‘৫ বছরে ভারত-অস্ট্রেলিয়া খেলবে ৩০০ ম্যাচ, আমরা ৫০-৬০টি’

জুনিয়র হকি বিশ্বকাপে চ্যালেঞ্জার ট্রফি জয়ের পর বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের আনন্দএশিয়ান হকি ফেডারেশন

আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি ভালো খেলেছে তারা। গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৫–৩ আর ফ্রান্সের কাছে ৩–২ গোলের হার, কোরিয়ার সঙ্গে ড্র। কোরিয়াকে আরেকবার হারিয়েছে, ওমানকে দাঁড়াতেই দেয়নি। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত। সত্যি, এতটা আমরা আশা করিনি। আমিরুলের পারফরম্যান্সও অসাধারণ। এটাও ঠিক, দলের অন্যরা আমিরুলের ওপর আস্থা রেখেছে। সেও সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছে। পুরো দলই দারুণ খেলেছে।
আমরা বিশ্বকাপের জন্য ক্যাম্প করেছি, বিদেশি কোচ এনেছি; এই রীতি নতুন নয়। কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের আগেই আমাদের বেশি তৎপর দেখা যায়। এরপর আবার সবাই চুপচাপ। জাতীয় দলের বেলায়ও একই। আমরা অনেক ভালো ভালো সুযোগ তৈরি করেছি। কিন্তু টুর্নামেন্ট শেষ হলে দলটা আবার অগোছালো হয়ে যায়। লিগ নেই, কোনো ম্যাচ হয় না। এই পারফরম্যান্স ধরে রাখতে হলে ম্যাচ খেলার কোনো বিকল্প নেই।

হকি তারকা রাসেল মাহমুদ জিমি
প্রথম আলো

আমার ২২ বছরের ক্যারিয়ারে অনেক কিছু শুনেছি—এটাই টার্নিং পয়েন্ট, এখনই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ। কিন্তু পরে আর কারও কিছু মনে থাকে না। এদের যদি পরিচর্যা না করেন, ভবিষ্যতে ভালো খেলোয়াড় কোথা থেকে পাবেন? ম্যাচ না খেললে কখনোই আপনি পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারবেন না, উন্নতি করতে পারবেন না।
অস্ট্রেলিয়া বলেন বা ভারত, তাদের যেসব জুনিয়র এই বিশ্বকাপে খেলছে তারাই কিন্তু জাতীয় দলে খেলবে। আজ থেকে পাঁচ বছর পর তাদের ম্যাচ খেলার পরিসংখ্যান দেখবেন, আমাদেরটাও দেখবেন। পার্থক্যটা আকাশ–পাতাল হবে। দেখা যাবে তারা তত দিনে ২০০–৩০০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ফেলেছে, আর আমাদের এরা খেলবে হাতে গোনা ৫০ বা ৬০টি। তাহলে উন্নতিটা কীভাবে আশা করেন? বেশি বেশি ম্যাচ যেন তারা পায়, সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

আরও পড়ুন
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস
এফআইএইচ

দলটা যেহেতু বিশ্বকাপে ভালো করেছে, পরবর্তী টুর্নামেন্টগুলোয় আরও নজর দিতে হবে। বেশি বেশি আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্ট খেলানো উচিত। ফেডারেশনে দায়িত্বে যে–ই থাকুন, বেশি বেশি সিরিজ খেলা, এফআইএইচের কাছে অনুমতি নিয়ে বেশি বেশি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলা। তবে অবশ্যই প্রতিপক্ষ ভালো হতে হবে। তাহলে আমাদের র‍্যাঙ্কিং পয়েন্ট বাড়বে, দলও উন্নতি করবে, এ ছাড়া সম্ভব নয়। একটা টুর্নামেন্টের আগে তিন মাস ক্যাম্প করে আবার পুরো বছর কিছু না করা—এটা ঠিক নয়।
আমাদের লিগেরও কোনো সম্ভাবনা থাকে না। কবে লিগ হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপি আছে বলে আমরা খেলোয়াড় পাচ্ছি। শুধু বিকেএসপি–নির্ভর হলে তো চলবে না। স্থানীয় খেলোয়াড়ও হান্ট করা দরকার।


লেখক: জাতীয় হকি দলের সাবেক অধিনায়ক।