উদ্বোধনীতে নেতিবাচক ছবি দেখিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা কোরিয়ান টিভির

ইউক্রেনের অ্যাথলেটরা স্টেডিয়ামে ঢোকার সময় চেরনোবিল পারমাণবিক বিপর্যয়ের ছবি দেখায় দক্ষিণ কোরিয়ার টিভিছবি: রয়টার্স

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়াযজ্ঞ অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে গতকাল শুক্রবার টেলিভিশনের পর্দায় ছিল কোটি দর্শকের চোখ। টেলিভিশনে কিছুক্ষণের জন্য নিজের দেশকে দেখে স্বাভাবিকভাবেই রোমাঞ্চিত হয়েছে সে দেশের দর্শকেরা।

কিন্তু দেশের অ্যাথলেটদের দেখার সময় যদি কোনো নেতিবাচক ছবি দেখানো হয়, তাহলে কেমন লাগবে? নিশ্চয় খারাপ লাগবে। টোকিও অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানোর সময় এমন একটা কাজ করে পরে ক্ষমা চেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার টেলিভিশন সম্প্রচার সংস্থা।

করোনার নিষেধাজ্ঞার কারণে এমনিতেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দর্শক ছিল না। অ্যাথলেটরা মাস্ক পরে এসেছিলেন। নানা রকমের স্বাস্থ্যবিধি মেনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দূরত্ব বজায় রাখা হয়। একে একে বিভিন্ন দেশের পতাকা হাতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্টেডিয়ামের মাঠে ঢোকেন অ্যাথলেটরা।

হাইতির অ্যাথলেটরা ঢোকার সময় দেশটির রাজনৈতিক দাঙ্গার ছবি দেখানো হয়।
ছবি: রয়টার্স

এই ধারাবাহিকতায় ইউক্রেন, হাইতি ও এল সালভাদরের অ্যাথলেটরা এলে দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যতম বড় জাতীয় টেলিভিশন সম্প্রচার সংস্থা ‘এমবিসি’ তিনটি দেশের নেতিবাচক ছবি দেখিয়েছে।

ইউক্রেনের অ্যাথলেটরা ঢুকলে তারা টেলিভিশন পর্দায় দেখাতে শুরু করে ১৯৮৬ সালে ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক বিপর্যয়ের ছবি। আর হাইতির অ্যাথলেটরা ঢুকলে দেখানো হয় দেশটিতে রাজনৈতিক দাঙ্গার ছবি। এল সালভাদরের অ্যাথলেটদের ক্ষেত্রে দেখানো হয় প্রচারণামূলক বিটকয়েন পোস্টারের ছবি।

কাজটা যে মোটেও ভালো হয়নি, তা বুঝতে পেরে পরে ক্ষমা চেয়েছে সম্প্রচারকারী টেলিভিশন চ্যানেলটি। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘কিছু দেশকে পরিচয় করিয়ে দিতে অগ্রহণযোগ্য ছবি ও ক্যাপশন ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা এ জন্য ইউক্রেনসহ ওই সব দেশ এবং আমাদের দর্শকদের কাছে ক্ষমা চাইছি।’

তবে ইতালির ক্ষেত্রে পিৎজার ছবি, জাপানের সময় সুশি আর নরওয়ের অ্যাথলেটদের ক্ষেত্রে টিভি চ্যানেলটির স্যামন মাছের ছবি দেখানোও আলোচনার জন্ম দিতে পারে।

অলিম্পিক উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে এল সালভাদরের অ্যাথলেটরা
ছবি: রয়টার্স

টিভি চ্যানেলটি মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের ক্যাপশনে বলেছে, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পারমাণবিক পরীক্ষার স্থান।’ হাইতির ক্ষেত্রে বলা হয়, তাদের ‘রাষ্ট্রপতিকে মেরে ফেলার পর থেকেই সেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে।’

এসব ছবি ও ক্যাপশন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এক দর্শকের মন্তব্য, ‘ওই দেশগুলো সম্পর্কে গুগলে খুঁজলে যেটা প্রথমে আসে, সেটাই তারা লুফে নিয়েছে।’ আরেকজনের মন্তব্য, ‘এটা মারাত্মক পর্যায়ের কূটনৈতিক অভদ্রতা।’