ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে ঢাকায় লড়াই করতে এসেছি, বললেন রাশা

ফিলিস্তিনের আর্চার রাশা ইয়াহিয়া আহমেদছবি: শামসুল হক

হেমন্তের সকালে পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে অনুশীলন করছিলেন ফিলিস্তিনের আর্চার রাশা ইয়াহিয়া আহমেদ। চোখে কালো রোদচশমা, মাথায় সাদা হ্যাট আর পেছনের তির রাখা ব্যাগে ঝোলানো ফিলিস্তিনের জাতীয় পতাকা। সবকিছু মিলিয়ে তাঁর উপস্থিতি যেন আলাদা আভা ছড়াচ্ছিল।

৮-১৪ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ২৪তম এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ। আসর সামনে রেখে প্রথমবারের মতো ঢাকায় এসেছেন রাশা। তিনি নারী রিকার্ভ এককে অংশ নেবেন। তাঁর সঙ্গে দলগতভাবে খেলবেন তিন পুরুষ সদস্য—আলী আলাহামাদ খালেদ, আওয়াদ সামি ও বাদওয়ান ওসায়েদ। তাঁরা খেলবেন কম্পাউন্ড ইভেন্টে।

রাশা বলেন, ‘এখানে শুধু আসার জন্যই আসা নয়, ভালো পারফরম্যান্স করা এবং লড়াই করে ভালো কিছু করার লক্ষ্যেই আমরা এখানে এসেছি।’

পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে আজ অনুশীলন করেছেন রাশা ইয়াহিয়া আহমেদ
ছবি: শামসুল হক

গাজায় জন্ম হলেও রাশা পড়াশোনা করেছেন ওমানে। তিনি মাসকটের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে আরব আমিরাতে চাকরি করেন। মাত্র তিন বছর আগে আর্চারিতে হাতেখড়ি তাঁর।

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন দক্ষিণ কোরিয়া, কাতারসহ বিভিন্ন দেশে। ঢাকায় এসে বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের আতিথেয়তায় তিনি মুগ্ধ, ‘আমি তো এখানে কোরিয়ার থেকে ভিন্ন কিছু অনুভব করছি না। সবই আন্তর্জাতিক মানের।’

আরও পড়ুন

গাজার বর্তমান পরিস্থিতি রাশার মনে সব সময় প্রভাব ফেলে। তিনি বলেন, ‘গাজা আমার শহর। দেশের জন্য সরাসরি লড়াই করতে পারছি না, কিন্তু দেশের পতাকা বহন করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া আমাদের জন্য আবেগের মুহূর্ত। খেলাটা উপভোগ করি, কিন্তু ফিলিস্তিনকে প্রতিনিধিত্ব করার অনুভূতি পরিমাপ করা যায় না।’

রাশার (বাঁয়ে) জন্ম ফিলিস্তিনের গাজায়
ছবি: শামসুল হক

একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে রাশা বলেন, ‘ফিলিস্তিনের বাইরে দেশের হয়ে খেলাটা এক অনন্য আবেগ। নিজের দেশে অনুশীলন করতে না পারলেও এই পোশাক পরা ও পতাকা বহন করা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। খেলাটা উপভোগ করি, কিন্তু দেশের প্রতিনিধিত্ব করার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’

বাংলাদেশের মানুষের আন্তরিক সমর্থন রাশাকে আপ্লুত করেছে। তিনি বলেন, ‘সবাই আমাদের নিজেদের করে নিয়েছে। আশা করি, একদিন ইনশা আল্লাহ আমরা বাংলাদেশের মানুষকে ফিলিস্তিনে স্বাগত জানাব।’

ইরাক ও সিরিয়ার আর্চারের সঙ্গে আলোচনায় রাশা
ছবি: শামসুল হক

ফিলিস্তিন দলে চারজন আর্চার এসেছেন, একজন কোচ। এই চারজনসহ ১০ দেশের প্রায় ১০০ আর্চার-কর্মকর্তার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও এশিয়ান আর্চারি ফেডারেশনের সহসভাপতি কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ।