৩১ গোল দেওয়ায় রিয়ালের ওপর রাগ করল দলটি

বেঞ্জামিন এ দল গত মৌসুমেও শিরোপা জিতেছিল।
ফাইল ছবি: রিয়াল মাদ্রিদ ওয়েবসাইট

দলের আনুষ্ঠানিক নাম সোসিয়েদাদ রিক্রেতিভা ভিয়াভের্দে বোয়েত্তিচের ক্লাব দ্য ফুতবল। এত বড় নাম বেশ গালভরা ঠেকে। তাই সংক্ষেপে তাদের এসএডি ভিয়াভের্দে সান অ্যান্দ্রেস নামেই ডাকা হয়। গতকালের দিনটা আক্ষরিক অর্থেই ক্লাবটির জন্য এসএডি বা ‘স্যাড’ কেটেছে। বয়সভিত্তিক ফুটবলে কাল ভয়ংকর এক দিন কেটেছে ক্লাবটির। রিয়াল মাদ্রিদের বালকদের কাছে ৩১-০ গোলে হেরেছে এসএডি ভিয়াভের্দে।

বিশ্বের অন্য অনেক ফুটবলশক্তির মতোই স্প্যানিশ ক্লাবগুলোও বালকবেলা থেকেই ভালো ফুটবলারদের অন্বেষণে নামে। সে সুবাদে বালক বিভাগেও দল আছে অনেকের। রিয়ালের এমনই দুটি দল হলো বেঞ্জামিন ‘এ’ ও ‘বি’। ৮ থেকে ৯ বছরের বালকদের নিয়ে গড়া এই দুই দল প্রেফেরেন্তে লিগে খেলে। ৯ বছর বয়সীদের এই লিগে কাল বেঞ্জামিন ‘এ’ প্রতিপক্ষকে ৩১ গোলে হারিয়েছে। যে হারের পর রিয়াল মাদ্রিদ ও স্প্যানিশ ফুটবলকে বর্তমান সংস্কৃতি নিয়ে ভেবে দেখতে বলেছে ভিয়াভের্দে।

প্রেফেরেন্তে লিগে ম্যাচের দৈর্ঘ্য ৪০ মিনিট। কাল ভিয়াভের্দের বিপক্ষে যেন প্রতি মিনিটেই গোল করতে নেমেছিল বেঞ্জামিন ‘এ’। প্রথম মিনিটে শুরু হয়েছিল গোল দেওয়া। ৭ মিনিট শেষে ৭-০। অষ্টম মিনিটে কোনো গোল হয়নি। ৯ থেকে ১৩ মিনিটে আরও ৫ গোল। এভাবে ১৯ মিনিটের মধ্যে ১৭-০ গোলে এগিয়ে যায় বেঞ্জামিন ‘এ’।

২০ থেকে ৩০ মিনিটেই একটু গতি কমেছিল। এ সময়ে শুধু চার গোল হয়েছে। ৩১ মিনিটে আবার শুর হলো গোলবন্যা। যোগ করা দুই মিনিটে দুই গোলসহ এ সময় হয়েছে আরও ১০ গোল। ৩১-০ গোলে শেষ হয়েছে ভিয়াভের্দের দুঃস্বপ্ন।

ইউরোপের অনেক স্থানেই ইদানীং বালকদের ফুটবলে অতিরিক্ত গোল করা নিরুৎসাহিত করা হয়। প্রতিপক্ষ হলেও শিশুমনে যেন আঘাত না পায় সে ব্যবস্থা করতে উৎসাহিত করা হয়। কিন্তু কাল রিয়ালের বেঞ্জামিন ‘এ’ দল সে পথে হাটেনি। তাই ক্ষোভ প্রকাশে টুইটারকেই বেছে নিয়েছে স্পেনের চতুর্থ স্তরে খেলা ভিয়াভের্দে।
টুইটারে ম্যাচের স্কোরকার্ড ও গোলদাতাদের নাম দিয়ে লিখেছে, ‘তৃণমূল পর্যায়ের ফুটবলে এমন পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের রাগ প্রকাশ করতে চাই। বড় ক্লাবগুলোর উচিত এমন পদ্ধতিতে খেলা যেন বড় স্কোরলাইন সৃষ্টি না হয় এবং দ্বিতীয়ত স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের উচিত ক্যাটাগরি পূণর্বিন্যাস করা।’

১১ গোল করা পুলিদো ও ১০ গোল করা ত্রিগো।
ছবি: রিয়াল মাদ্রিদ ওয়েবসাইট

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বড় ক্লাবগুলো থেকে নির্দেশ দেওয়া থাকে যেন গোল দেওয়ার চেয়ে পাসিংয়ে মনোযোগ দেওয়া হয়, অথবা নির্দিষ্ট একটা গোল করলে দলের স্ট্রাইকারকে তুলে নেওয়া হয়। স্পেনে এমন কোনো নিয়ম রাখা হয়নি। তাই গতকাল বেঞ্জামিন ‘এ’ দলের পুলিদো ১১ গোল করেছে। ত্রিগো করেছে ১০ গোল।

রিয়াল মাদ্রিদ নিজেরাও ব্যাপারটার গুরুত্ব বুঝতে পেরে ওয়েবসাইটে একাডেমি দলের সব খেলার স্কোরলাইন দিলেও দুটি ম্যাচের স্কোর দেয়নি। বেঞ্জামিন ‘বি’ কাল ৮-১ গোলে জয় পেয়েছে, সেটা তাই সবাই জানতে পেরেছে। কিন্তু বেঞ্জামিন ‘এ’ দলের স্কোরলাইন বলা হয়নি। ক্লাবের বিবৃতিতে শুধু বলা হয়েছে, ‘রুবেন বারিয়োসের (বেঞ্জামিন ‘এ’ কোচ) দল লিগের ম্যাচে ভিয়াভের্দের সান আন্দ্রেস বির বিপক্ষে জয় পেয়েছে।’

স্প্যানিশ ফুটবলের বয়সভিত্তিক ফুটবল লিগ বেশ নিচ থেকেই শুরু। ৬–৭ বছরের বালকদের জন্য যেমন একটি লিগ চালু আছে। ফুতবল সেভেন নামের সে লিগেও রিয়াল মাদ্রিদের প্রিবেঞ্জামিন দল খেলে। গতকাল প্রিবেঞ্জামিন দলও প্রায় একই ধরনের এক কাজ করেছে। ১৯-০ গোলে হারিয়েছে পোলিগোনো এইচ সান ব্লাসকে। ক্লাবের বিবৃতিতে সে ম্যাচের স্কোরলাইনও দেওয়া হয়নি।