‘আমরা আর্জেন্টিনা, আমরা সব সময় কষ্ট করে জিতি’
সৌদি আরবের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিত–অনাকাঙ্ক্ষিত হারে বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল আর্জেন্টিনার। প্রথম ম্যাচেই পা হড়কে খাদের কিনারে চলে গিয়েছিল দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এরপর অবশ্য ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখেছে আর্জেন্টাইনরা। টানা তিন জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে লিওনেল মেসির দল।
আল রাইয়ানের আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে গতকাল রাতে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২–১ ব্যবধানে জিতেছে আর্জেন্টিনা। চোটের কারণে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে খেলতে পারেননি আনহেল দি মারিয়া। ৩৪ বছর বয়সী তারকা উইঙ্গার না থাকায় দলে পরিবর্তন আনতে হয় কোচ লিওনেল স্কালোনিকে। দি মারিয়া না থাকায় তাঁকে হুলিয়ান আলভারেজের পজিশনেও পরিবর্তন আনতে হয়েছে। দি মারিয়ার জায়গা রাইট উইংয়ে তিনি খেলান সাধারণত লেফট উইংয়ে খেলা আলভারেজকে। আর লেফট উইংয়ে খেলেন পাপু গোমেজ।
তবে দুই ম্যাচ পর ফেরা গোমেজ খুব একটা প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। উল্টো চোটে পড়ে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মাঠ ছেড়েছেন। ম্যাচ শেষে আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসকে চোটের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়েছেন সেভিয়ার এই উইঙ্গার, ‘আমার অ্যাঙ্কেল মচকে গেছে। খেলা চালিয়ে যেতে পারছিলাম না। মনে হয়েছিল, আমার বদলে অন্য কেউ নামলে ভালো করবে।’
শেষ আটে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হবে আর্জেন্টিনাকে। শুক্রবার রাতে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে যে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস। তিনবার বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা ডাচরা আছে দারুণ ছন্দে। অপরাজিত থেকে গ্রুপ পর্ব পেরোনোর পর শেষ ষোলোয় যুক্তরাষ্ট্রকে ৩–১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। গোমেজের বিশ্বাস, নেদারল্যান্ডস ম্যাচের আগেই সেরে উঠবেন, ‘সেরে উঠতে পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছি। আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে।’
মেসি আর আলভারেজের গোলে কাল ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। ৭৭ মিনিটে এনজো ফার্নান্দেজের আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান কমিয়ে ম্যাচে ফেরার আভাস দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। শেষ দিকে তো বারবার আক্রমণে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের ভয় পাইয়ে দিয়েছিল ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ৩৮ নম্বরে থাকা দলটি। দুই মার্তিনেজ ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো আর গোলরক্ষক এমিলিয়ানো অবিশ্বাস্য দুটি সেভ না করলে ম্যাচটাকে অতিরিক্ত সময়ে নিতে পারত গ্রাহাম আরনল্ডের দল।
উদ্বিগ্ন সেই মুহূর্তগুলো ডাগআউটে বসে দেখেছেন গোমেজ। সেটার ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে, ‘যখন আপনি ম্যাচ শেষ না করে ফিরবেন, হুটহাট একটা গোল আপনার পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে। জানতাম, ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকাও স্বস্তির বিষয় নয়। আমাদের আরও গোল করা উচিত ছিল। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, শেষ দিকে সংগ্রাম করলেও আমরা জিতেছি। আমরা আর্জেন্টিনা, আমরা সব সময় কষ্ট করে জিতি।’
সৌদি আরবের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ হারকে এখন ‘শাপেবর’ মনে হচ্ছে গোমেজের, ‘প্রথম ম্যাচ হেরে ভালোই হয়েছে। কারণ, ওটা আমাদের জন্য সতর্কবার্তা ছিল। ওই ম্যাচ আমাদের জাগিয়ে তুলেছে। ভুলগুলো চিহ্নিত করে শোধরানোর সুযোগ করে দিয়েছে।’