‘জীবনজালের এপার-ওপার’-এ কিংবদন্তি লিনুর গল্প
দেশের টেবিল টেনিসের কিংবদন্তি জোবেরা রহমান লিনু তাঁর বর্ণিল ক্যারিয়ারের নানা মুহূর্ত ও টেবিল টেনিসের সঙ্গে কাটানো আলো-আঁধারের দিনগুলো নিয়ে লিখেছেন আত্মজীবনীমূলক বই ‘জীবনজালের এপার-ওপার’। আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বইটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রকাশনা উৎসবে অতিথি ছিলেন লিনুর বড় বোন টেবিল টেনিসের প্রথম জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মুনিরা মোর্শেদ হেলেন, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক কামরুন নাহার ডানা, দেশের প্রথিতযশা ক্রীড়া সাংবাদিক কামরুজ্জামান এবং পাক্ষিক ম্যাগাজিন ক্রীড়াজগতের সম্পাদক দুলাল মাহমুদ।
১৯৭৩ সালে মাত্র ৯ বছর বয়সে টেবিল টেনিসের সঙ্গে পথচলা শুরু হয় লিনুর। বড় বোন হেলেনকে দেখে এই অঙ্গনে আসা লিনু অল্প দিনেই তারকা বনে যান। ১৯৭৭ সালে জাতীয় আসরে নেমেই সেরা হয়েছিলেন। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। একের পর এক সেরার পুরস্কার জেতা লিনুর শোকেসে জমা পড়ে ১৬ বার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্মারক। ধারাবাহিক সাফল্যের পুরস্কার হিসেবে ২০০২ সালের মে মাসে নাম লেখান গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে।
ঝলমলে সেই ক্যারিয়ারের উথান–পতনের অধ্যায়গুলো নিয়ে লেখা লিনুর ‘জীবনজালের এপার-ওপার’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে এসে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়নে ডানা। ব্যাডমিন্টনে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া সাবেক এই তারকা লিনুর সঙ্গে কাটানো স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, ‘লিনুকে আমি সেই ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি। টেবিল টেনিসের প্রতি তার এতটা ভালো লাগা বলে বোঝানো যাবে না। ১৬ বার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া, এটা অনেক বড় ব্যাপার!’
ক্রীড়াজগতের সম্পাদক দুলালও তাঁর বক্তব্যে অতীতের স্মৃতিচারণা করেন, ‘প্রকাশনা উৎসবে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এই লিনুকে আমরা অনেক আগে থেকেই চিনি। আমাদের শৈশবে চৌহদ্দি ছিল খুবই সীমিত—এই ফুটবলময়, ডানাময়, লিনুময়।’
অনুষ্ঠানজুড়েই ছিল লিনু আর তাঁর বই নিয়ে এমন আলোচনা। প্রখ্যাত এই টেবিল টেনিস খেলোয়াড়ও মুগ্ধ হয়ে সবার কথা শুনেছেন। সবশেষে সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে বইটি কেনার অনুরোধ জানিয়েছেন, ‘বাবা বেঁচে থাকলে আজ অনেক খুশি হতেন। তাঁর কারণে আমি আজকের লিনু। আসলে বাবাকে নিয়ে বলতে গেলে শেষ হবে না। একটা বই লেখা যাবে তাঁকে নিয়ে। যাহোক, আমার এই বইয়ে কিছু প্রেমের কথা আছে, ভালোবাসার কথা আছে, দুঃখকথা আছে, বেদনার কথা আছে। আমি কোনো কিছু লিখতে কার্পণ্য করিনি। আমার বিশ্বাস, সবাই বইটি কিনবেন এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মন দিয়ে পড়বেন।’
১৯৭৪ থেকে ২০০২। দীর্ঘ ২৮ বছরের ক্যারিয়ারের আশা–নিরাশার গল্প উঠে আসা বইটি প্রকাশ করেছে প্রথমা প্রকাশন। বইটি অমর একুশে বইমেলার ছয় নম্বর প্যাভিলিয়নে পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া বাতিঘর ও বেঙ্গল বুকসেও বইটি পাওয়া যাবে। অনলাইনে অর্ডার করা যাবে প্রথমা ডটকম, বাতিঘর ডটকম ও রকমারি ডটকমে।