২০২৮ অলিম্পিকে সোনা জিততে চান রোমান সানা

টোকিও অলিম্পিকে রোমান সানাছবি: রয়টার্স

স্বপ্নের সমাধি, নাকি স্বপ্নের শুরু? টোকিও অলিম্পিকে আর্চারি থেকে রোমান সানার বিদায়কে কীভাবে দেখা যায়। রোমান এবারের অলিম্পিকেই পদক জিতে যাবেন—এমন স্বপ্নই বা কজন দেখেছে!

হ্যাঁ, গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের এই তিরন্দাজ যেভাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দেশকে গর্বিত করে আসছিলেন, তাতে তাঁকে ঘিরে একটা স্বপ্নের মায়াজাল বোনা হয়ে গিয়েছিল। বিদায়ের পর তিনি প্রতিক্রিয়ায় যা বলছেন, সেটিকে নতুন এক স্বপ্নের শুরু হিসেবে দেখাই যায়।

ছেলেদের রিকার্ভ–এককে শুরুটা দারুণ করেছিলেন রোমান। গ্রেট ব্রিটেনের প্রতিযোগী টম হলের বিপক্ষে জিতে উঠে গিয়েছিলেন দ্বিতীয় রাউন্ডে। কিন্তু মাত্র ৫২ মিনিট আনন্দ স্থায়ী হয়েছে।

দ্বিতীয় রাউন্ডে কানাডার প্রতিপক্ষ ক্রিসপিন ডুয়েনাসের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে হেরেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত রোমানের হৃদয় ভেঙে ৬–৪ সেট পয়েন্টে ম্যাচটা জিতে নেন ডুয়েনাস।

শেষ শটে নিষ্পত্তি হয় রোমান–ডুয়েনাস লড়াই
ছবি: রয়টার্স

রোমান–ডুয়েনাস লড়াই নিষ্পত্তি হয়েছে শেষ শটে। আগের চার সেটের দুটি করে জিতেছিলেন দুজন। শেষ শটে ডুয়েনাস ৯ মেরেছিলেন বলেই রোমানকে মারতে হতো ১০। অনেকটা ক্রিকেটে শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে দলকে জেতানোর মতো।

রোমান সেই চাপটা সামলাতে পারেননি। মেরে বসেন ৮। ৯ মারলেও খেলাটা টাইব্রেকে গড়াতে পারত। শেষ অবধি বাংলাদেশি তিরন্দাজের সঙ্গী আক্ষেপ।

ওয়ার্ল্ড আর্চারির টুইটার পেজ রোমানের মন্তব্য প্রকাশ করেছে ম্যাচ শেষে। সেখানে তিনি জানিয়েছেন টোকিও অলিম্পিক থেকে বিদায়ের প্রতিক্রিয়া। বাংলাদেশি তিরন্দাজ অবশ্য নিজের আক্ষেপটা গোপন রাখেননি, ‘মাত্র ১০ পয়েন্টের জন্য হেরে গেলাম। খারাপ লাগছে। এ ম্যাচে আমার জেতার খুব ভালো সুযোগ ছিল।’

এর পরপরই নিজের প্রত্যয়ের কথা জানিয়েছেন রোমান, ‘আমি ২০২৪ অলিম্পিকেও খেলতে চাই। আমার মূল লক্ষ্য ২০২৮ অলিম্পিকে সোনা জয়। আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়েই চেষ্টা করব।’

অলিম্পিকের সোনা অনেক দূরের ব্যাপার, একটি পদকই বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় স্বপ্ন। ১৯৮৪ থেকে এবারের আগপর্যন্ত ৯টি অলিম্পিকে (১৯৮৪, ১৯৮৮, ১৯৯২, ১৯৯৬, ২০০০, ২০০৪, ২০০৮, ২০১২, ২০১৬) অংশ নিয়ে পদক দূরের বিষয় হয়েই আছে বাংলাদেশের জন্য।

বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ হয়েও অলিম্পিকে পদক জিততে না পারা অনাকাঙ্ক্ষিত তালিকায় নাম আছে বাংলাদেশের। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের কোনো সম্ভাবনাও অদূর ভবিষ্যতে দেখতে পাচ্ছেন না খেলাপ্রেমীরা। এমন একটা অবস্থায় রোমান সানা স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন। স্বপ্নটা যদি সত্যি হয় কোনো দিন, সেটি হবে দারুণ একটা ব্যাপার।