৬০ বছর পর এমন হার, দোষ গরমের

৬০ বছর পর জয় এনে দিয়েছে যে গোলছবি: রয়টার্স

মিনিট দুয়েক আগেই মাঠে নেমেছিলেন। ইংল্যান্ড হয়তো আশায় ছিল, দারুণ কিছু করে অবদান রাখবেন রিস জেমস। চেলসি রাইটব্যাক অবদান রাখলেন বটে, সেটা দারুণ কিছু হলো হাঙ্গেরির জন্য। বক্সে হাঙ্গেরির জল্ট নেগিকে ফেলে টেনে ধরে জেমস পেনাল্টি উপহার দিলেন হাঙ্গেরিকে।

পেনাল্টিতে ইংল্যান্ড গোলকিপার পিকফোর্ডকে ফাঁকি দিতে বেগ পেতে হয়নি দমিনিক জবোস্লাইকে। শেষ পর্যন্ত সেই গোলেই হাঙ্গেরির ইতিহাস। নেশনস লিগে কাল নিজেদের মাঠ পুসকাস অ্যারেনায় ১-০ গোলের জয়টি ৬০ বছরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হাঙ্গেরির প্রথম।

আরও পড়ুন
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টা কত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেটা গোলের পর উল্লাসেই বোঝা গেছে
ছবি: রয়টার্স

আগের জয়টি ছিল ১৯৬২ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে। সে থেকে এই ৬০ বছরে দুই দলের দেখা হয়েছে ১৫ বার। ১৬তম বারে এসে জবোস্লাইরা এমন কিছু করে দেখালেন, যা গর্বিত করবে হাঙ্গেরির হয়ে ফুটবলের ইতিহাস রাঙানো ফেরেঙ্ক পুসকাসকেও। অবশ্য পুসকাসও ১৯৬২ বিশ্বকাপের জয়ের ভাগীদার নন, তত দিনে যে হাঙ্গেরি ছেড়ে স্পেনের হয়ে গিয়েছিলেন স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের কিংবদন্তি।

তা হাঙ্গেরির জন্য গর্বের জয়, ইংল্যান্ডের তো হতাশার। তাদের চোখে এই হারের দায় কার? হাঙ্গেরির গরম!

আরও পড়ুন
সুযোগ নষ্ট করেছেন কেইন
ছবি: রয়টার্স

ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট ম্যাচ শেষে তা-ই বললেন, ‘গরমটা একটা বড় ব্যাপার ছিল। খেলোয়াড়দের কাছ থেকে অনেক বেশিই শুষে নিয়েছে সেটি।’

৬৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে জবোস্লাইয়ের গোলের পর শেষ দিকে আন্দ্রাস শেফার দারুণ সুযোগ হাতছাড়া না করলে হাঙ্গেরির জয়ের ব্যবধান আরেকটু বড়ই হতো। যদিও পেনাল্টিটা নিয়েই আপত্তি আছে ইংল্যান্ড ডিফেন্ডার কনর কোডির, ‘একটু আশ্চর্যই হয়েছি, কারণ কেউ পেনাল্টির জন্য আবেদনই করেনি। তবে এখানে আমাদের নিজেদের ভুলই খুঁজতে হবে।’

গত ৩০ মার্চ আইভরিকোস্টের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের দলে বেশ কিছু বদল এনেছে ইংল্যান্ড। জ্যারড বাওয়েন ও জেমস জাস্টিনের অভিষেক হয়েছে। তবে এত বদলের কারণেই কি না, ইংল্যান্ড ম্যাচে সেভাবে দাপট দেখাতে পারেনি।

ম্যাচটা দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা ছিল
ছবি: রয়টার্স

যা-ও পেরেছে, তাতে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ইংল্যান্ডের ফরোয়ার্ডরা। ইংল্যান্ডের জার্সিতে ৫০তম গোলের খোঁজে থাকা হ্যারি কেইন বেশ কয়েকটি সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ। সাউথগেট অবশ্য বলছেন, ‘খেলোয়াড়দের ওপর খুব বেশি কঠোর হতে চাই না। এই ম্যাচগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।’

শিক্ষা যখন আলোচনায়, সে ক্ষেত্রে হাঙ্গেরির ফুটবল কর্তাদের জন্যও এই ম্যাচ কিছু রেখে যায়। ২০২০ ইউরোতে হাঙ্গেরির সমর্থকেরা মাঠে বর্ণবাদী ও সমকামবিদ্বেষী গান ধরার শাস্তি হিসেবে বুদাপেস্টে কাল ম্যাচটা দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা ছিল। তবু মূলত শিশু এবং তাদের অভিভাবকদের নিয়ে ৩৫ হাজার দর্শক মাঠে ঢোকার ব্যবস্থা করে হাঙ্গেরি। কিন্তু হলো কী? ম্যাচের আগে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা হাঁটু গেড়ে বর্ণবাদের প্রতিবাদ করার সময় হাঙ্গেরি গ্যালারি থেকে দুয়ো এসেছে!