ সেকেন্ডে রহমতগঞ্জের জালে ঢুকল বল! হতাশ রাসেল মাহমুদ বলের দিকে চেয়ে রইলেন।

রহমতগঞ্জের বিপক্ষে ম্যাচে দ্রুততম গোল করে এবারের মৌসুমে দারুণ কীর্তি গড়লেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের ডিফেন্ডার মাহাদুদ হোসেন। যদিও শেষ পর্যন্ত এই অগ্রগামিতা আর ধরে রাখতে পারেনি মুক্তিযোদ্ধা। রহমতগঞ্জের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে মাঠ ছেড়েছে দলটি। রহমতগঞ্জকে একটি পয়েন্ট এনে দিয়েছেন আরাফাত হোসেন।

মাহাদুদ হোসেনকে (ডানে) ঘিরে মুক্তিযোদ্ধার উল্লাস।
ছবি: প্রথম আলো

ম্যাচের শুরুতেই আচমকা আক্রমণ মুক্তিযোদ্ধার। অধিনায়ক ইউসুকে কাতোর থ্রু পাস ধরে বক্সে ঢোকেন মাহাদুদ। সামনে দাঁড়ানো ফরোয়ার্ড রোহিত সরকার চমৎকার ডামি করে ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে দেন। ওই ফাঁকে আলতো প্লেসিংয়ে বল জালে জড়ান মাহাদুদ।

লিগের পয়েন্ট টেবিলের তলানির দিকে থাকা দুই দলের লড়াইটা আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে বেশ জমে উঠেছিল আজ। এই ম্যাচের আগপর্যন্ত দুই দলের জয়, পরাজয়, ড্রয়ের পরিসংখ্যান ছিল সমান। এই ড্রয়ে তাই পয়েন্ট টেবিলেও দুই দলের কোনো অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি। ১০ ম্যাচে ২ জয়, ৩ ড্র ও ৫ হারে ৯ পয়েন্ট নিয়ে রহমতগঞ্জ লিগ টেবিলের নয়ে। সমান পয়েন্ট নিয়ে দশেই রইল মুক্তিযোদ্ধা।

আগের ম্যাচে চোটের কারণে খেলতে পারেননি রহমতগঞ্জের তাজিক ফরোয়ার্ড দিলশদ ভাসিয়েভ। আজ কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানী তাঁকে একাদশে রেখেছিলেন। কিন্তু ভাসিয়েভ যে পুরো ফিট নন, তা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। ম্যাচের ২০ মিনিটের মধ্যেই ভাসিয়েভকে তুলে নেন কোচ। আরেক ফরোয়ার্ড আইভরি কোস্টের ক্রিস্ট রেমিকে বলতে গেলে পুরো সময় বোতলবন্দী করে রাখেন মুক্তিযোদ্ধার ডিফেন্ডার কামারা ইউনুসা। তারপরও মাঝেমধ্যে এনামুল হোসেন, আরাফাত হোসেন মুক্তিযোদ্ধার বক্সে ঢুকে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন।

এক প্যেন্ট নিয়েই ফিরেছে রহমতগঞ্জ।
ছবি: প্রথম আলো

গোল শোধে মরিয়া রহমতগঞ্জ সমতায় ফেরে ৬৬ মিনিটে। মিসরের ডিফেন্ডার আলাদিন নাসরের বাড়িয়ে দেওয়া বল নিয়ে বক্সে ঢোকেন আরাফাত। দুর্দান্ত শটে মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষক মাহফুজ হাসানের মাথার ওপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন জালে।
মুক্তিযোদ্ধার সবচেয়ে বড় সমস্যা, অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে ফরোয়ার্ডদের খেই হারিয়ে ফেলা। ফিনিশিংয়ের অভাবে গোলের সুযোগ নষ্ট হয়েছে গোটা তিনেক।

পুরো ম্যাচে বলতে গেলে কাতোকেই খেলতে দেখা গেছে সারা মাঠে দৌড়ে। কখনো বল বানিয়ে দিচ্ছেন ফরোয়ার্ডদের, কখনো নিজেই বল নিয়ে বক্সে ঢুকছেন। অথবা শট নিচ্ছেন। ৭৪ মিনিটে কাতোর দারুণ একটা ফ্রি–কিকে গোল হতেও পারত। কিন্তু কাজে লাগাতে পারলেন না ইউনুসা কামারা। বক্সের মধ্যে থাকা কামারার মাথা ছুঁয়ে যাওয়া বলটা ক্রসবারে লেগে ফেরে। শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছেড়েছে দুই দল।