সাকিবের দলকে প্রথম জয় এনে দেওয়া শাহবাজের সঙ্গে সেলফির হিড়িক

মোনার্ক মার্ট পদ্মার জয়ের পর দলটির পরামর্শক শাহবাহ আহমেদের (বাঁয়ে) সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের সাবেক খেলোয়াড় রফিকুল ইসলাম কামালসৌজন্য ছবি

ঢাকা এসে ভক্তদের অভিনন্দনে সিক্ত হলেও কদিন ধরে মনটা খারাপই ছিল শাহবাজ আহমেদের। ২৮ অক্টোবর শুরু হওয়া দেশের প্রথম ফ্র্যাঞ্জাইজি হকি লিগে তাঁর দল মোনার্ক মার্ট পদ্মা জিততে পারছিল না। উল্টো মাঠে দেখা দিয়েছিল ছন্নছাড়া রূপে। প্রথম ম্যাচে ৩-০ গোলে পিছিয়ে শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলে হেরেছিল রুপায়ন কুমিল্লার কাছে। দ্বিতীয় ম্যাচে একমি চট্টগ্রামের সামনে উড়ে গিয়েছিল ৭-১ গোলে।

হকির কিংবদন্তি শাহবাজ আহমেদ যে দলের পরামর্শক, যে দলের মালিকানা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের, সেই দল কিনা এভাবে হারছিল! ব্যাপারটা দেখতেও খাপছাড়া লাগছিল। তাহলে কি মাঠে শাহবাজের কোনো পরামর্শ কাজে লাগাতে পারছিলেন না রাসেল মাহমুদ জিমিরা? ম্যাচের স্কোরলাইন দেখে সে প্রশ্ন আসছিলই।

গোলের পর রাসেল মাহমুদ জিমির উচ্ছ্বাস

অবশেষে তৃতীয় ম্যাচে এসে ঘুরে দাঁড়াল মোনার্ক পদ্মা। প্রথম দুই ম্যাচে হেরে যাওয়া আরেক দল সাইফ পাওয়ার খুলনাকে আজ ৬-৩ গোলে বিধ্বস্ত করেছে শাহবাজের দল। আর এতেই ম্যাচ শেষে মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে সাবেক পাকিস্তানি তারকাকে পাওয়া গেল হাসিমুখে। এ সময় শুভানুধ্যায়ীরা এসে তাঁকে অভিনন্দন জানান। সুযোগ পেয়ে পুরোনো দিনের স্মৃতি আওড়ান কেউ কেউ।

আজ যেমন ম্যাচের পর মাঠের পাশেই সাবেক জাতীয় হকি খেলোয়াড় আরিফুল হক, মাহবুব এহসানরা ঘিরে ধরলেন ‘হকির ম্যারাডোনাকে’। শুভেচ্ছা বিনিময় করে তাঁরা নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি মোহামেডানের জার্সিতে শাহবাজের ঢাকার লিগে খেলার স্মৃতি তুলে আনেন। তারপর চেনা-অচেনা অনেকে এসে সেলফি তোলেন শাহবাজের সঙ্গে। সাবেক বিশ্বসেরা হকি তারকা হাসিমুখে সবার আবদার মেটান। এতটুকু বিরক্তি নেই তাঁর। বোঝাই যায় না পরপর দুটি বিশ্বকাপে এই মানুষটি সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন।

প্রথম দুই হারের পর এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন, ‘টিম স্পিরিটটা তৈরি হতে সময় লাগছে। খেলতে খেলতে এটা তৈরি হয়ে যাবে।’ আর আজ জেতার পর এক ফাঁকে বললেন, ‘প্রথম দুই ম্যাচে আমাদের সমস্যা হয়েছিল একটা জায়গায়। দেশি ও বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো হয়নি। তবে সেই সমস্যা কাটিয়ে দেশি ও বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে বোঝাপড়া আজ ভালো হয়েছে। দেশিদের মধ্যে বিশেষভাবে জিমি ও নাইম ভালো খেলেছে। এটাই আসলে জয়ের আসল রহস্য। এটা খুব উৎসাহব্যঞ্জক যে আমরা জয়ের মুখ দেখেছি।’

শাহবাজ এর বেশি কিছু বলতে পারলেন না এই প্রতিবেদককে। আবার সেই সেলফিশিকারিদের খপ্পরে পড়ে তাঁদের আবদার মেটাতে হলো। সেই দলে পুরান ঢাকার কয়েকজন ছিলেন, যাঁরা আবার উর্দুতে কথা শুরু করেন শাহবাজের সঙ্গে। শাহবাজও উর্দু, ইংরেজি মিলিয়ে কথা বলেন ভক্তদের সঙ্গে।

পরিবেশটা এমন দাঁড়াল যে কে জিতেছ বা হেরেছে, তাতে কারও ভ্রুক্ষেপ নেই। শাহবাজ আহমেদকে কাছে পেয়ে ছবি তোলা, একটু কথা বলা, এগুলোই বেশি দেখা গেল মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইটের উজ্জ্বল আলোয়। এই হাসি ধরে রেখে দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে চান বিশ্ব হকিতে সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পাওয়া এই তারকা।