স্বামী দলনেতা, স্ত্রী উপ দলনেতা, ইতালিতে কোন গেমসে যাচ্ছে বাংলাদেশ

ফ্লোরবল দলের সঙ্গে কামরুন নাহার ডানা ও আবুল হাশেমসংগৃহীত ছবি

একই গেমসে স্বামী দলনেতা, স্ত্রী উপ দলনেতা। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে অতীতে কখনো এমন হয়নি। সেদিক থেকে এটি রেকর্ডও বটে।

ইতালির তুরিনে ৮ মার্চ শুরু হতে যাওয়া শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ১২তম স্পেশাল অলিম্পিকস ওয়ার্ল্ড উইন্টার গেমসের বাংলাদেশ দলে স্বামী-স্ত্রীকে দেখা যাবে প্রায় একই ভূমিকায়। দুজনের নামটাও বলে দেওয়া যাক। আবুল হাশেম ও কামরুন নাহার ডানা।

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে দুজনই পরিচিত মুখ। ব্যাডমিন্টনে পুরুষ বিভাগে প্রথম ট্রিপল ক্রাউন পেয়েছেন আবুল হাশেম, সেটি ১৯৯০ সালে ক্যারিয়ারের শেষ দিকে। ডানা ট্রিপল ক্রাউন পেয়েছেন তিনবার। তিনবার জাতীয় চ্যাম্পিয়নও হয়েছেন ডানা। আবুল হাশেমও তিনবার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। দুজনে জাতীয় প্রতিযোগিতায় মিশ্র দ্বৈতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।

১৯৭৯ সালে খেলোয়াড় হিসেবে আমরা চীনে গিয়েছিলাম ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে। এরপর কয়েকবার যাওয়া হয়েছে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে। ১৯৯৪ সালে সর্বশেষ একই আসরে যাই একসঙ্গে। হাশেম ছিল খেলোয়াড়, আমি আম্পায়ার। ৩১ বছর পর আবার এক সফরে আমরা।
কামরুন নাহার ডানা

হাশেদ-ডানা সংসার পেতেছেন ১৯৮৫ সালে। দুজনই জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত। আবুল হাশেম বাংলাদেশ স্পেশাল অলিম্পিকসের ক্রীড়া পরিচালক। ডানা এই সংস্থার একজন পরিচালক। সেই সুবাদেই তাঁদের এই সফরে যাওয়া।

ক্রীড়া দম্পত্তি আবুল হাশেম ও কামরুন নাহার ডানা
সৌজন্য ছবি

দুজনের একসঙ্গে বাংলাদেশের কোনো ক্রীড়াদলের সঙ্গী হওয়া প্রসঙ্গে ডানা বলেন, ‘১৯৭৯ সালে খেলোয়াড় হিসেবে আমরা চীনে গিয়েছিলাম ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে। এরপর কয়েকবার যাওয়া হয়েছে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে। ১৯৯৪ সালে সর্বশেষ একই আসরে যাই একসঙ্গে। হাশেম ছিল খেলোয়াড়, আমি আম্পায়ার। ৩১ বছর পর আবার এক সফরে আমরা। অফিশিয়াল হিসেবে এই প্রথম কোনো ক্রীড়া সফরে একসঙ্গে যাচ্ছি দুজনে। সেটাও বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিয়ে।’

১০২ দেশের তিন হাজারের বেশি অ্যাথলেট নিয়ে শীতকালীন অলিম্পিক গেমস হচ্ছে। ৮টি ডিসিপ্লিন হলো আলপাইন স্কিইং, ক্রস-কান্ট্রি স্কিইং, ড্যান্সস্পোর্ট, ফিগার স্কেটিং, ফ্লোরবল, শর্ট ট্র্যাক স্পিড স্কেটিং, স্নোবোর্ডিং, স্নোশুজ।

আরও পড়ুন

যেসব দেশে বরফ নেই, সেসব দেশের জন্য রাখা হয়েছে ফ্লোরবল। বাংলাদেশ এই একটি খেলাতেই অংশ নেবে। গেমসের গত আসরে ফ্লোরবলে বাংলাদেশ নিজেদের ক্যাটাগরিতে সোনা পেয়েছিল। বিশেষ শিশুদের উপযোগী এই খেলাটা অনেকটা হকির মতো। মাঠ ছোট, ছোট গোলপোস্ট। বলটা বেশ নরম। বাংলাদেশ দল বিকেএসপির বাস্কেটবল কোর্টে অনুশীলন করেছে। সেখানেই হয়েছে আবাসিক ক্যাম্প। আগামীকাল শুক্রবার তুরিন রওনা দেবে বাংলাদেশ। ফিরবে ১৭ মার্চ।

যেসব দেশে বরফ নেই, সেসব দেশের জন্য রাখা হয়েছে ফ্লোরবল। বাংলাদেশ এই একটি খেলাতেই অংশ নেবে। গেমসের গত আসরে ফ্লোরবলে বাংলাদেশ নিজেদের ক্যাটাগরিতে সোনা পেয়েছিল।

গেমসের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি তিনজন খেলোয়াড়ের জন্য একজন কোচ থাকতে হয়। বাংলাদেশ আটজন খেলোয়াড়ের সঙ্গী দুজন কোচ। একজন ডাক্তার। একজন স্টাফ রয়েছেন। সঙ্গে শেফ দ্য মিশন ও উপ শেফ দ্য মিশন মিলিয়ে দলের সদস্য সংখ্যা ১৪।
গ্রীষ্মকালীন স্পেশাল অলিম্পিকে বাংলাদেশ দলটা হয় অনেক বড়। প্রায় ১৫০ জনের বেশি থাকে সদস্য। গ্রীষ্মকালীন স্পেশাল অলিম্পিক থেকে ভূরি ভূরি পদক নিয়ে আসে বাংলাদেশ। ৩৫ থেকে ৪০টি সোনা আসে। শীতকালীন অলিম্পিকটা সেদিক থেকে ভিন্ন। এটি মূলত বরফ প্রধান দেশগুলোর গেমস।

আরও পড়ুন