অলিম্পিকের শহরে থাকবে না গৃহহীনরা

প্যারিসের হোটেল ডি ভিলা সিটি হলের সামনে অলিম্পিক রিংছবি: রয়টার্স

আগামী বছর ২৬ জুলাই থেকে প্যারিসে শুরু হবে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক। আসরটি সামনে রেখে রাজধানী প্যারিস থেকে গৃহহীন জনসাধারণকে শহরের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে ফ্রান্স সরকার। তবে ফ্রান্সের আঞ্চলিক শহর ও গ্রামের প্রশাসকেরা এই পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন। কারণ, প্যারিস থেকে গৃহহীন যেসব মানুষকে উচ্ছেদ করা হবে, তাঁদের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে সেসব শহর আর গ্রামেই।

গত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ফ্রান্সের সরকার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ‘আঞ্চলিকভাবে অস্থায়ীভাবে থাকার জায়গা’ তৈরির নির্দেশ দেয়। প্যারিস থেকে যাঁদের বের করে দেওয়া হবে, তাঁদের জন্যই ব্যবস্থাটা নিতে চায় সরকার। এসব মানুষের মধ্যে অনেক অভিবাসীও আছেন।

ফ্রান্সের গৃহায়ণমন্ত্রী অলিভিয়ের ক্লেইন এ মাসের শুরুতে দেশটির আইনসভায় বিষয়টি বুঝিয়ে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, প্রয়োজনেই গৃহহীন মানুষদের প্যারিসের বাইরে পাঠাতে হবে। কারণ, সেপ্টেম্বরে রাগবি বিশ্বকাপ এবং ২০২৪ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিক সামনে রেখে প্যারিসে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হবে।

আইফেল টাওয়ারের সামনে নিরাপত্তাকর্মীরা।
ছবি: রয়টার্স

প্যারিসের কম খরচে থাকার মতো হোটেলগুলোকে বর্তমানে ফরাসি সরকার গৃহহীনদের থাকার জন্য কাজে লাগাচ্ছে। কিন্তু রাগবি বিশ্বকাপ ও অলিম্পিককে সামনে রেখে সেসব হোটেলের মালিকেরা অন্য পরিকল্পনা করেছেন। খেলা দেখতে আসা ক্রীড়াপ্রেমী ও পর্যটকদের তখনকার বাজারমূল্যে কামরা ভাড়া দিতে চান তাঁরা।

আরও পড়ুন

তবে গৃহহীন থাকার জন্য যেসব জায়গা বাছাই করা হয়েছে, সেখানকার স্থানীয় প্রশাসকদের তা নিয়ে আপত্তি আছে। ফ্রান্সের ব্রুজ শহরের মেয়র ফিলিপ স্যামন এরই মধ্যে তাঁর অঞ্চলে গৃহহীনদের থাকার জন্য নতুন কেন্দ্র বানানোর পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন। তাঁর শহরে ১৮ হাজার মানুষের বসবাস। স্যামন বলেছেন, ‘আমরা নতুন সুযোগ–সুবিধা নির্মানের মতো অবস্থায় নেই। সেদিক থেকে এই পরিকল্পনা অগ্রহণযোগ্য।’

তবে ফ্রান্সে শ্রমিকদের সংহতি ফেডারেশন ও গৃহহীনদের চ্যারিটিপ্রধান প্যাসকেল ব্রাইস সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘প্যারিসের রাস্তায় গৃহহীনদের রাখার চেয়ে ফ্রান্সে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে তাঁদের ভালো রাখতে পারাটাই হবে ইতিবাচক।’ ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকের আগে চীনের সরকারও দেশটির রাস্তা থেকে ভিক্ষুক ও গৃহহীন মানুষদের সরিয়ে দিয়েছিল। অভিবাসীদের অনেককে দেশেও ফেরত পাঠানো হয়েছিল। ২০১৬ রিও ডি জেনিরো অলিম্পিকের আগে একই কাজ করে ব্রাজিলও।

আরও পড়ুন