রাজত্ব ধরে রেখেছেন নোশিন, জাতীয় মহিলা দাবায় হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন

মহিলা দাবায় দ্বিতীয় কোনো খেলোয়াড় হিসেবে টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কীর্তি গড়লেন নোশিন আনজুমদাবা ফেডারেশন

জাতীয় মহিলা দাবার মুকুট এবারও নোশিন আনজুমের মাথায়। টানা তৃতীয়বারের মতো তিনি জিতলেন এই খেতাব।
আজ বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের ক্রীড়া কক্ষে অনুষ্ঠিত একাদশ ও শেষ রাউন্ডে ওয়ারসিয়া খুশবুর সঙ্গে ড্র করে শিরোপা নিশ্চিত করেন নোশিন। মাত্র ছয় চালেই ড্রয়ের প্রস্তাব দেন তিনি, খুশবুও তাতে রাজি হন।
১১ রাউন্ডের প্রতিযোগিতায় নোশিন জিতেছেন ৭টি ম্যাচে, ড্র ৩টি, হেরেছেন মাত্র ১টিতে—কুমিল্লার মহিলা ক্যান্ডিডেট মাস্টার নুশরাত জাহান আলোর কাছে। সব মিলিয়ে তাঁর সংগ্রহ ৮.৫ পয়েন্ট। এই জয়ে দেশের মহিলা দাবায় দ্বিতীয় কোনো খেলোয়াড় হিসেবে টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কীর্তি গড়লেন নোশিন আনজুম।

১৯৭৯ সালে জাতীয় মহিলা দাবা শুরু হওয়ার পর রানী হামিদ প্রথম ছয়বার টানা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। পরে ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আবারও জেতেন টানা তিনবার। এবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন নোশিন। ২০২২ সালে তিনি প্রথমবার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হন। ২০২৩ সালে প্রতিযোগিতা হয়নি। এরপর ২০২৪ ও ২০২৫—দুই বছরই তাঁর হাতে উঠল শিরোপা।

দাবাড়ু নোশিন আনজুম
দাবা ফেডারেশন

চ্যাম্পিয়ন হয়ে উচ্ছ্বসিত নোশিন বললেন, ‘ভালো লাগছে। আশা করেছিলাম, হ্যাটট্রিকটা যেন করতে পারি। তবে আলোর কাছে হেরে হতাশ হয়েছিলাম। আম্মা সাহস দিয়েছেন। বলেছেন, আলোও পয়েন্ট হারাতে পারে। এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দটা আলাদা। সামনে দাবা অলিম্পিয়ার্ড আছে, জাতীয় দাবায় সেরা পাঁচে থাকার সুবাদে সেখানে খেলার সুযোগ নিশ্চিত হয়েছে। এ জন্যই সবচেয়ে ভালো লাগছে।’

আরও পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগে পড়ছেন নোশিন। পড়ার চাপের ভেতর দাবা খেলা সহজ নয়। এই জাতীয় প্রতিযোগিতার জন্য দুটি পরীক্ষা দিতে পারেননি। আগেই বিভাগের কাছে দরখাস্ত দিয়েছিলেন। জানালেন, আজ থেকেই আবার ক্লাসে ফিরবেন।

দাবাড়ু নোশিন আনজুম
দাবা ফেডারেশন

নোশিনের বর্তমান রেটিং ১৯৯৯। হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হলেও তিনি এখনো মহিলা ফিদে মাস্টার। মহিলা আন্তর্জাতিক মাস্টার হতে হলে লাগবে তিনটি নর্ম ও ২২০০ রেটিং—নোশিনের আছে দুটি নর্ম। আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতলে ২০০০ রেটিং থাকলেও আন্তর্জাতিক মাস্টার হওয়া যায়। দ্রুতই সেই স্বপ্ন পূরণ করতে চান নোশিন। আর সবচেয়ে বড় স্বপ্ন—দেশের প্রথম মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া।

আরও পড়ুন